ভারতে আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে অনশন করবেন কেজরিওয়াল
(last modified Sun, 13 Dec 2020 15:57:16 GMT )
ডিসেম্বর ১৩, ২০২০ ২১:৫৭ Asia/Dhaka

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এবং ‘আম আদমি পার্টি’র প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থনে উপবাস করবেন বলে জানিয়েছেন।  আজ (রোববার) তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে ওই ঘোষণা দেন। আন্দোলনরত কৃষকদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে কেজরিওয়াল বলেন, 'কৃষকরা আগামীকাল একদিনের অনশন ঘোষণা করেছেন।

তাঁরা এর সমর্থনে দেশবাসীকে একদিনের জন্য অনশন করার আহ্বান জানিয়েছেন। আমিও আগামীকাল একদিনের জন্য উপবাস করব। আমি ‘আম আদমি পার্টি’র সকল সমর্থক এবং স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে আগামীকাল একদিনের উপবাস এবং কৃষকদের সমর্থন করার জন্য আবেদন করছি। মুখ্যমন্ত্রী  অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘আমি দেশের সকল মানুষের কাছে আবেদন করছি, কোটি কোটি মানুষ কৃষকদের সাথে রয়েছেন। তাঁরা নিজ নিজ বাড়িতে কৃষকদের দাবির সমর্থনে একদিনের উপবাস রাখুন।’  

কেন্দ্রীয় সরকারকে টার্গেট করে কেজরিওয়াল বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু মন্ত্রী এবং বিজেপির লোকেরা বারবার বলছেন যে কৃষকরা দেশদ্রোহী, এই আন্দোলন দেশদ্রোহীদের, এখানে জাতীয়তা বিরোধী লোকেরা বসে আছেন। আমি জিজ্ঞেস করতে চাই যে এখানে অনেক প্রাক্তন সেনা সদস্য বসে আছেন যারা দেশ রক্ষার জন্য প্রাণ বাজি রেখেছিলেন,  এই সমস্ত মানুষ কি দেশবিরোধী? আমি বিজেপি নেতাদের এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের জিজ্ঞেস করতে চাই যে এমন অনেক খেলোয়াড় আছেন যারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের হয়ে সুনাম অর্জন করেছেন এবং পদক জিতেছেন। এমন  কত খেলোয়াড় কৃষকদের সাথে বসেছেন, তাদের জন্য ঘরে বসে প্রার্থনা করছেন এরা কি সবাই জাতীয়তা বিরোধী?’

তিনি বলেন, কত চিকিৎসক কৃষকদের সমর্থন করেছেন, তারা সবাই কী জাতীয়তা বিরোধী? আইনজীবীরা কৃষকদের সমর্থন করেছেন, তারা সবাই কী জাতীয়তা বিরোধী? কত ব্যবসায়ী তাঁদেরকে সমর্থন করেছেন, তারা সবাই কি দেশবিরোধী?    

মুখ্যমন্ত্রী  অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘আমরা যখন আন্না আন্দোলন করেছিলাম এবং রামলীলা ময়দানে আন্দোলন চলছিল, তখন কংগ্রেস সরকার আমাদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করার চেষ্টা করছিল। আজ বিজেপি কৃষকদের আন্দোলনকে বদনাম করার জন্য একই কাজ করছে। এ দেশের কৃষকদের দেশবিরোধী বলার সাহস দেখাবেন না। কিছু লোক বলছেন যে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কিছু কৃষক এতে জড়িত, বাকী অংশ এতে জড়িত নয়। এটি একটি ভুল ধারণা। কারণ সম্প্রতি আমি একটি বিয়েতে গিয়েছিলাম, তারপরে আমি সেখানকার লোকদের জিজ্ঞাসা করেছি  এবং মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তরা আমাকে বলেছিল যে এই কৃষি আইনগুলো খুব বিপজ্জনক! তারা বলছিলেন যে এখন যেকোনও ব্যক্তি খাদ্যশস্য মওজুদ করতে পারবেন। আগে খাদ্যশস্য সংরক্ষণের সীমা ছিল,  মওজুদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হত। মজুদদারীকে একটি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হতো কারণ এরফলে ঘাটতি সৃষ্টি হতো। এখন সরকার যে আইন এনেছে, তাতে   মজুদদারী কোনও অপরাধ নয় এবং প্রচুর পরিমাণে মজুদ করা যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে, যাদের কাছে অর্থ রয়েছে তারা প্রচুর পরিমাণে শস্য সংগ্রহ করে মজুদ করে রাখবেন এবং এরফলে মুদ্রাস্ফীতি অনেক বাড়বে। একবছরে মুদ্রাস্ফীতি দ্বিগুণ না হলে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন হবে না।’     

কেজরিওয়াল বলেন, আমি বলতে চাই যে এই ভ্রান্ত ধারণা থাকা উচিত নয় যে ওই আইনের প্রতিবাদে কেবল কিছুসংখ্যক কৃষকই ধর্না-অবস্থানে বসে আছেন, বরং দেশের প্রত্যেকেই ওই আইনগুলো বুঝছেন। যাঁরা ব্যস্ত জীবনের কারণে সীমান্তে পৌঁছতে পারছেন না, তাঁদের হৃদয় কৃষকদের কাছে রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে আমার অনুরোধ, সরকার  জনগণের সাহায্যে তৈরি হয়, জনতা সরকার থেকে নয়। ওই তিনটি বিলই বাতিল করতে হবে এবং এমএসপি সংক্রান্ত কৃষকদের ফসল কেনার জন্য একটি বিল তৈরি করতে হবে বলেও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এবং আম আদমি পার্টির প্রধান  অরবিন্দ কেজরিওয়াল মন্তব্য করেন।#

পার্সটুডে/পার্সটুডে/এমএএইচ/ এনএম /১৩  

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।        

 

ট্যাগ