নয়া তথ্য প্রকাশ: এনআরসি থেকে বাদ পড়েছে ৭ লাখ হিন্দু, ৫ লাখ মুসলিম
ভারতের বিজেপিশাসিত অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি থেকে বাদ পড়া ১৯ লাখ লোকের মধ্যে এতদিন ১২ লাখই হিন্দুর কথা বলা হলেও নয়া তথ্যে ওই সংখ্যা ৭ লাখ বলা হচ্ছে। অন্যদিকে, ৫ লাখ মুসলিম বাদ পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ (শনিবার) অসম থেকে প্রকাশিত একটি বাংলা দৈনিকের শিলচর সংস্করণে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু সরকারিভাবে ওই তথ্য নিশ্চিত হয়নি।
এনআরসি কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত বাদ পড়া ১৯ লাখের মধ্যে কোনও ধর্ম সম্প্রদায় বা জনগোষ্ঠীর তালিকা প্রকাশ করেননি। কিন্তু বিভিন্ন দল ও সংগঠনের সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে বাদ পড়া লোকেদের ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যার কথা বলা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে আজ (শনিবার) ‘অল অসম মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ বা ‘আমসু’র উপদেষ্টা আজিজুর রহমান রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘এসব অনুমানের ভিত্তিতে লেখা। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট বলেছে, এনআরসি সম্পর্কে কোনও তথ্য কাউকে শেয়ার না করতে। এমনকি বিধানসভাতেও কোনও বিধায়ক যদি প্রশ্ন করে তাও শেয়ার না করতে বলেছে। যদি কেউ কোর্টেও তা খোঁজ করে তাদেরকেও না দিতে বলেছে। এখন এসব তথ্য কোন সূত্রে পাওয়া গেল, এর কিরকম সত্যাসত্য আছে তা আমরা বুঝতে পারছি না। এগুলো রাজনৈতিকভাবে লোকদের অনুপ্রাণিত করতে মনগড়া হতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানিতে কী বলা হয় সেটাই প্রধান বিষয়।’ কোন কাগজে, কোন পত্রিকায় কী বলা হচ্ছে আমার মতে তা ধর্তব্যের বিষয় নয় বলেও ‘আমসু’ নেতা আজিজুর রহমান মন্তব্য করেন।
গত (বৃহস্পতিবার) পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনআরসি বিরোধী এক সমাবেশে বলেন, ‘অসমে এনআরসি থেকে যে ১৯ লাখ লোকের নাম বাদ গেছে, তার মধ্যে ১২ লাখ হিন্দু আছে, ১ লাখ গোর্খা আছে, মুসলিম আছে, বৌদ্ধ আছে, হিন্দিভাষী আছে। স্বাধীন দেশের নাগরিককে ক’বার করে প্রমাণ দিতে হবে যে সে এদেশের নাগরিক?’
এর আগে সারা অসম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশন দাবি জানায় বাদ পড়াদের মধ্যে বাঙালি হিন্দুর সংখ্যা ১০/১২ লাখ। বাঙালি মুসলিম বাদ পড়েছেন দেড় থেকে দু’লাখ।
এ সম্পর্কে সমাজকর্মী পার্থপ্রতিম মৈত্র বলেন, এনআরসি’তে ধর্ম বা ভাষার কোনও কলাম ছিল না। তাহলে সঠিক সংখ্যাটি কীভাবে জানা যাচ্ছে? তাঁর মতে, বিজেপি ওই অঙ্ক ছড়িয়েছে। অন্যরা নিজনিজ স্বার্থে তা মেনে নিয়েছেন। ফলে পরিসংখ্যান তৈরি হচ্ছে সুবিধা অনুযায়ী। ১২ লাখ হিন্দুর নাম বাদ গেলে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ‘ক্যাব’ চালু করা বৈধতা পাবে বলেও তাঁর অভিমত।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন ও পার্সিদের ভারতে আশ্রয় দিতে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন পরিবর্তন করতে চাচ্ছে। এ সংক্রান্ত বিলে প্রস্তাব করা হয়, ওই তিন দেশ থেকে ভারতে আসা ‘অমুসলিমরা’ ১২ বছরের পরিবর্তে ৬ বছরের মধ্যেই নাগরিকত্ব পাবেন। কিন্তু এভাবে ধর্মীয়ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রদানের চেষ্টা নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/১৪
খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন