রাম মন্দির নির্মাণ ইস্যুতে মোদি সরকারকে কটাক্ষ পাওয়ারের, উমা ভারতীর প্রতিক্রিয়া
(last modified Mon, 20 Jul 2020 12:39:27 GMT )
জুলাই ২০, ২০২০ ১৮:৩৯ Asia/Dhaka
  • শরদ পাওয়ার
    শরদ পাওয়ার

ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বহুলালোচিত রাম মন্দির নির্মাণের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ভূমিপুজো ও শিলান্যাস ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করেছেন সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও মহারাষ্ট্রের এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার।

গতকাল (রোববার) তিনি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘কিছু মানুষ হয়তো মনে করছেন, রাম মন্দির তৈরি করলেই করোনা বিদায় নেবে। তাই ভেবেই হয়তো তাঁরা এই সমস্ত আয়োজন করছেন।'

তিনি আরও বলেন, ‘আমার মতে, এই মুহূর্তে করোনাভাইরাস সবথেকে বড় বিপদ। কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের উচিত সেদিকেই মন দেওয়া। বর্তমানে লকডাউন করে অর্থনীতিতে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া উচিত। অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে।’

উমা ভারতী

এ বিষয়ে আজ (সোমবার) সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি’র ফায়ারব্রান্ড নেত্রী উমা ভারতী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘শরদ পাওয়ারের ওই বিবৃতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিরোধী নয় বরং ভগবান রামের বিরোধী।’ উমা ভারতীর প্রশ্ন- প্রধানমন্ত্রী যদি দুই ঘণ্টার মধ্যে সেখানে পৌঁছে যান তাহলে অর্থনীতির কী ক্ষতি হবে?

কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা দিগ্বিজয় সিং অবশ্য এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেছেন, পাওয়ার সাহেব আপনি একদম সঠিক বলেছেন। আমি আপনার সঙ্গে একমত পোষণ করছি। যদি মোদি-শাহ (নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহ/প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) আপনার কথায় চলতেন তাহলে দেশের এ অবস্থা হতো না।

দিগ্বিজয় সিং

দেশজুড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণের মধ্যে আগামী ৫ আগস্ট অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের লক্ষ্যে ভূমিপুজোর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। ওই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই বিরোধীরা কটাক্ষ করছে। করোনার প্রকোপের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী কী করে এ ধরণের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

আগেই অযোধ্যার পুরোহিতরা ঘোষণা করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ৫ আগস্ট রাম মন্দির নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। গত (শনিবার) রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আগস্টের ৩ অথবা ৫ তারিখে প্রধানমন্ত্রীকে শিলান্যাস করার আমন্ত্রণ জানানো হয়।

গণমাধ্যমে প্রকাশ, ৩ আগস্ট থেকে প্রস্তাবিত মন্দির চত্বরে বৈদিক রীতি মেনে তিনদিনব্যাপী আচার-অনুষ্ঠান চলবে। ৪ আগস্ট হবে 'রামাচর্য পুজো'। ৫ আগস্ট দুপুর সোয়া বারোটা নাগাদ অনুষ্ঠিত হবে 'ভূমি পুজো'। সেখানে ৫ টি রূপোর ইট স্থাপনের মধ্য দিয়ে শিলান্যাস সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।

ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ভাঙার দৃশ্য

১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রকাশ্য দিবালোকে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যার কয়েক শ' বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল উগ্র ধর্মান্ধরা। তাদের দাবি, এটি আসলে তাদের ভগবান রামের জন্মস্থান। দীর্ঘকাল ধরে আইনি লড়াইয়ের পরে গতবছর নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট একটি ট্রাস্ট গঠন করতে বলে এবং ওই ট্রাস্টের মাধ্যমে বিতর্কিত ওই জমিতে রাম মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেয়। ওই ইস্যুতে মুসলিমদের দাবি আদালতে খারিজ হয়ে যায়। এরপরেই বহুলালোচিত রাম মন্দির নির্মাণের পথ প্রশস্ত হয়। আদালত অন্যত্র মসজিদ নির্মাণের জন্য জমি দেওয়ার কথা বললেও সেই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও অগ্রগতি হয়নি। মুসলিমরাও অন্যত্র মসজিদ স্থাপন প্রসঙ্গে বিশেষ আগ্রহ দেখায়নি।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/২০

 

ট্যাগ