বঙ্গবন্ধুর জীবন একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বের জন্য ‘এক মহান বার্তা’: নরেন্দ্র মোদি
বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘গত শতাব্দীর অন্যতম মহান ব্যক্তিত্ব’ এবং বঙ্গবন্ধুর জীবনকে ‘একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বের জন্য এক মহান বার্তা’ হিসেবে অভিহিত করেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আজ (মঙ্গলবার) বঙ্গবন্ধুর জন্মশতর্বার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী আয়োজন মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও'র মাধ্যমে যুক্ত হয়ে মোদি বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গত শতাব্দীর মহান ব্যক্তিত্বদের মধ্যে অন্যতম। তার সমগ্র জীবন আমাদের সকলের জন্য অনেক বড় প্রেরণা। বঙ্গবন্ধু মানে- একজন সাহসী নেতা, একজন দৃঢ়চেতা মানুষ, একজন ঋষিতুল্য শান্তিদূত, একজন ন্যায়, সাম্য ও মর্যাদার রক্ষাকর্তা, একজন পাশবিকতাবিরোধী এবং যে কোনো জোরজুলুমের বিরুদ্ধে একজন ঢাল।” তাঁর এই গুণাবলীই সে সময় লক্ষ লক্ষ তরুণকে বাংলাদেশের মুক্তির জন্য সমস্ত প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে নতুন শক্তি দিয়েছিল বলে মন্তব্য করেন মোদি।
মোদির ভাষায়, বঙ্গবন্ধুর জীবন একবিংশ শতাব্দীর বিশ্বের জন্য ‘এক মহান বার্তা’। নিপীড়ক যখন ‘বাংলা ভূমির’ উপর অবিচারের রাজত্ব চালিয়ে জনগণের সর্বনাশ করেছিল, সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে বের করে এনে একটি ইতিবাচক ও প্রগতিশীল সমাজে পরিণত করতে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উৎসর্গ করেছিলেন তিনি।
“তিনি বিশ্বাস করতেন যে, ঘৃণা এবং নেতিবাচকতা কখনই কোনও দেশের উন্নয়নের ভিত্তি হতে পারে না। কিন্তু তার এই ধারণা এবং প্রচেষ্টা কিছু লোক পছন্দ করেনি এবং আমাদের কাছ থেকে বঙ্গবন্ধুকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।
“বাংলাদেশ এবং আমরা সকলেই ভাগ্যবান যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা ঈশ্বরের আশীর্বাদে রক্ষা পেয়েছিলেন। নয়তো সহিংসতা এবং ঘৃণার সমর্থকরা চেষ্টার কোনো কমতি রাখেনি।”

সন্ত্রাস ও সহিংসতার সমর্থকরা এখন কোথায়, কীভাবে আছে এবং বাংলাদেশ কোন উচ্চতায় পৌঁছেছে- তা বিশ্ববাসী দেখতে পাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়বই, সেদিন বেশি দূরে নয়: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আজ যেভাবে অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং উন্নয়নমুখী নীতিমালা অনুসরণ করে এগিয়ে চলছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অর্থনীতি থেকে শুরু করে অন্যান্য সামাজিক সূচক, যেমন ক্রীড়াক্ষেত্র কিংবা দক্ষতা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী ক্ষমতায়ন, মাইক্রো ফিনান্সের মতো অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে।”
তিনি বলেন, গত ৫-৬ বছরে ভারত ও বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি সোনালী অধ্যায় রচনা করেছে এবং এই অংশীদারিত্বকে ‘নতুন মাত্রা ও দিশা’ দিয়েছে। বাংলাদেশ এখন কেবল দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার নয়, উন্নয়নেরও অংশীদার।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার ও অনুপ্রেরণা আমাদের এই ঐতিহ্যকে আরও বিস্তৃত করেছে। তার আদর্শ ও মূল্যবোধের সাথে ভারত সর্বদা সংযুক্ত ছিল। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার গভীর সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে এই অভিন্ন ঐতিহ্যের ভিত্তিতে। আমাদের এই ঐতিহ্য, আত্মিক বন্ধন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ, এই দশকেও দুই দেশের অংশীদারিত্ব, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির এক শক্তিশালী ভিত্তি।”
আগামী বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হবে এবং তার পরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী। এ দুটি মাইলফলক কেবল ভারত ও বাংলাদেশের উন্নয়নকেই নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে না, দুদেশের বন্ধনকেও জোরদার করবে বলে আশা প্রকাশ করেন নরেন্দ্র মোদি।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।