এনআরসিকে মুসলিম নাগরিকদের বৈষম্য সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে: মার্কিন কমিশন
(last modified Thu, 21 Nov 2019 09:02:39 GMT )
নভেম্বর ২১, ২০১৯ ১৫:০২ Asia/Dhaka
  • এনআরসিকে মুসলিম নাগরিকদের বৈষম্য সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে: মার্কিন কমিশন

ভারতে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসিকে মুসলিম নাগরিকদের বৈষম্য সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন ইউএসসিআইআরএফ। এনআরসিতে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের টার্গেট করা হয়েছে বলে তারা জানিয়েছে।

অন্যদিকে, গতকাল (বুধবার) সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, এনআরসি তৈরির ক্ষেত্রে কোনও ধর্মকে টার্গেট করা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের তদারকিতেই সব কিছু হয়েছে। ধর্মীয় বিশ্বাস যাই হোক না কেন, দেশের সব নাগরিকেরই নাম নথিভুক্ত হবে এনআরসি তালিকায়। এনআরসি তালিকায় নাম বাদ গেলে প্রত্যেকের ফরেনার্স ট্রাইবুনালে যাওয়ার অধিকার রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

কিন্তু মার্কিন ইউএসসিআইআরএফ-এর সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, এনআরসি থেকে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। সেই তালিকায় কীভাবে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের টার্গেট করে তদের বঞ্চিত করা হয়েছে সে ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে।

গত (মঙ্গলবার) ইউএসসিআইআরএফ-এর কমিশনার অণুরিমা ভার্গব বলেন, অসমের ২০ লক্ষের কাছাকাছি মানুষকে রাষ্ট্রহীন হতে হবে। তাঁদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হচ্ছে কোনও সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও নিয়ন্ত্রিত এনআরসি পদ্ধতি ছাড়াই।'

তিনি আরও বলেন, দুর্ভাগ্যজনক যে, ভারতীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা বারবার জানিয়েছেন কীভাবে এনআরসি পদ্ধতি প্রযোগ করে তাঁরা অসম থেকে মুসলিমদের কোণঠাসা ও তাড়িয়ে দিতে চান। এখন রাজনৈতিক নেতারা সারা ভারত জুড়ে এনআরসি করতে চাচ্ছেন এবং মুসলিমদের জন্য নাগরিকত্বের আলাদা মাপকাঠি ঠিক করতে চাচ্ছেন।

'ইউএসসিআইআরএফ-এর সভাপতি টনি পার্কিন্স বলেছেন, সংশোধিত এনআরসি ও তার পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্বের জন্য ধর্মীয় পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করছে। এর লক্ষ্য সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে সংবিধানপ্রদত্ত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সমস্ত অধিকার রক্ষা করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।

এনআরসি নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় আগেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নাগরিকপঞ্জি তৈরি করা হয়েছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে। ওই পদ্ধতিতে কোনও বৈষম্য নেই। কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা  হয়নি বা অন্যায় করা হয়নি। এমনকি, জাতীয় নাগরিকপঞ্জির কোনও ফর্মেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে তার ধর্মীয় পরিচয়ও জানতে চাওয়া হয়নি। সরকারপক্ষে এভাবে বারবার সাফাই দেওয়া হলেও মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও মার্কিন আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন ইউএসসিআইআরএফ জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি ও প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছে।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/২১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ