নোট বাতিল করে বা ৩৭০ ধারা অপসারণ করে কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদ বন্ধ করা যায়নি: রাহুল গান্ধী
জম্মু-কাশ্মীরে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিবর্ষণে ২ শিক্ষক নিহত
জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরে অজ্ঞাত গেরিলা হামলায় সুপিন্দর কাউর (৪৪) ও দীপক চাঁদ (৩৮)নামে দু’জন শিক্ষক নিহত হয়েছেন।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে গেরিলারা শ্রীনগরের ঈদগাহ এলাকায় একটি সরকারি বয়েজ স্কুলে ঢুকে গুলিবর্ষণ করলে তারা নিহত হন। ওই ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনী হামলাকারীদের সন্ধানে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের মহাপরিচালক দিলবাগ সিং বলেন, এটি কাশ্মীরের স্থানীয় মুসলিমদের বদনাম করার চেষ্টা। শিক্ষকসহ নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা কাশ্মীরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের প্রাচীন ঐতিহ্যকে আক্রমণ এবং ক্ষতি করার একটি পদক্ষেপ।
জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ, পিডিপি সভানেত্রী ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতি, পিপলস কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ লোন, বিজেপি মুখপাত্র আলতাফ ঠাকুর ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মাত্র দু’দিন আগে, শ্রীনগরের একটি বিখ্যাত ফার্মেসির মালিক সিনিয়র কেমিস্ট বা রসায়নবিদ সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। ৬৮ বছর বয়সী মাখনলাল বিন্দরুকে গত (মঙ্গলবার) তার ব্যবসায়িক চত্বরে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে গত পাঁচদিনে উপত্যকায় গেরিলারা কমপক্ষে ৭ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে।
মঙ্গলবার, কাশ্মীরি পণ্ডিত মাখনলান বিন্দরু হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে কারণ তিনি সেখানে একজন বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। বিন্দরু ১৯৯০- এর দশকে যখন সহিংসতা চরমে ছিল তখনও কাশ্মীরে থেকে যান এবং নিজের ফার্মেসি চালাচ্ছিলেন।
মঙ্গলবারই শ্রীনগরের লালবাজারে অজ্ঞাত গেরিলা হামলায় বীরেন্দ্র পাসওয়ান নামে একজন রাস্তার খাবার বিক্রেতা নিহত হন। বিহারের ভাগলপুরের বাসিন্দা বীরেন্দ্র শ্রীনগরের জদিবল এলাকায় থাকতেন।
আরেকটি গেরিলা হামলায় বান্দিপোরাতে মুহাম্মাদ শফি নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি স্থানীয় একটি ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের সভাপতি ছিলেন।
এর আগে গত ২ অক্টোবর, গেরিলারা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে মজিদ আহমেদ গোজরি এবং মুহাম্মাদ শফি দারকে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট দায় স্বীকার করেছিল।
কাশ্মীরের গ্র্যান্ড মুফতি নাসির-উল ইসলাম বৃহস্পতিবার কাশ্মীরে বেসামরিক নিরীহ নাগরিকদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি এ ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন।
গ্র্যান্ড মুফতি বলেন, নিরস্ত্র ব্যক্তিকে আক্রমণ করা ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে। কাশ্মীরের মুসলিম সম্প্রদায় এই শোকের সময়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। কাশ্মীরের সাম্প্রদায়িক কাঠামোকে ক্ষতি করার অনুমতি কাউকে দেওয়া হবে না যা গত কয়েক দশক ধরে অক্ষত রয়েছে বলেও গ্র্যান্ড মুফতি নাসির-উল ইসলাম মন্তব্য করেন।
ভারতের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধি এমপি এক বার্তায় বলেছেন, ‘কাশ্মীরে সহিংস ঘটনা বাড়ছে। নোট বাতিল করে বা ৩৭০ ধারা অপসারণের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ বন্ধ হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আমরা আমাদের কাশ্মীরি ভাই-বোনদের উপর এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/০৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।