ভারতে কৃষক আন্দোলন অব্যাহত, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে পঞ্চম দফার সংলাপ
(last modified Sat, 05 Dec 2020 15:27:43 GMT )
ডিসেম্বর ০৫, ২০২০ ২১:২৭ Asia/Dhaka
  • ভারতে কৃষক আন্দোলন অব্যাহত, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে পঞ্চম দফার সংলাপ

ভারতে কৃষি সংক্রান্ত তিনটি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষক আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি ওই তিনটি আইন কার্যকর করেছে। আজ (শনিবার) ওই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় বসেন কৃষক নেতারা। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে পঞ্চম দফার সংলাপ হলেও এখনও সমাধান সূত্র মেলেনি। আন্দোলনরত কৃষকদের দাবি- অবিলম্বে কৃষি সংক্রান্ত তিনটি আইন বাতিল করতে হবে। প্রয়োজনে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে কৃষি আইন বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এদিকে, গতকাল (শুক্রবার) জাতিসঙ্ঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক ওই ইস্যুত  সারা বিশ্বের প্রত্যেক দেশেই যে কারও শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে মন্তব্য করেছেন।

এরআগে কানাডার প্রধানমন্ত্রী ও আইনসভার কয়েকজন সদস্য ভারতে চলমান কৃষক আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য করায় গতকাল (শুক্রবার) ভারতে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনারকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবাদ জানিয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়,  ‘এ ধরণের মন্তব্য ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ। এমন চলতে থাকলে দু’দেশের  সম্পর্কে প্রভাব পড়তে বাধ্য।’ কানাডায় খলিস্তানি কট্টরপন্থীরা ভারতীয়  দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখানোয় নিরাপত্তার অভাব তৈরি হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয় ভারতের পক্ষ থেকে।

কিন্তু কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভারতের তীব্র আপত্তি ও বিরোধিতা সত্ত্বেও তিনি ওই ইস্যুতে অনড় রয়েছেন। গতকাল (শুক্রবার) তিনি ফের জানান, ‘কানাডা সারা পৃথিবী জুড়েই সমস্ত শান্তিপূর্ণ  আন্দোলনের পাশে আছে ও থাকবে। আমরা খুশি যে, আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে।’

গত (মঙ্গলবার) কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, আমরা সকলেই পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন। আমি জানি, আপনাদের অনেকেরই কাছে এটা বাস্তব। আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, কানাডা সবসময় শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারকে রক্ষা করবে। আমরা আলোচনার গুরুত্বে বিশ্বাস করি এবং সেজন্যই আমরা নানা মাধ্যম দিয়ে  সরাসরি ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে আমাদের উদ্বেগ জানিয়েছি।’

ভারত এ ধরণের মন্তব্যে দু’দেশের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার কথা বললেও কানাডার প্রধানমন্ত্রী তাৎপর্যপূর্ণভাবে ফের ওই ইস্যুতে মন্তব্য করে তাঁর মনোভাবে অনড় রয়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে, আজ মহারাষ্ট্রের কৃষক নেতা সন্দীপ পাতিল এবং শঙ্কর দারেকর বলেছেন, সরকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের সময়ে সংসদের অনুমোদন নেয়নি। একটি অধ্যাদেশ নিয়ে সরকার কৃষি সংক্রান্ত তিনটি আইন বাতিল করতে পারে। অধ্যাদেশগুলো সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে সংসদে অনুমোদিত হতে পারে।

ওই কৃষক নেতারা আরও বলেন, ‘সরকারকে সতর্ক করতে আমরা ৮ ডিসেম্বর ভারত বনধের ঘোষণা দিয়েছি। সরকার যদি ওই আইন বাতিল করতে রাজি না হয়, তাহলে কৃষকদের আন্দোলন তীব্রতর হতে থাকবে।’

এদিকে, ভারতের কৃষক আন্দোলনের বিষয়টি এবার সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছেছে। দিল্লি সীমান্তে জড়ো হয়ে থাকা কৃষকদের অপসারণের দাবিতে শীর্ষ আদালতে একটি আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে যে ওই বিক্ষোভের ফলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। একইসাথে,  মানুষজনের যাতায়াতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। কৃষকদের বিক্ষোভের কারণে অনেক সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। দিল্লি-নয়ডা লিংক রোডটিও সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ রয়েছে এবং মানুষজনকে লিঙ্ক রোডের পরিবর্তে ডিএনডি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি সামাল দিতে ও বন্ধ হয়ে থাকা সড়ক সচল করতে তৎপরতা চালাচ্ছে।

পার্সটুডে/এমএএইচ/বাবুল আখতার/৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ