আজারবাইজানের উপ প্রধানমন্ত্রীর তেহরান সফর: আরো ঘনিষ্ঠ হচ্ছে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i100308
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দুল্লাহিয়ান আজারবাইজানের উপপ্রধানমন্ত্রী শাহিন মুস্তাফাইয়েভের নেতৃত্বে সেদেশের একটি অর্থনৈতিক প্রতিনিধি দলকে দেয়া সাক্ষাতে বাণিজ্য, পরিবহন, জ্বালানি, পর্যটনসহ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এ সাক্ষাতে তিনি বলেছেন, তার দেশ আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলির ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করে এবং এই অঞ্চলের কোনো দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তে পরিবর্তন মেনে নেবে না তেহরান।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
নভেম্বর ২২, ২০২১ ১৬:৫৪ Asia/Dhaka

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দুল্লাহিয়ান আজারবাইজানের উপপ্রধানমন্ত্রী শাহিন মুস্তাফাইয়েভের নেতৃত্বে সেদেশের একটি অর্থনৈতিক প্রতিনিধি দলকে দেয়া সাক্ষাতে বাণিজ্য, পরিবহন, জ্বালানি, পর্যটনসহ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এ সাক্ষাতে তিনি বলেছেন, তার দেশ আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলির ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করে এবং এই অঞ্চলের কোনো দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তে পরিবর্তন মেনে নেবে না তেহরান।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে আজারবাইজানের উপপ্রধানমন্ত্রীও ইরানের তেলমন্ত্রীর পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রীর সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দু’দেশ তেল, জ্বালানী ও সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু চুক্তি স্বাক্ষরের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইরান ও আজারবাইজানের কর্মকর্তাদের মধ্যে বারবার সফর বিনিময় ও ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক থেকে বোঝা যায় প্রতিবেশী এ দুই দেশ বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিরাজমান মতপার্থক্য নিরসন এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে আন্তরিক।

বাস্তবতা হচ্ছে, ইরান সবসময়ই প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর জোর দিয়ে আসছে। অন্যদিকে আজারবাইজানও ইরানসহ এ অঞ্চলের প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে আসছে। আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেইহুন বাইরামোভ বলেছেন, 'প্রতিবেশী দেশগুলো বিশেষ করে ইসলামি ইরানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টি তার দেশের পররাষ্ট্র নীতিতে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে।' দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বিস্তারে ব্যাপক সুযোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এ সম্পর্ক বর্তমানে যেমন ইতিবাচক রয়েছে তেমনি ভবিষ্যতে সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।'

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরান ও আজারবাইজানের মধ্যে অভিন্ন ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বন্ধন ছাড়াও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বজায় রয়েছে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত বহু চুক্তি হয়েছে। এ ছাড়া পুঁজি বিনিয়োগ ও সমুদ্রে যৌথ সহযোগিতাও বজায় রয়েছে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরো বাড়ানোর লক্ষ্যে বর্তমানে দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। দুদেশের মধ্যে বিদ্যুত ও জ্বালানি ক্ষেত্রে যৌথ প্রকল্প রয়েছে। এ ছাড়া গাড়ি নির্মাণ শিল্পে সহযোগিতার বিষয়েও কথাবার্তা চলছে।

নর্থ-সাউথ করিডর প্রকল্প দুদেশের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ এবং দুই দেশই এই প্রকল্প সম্পন্ন করতে চায়। সাত হাজার ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ করিডরে সমুদ্র, স্থল ও রেলপথ সংযুক্ত থাকবে যাতে খুব কম সময়ের মধ্যে সংক্ষিপ্ত এ পথ ব্যবহার করে এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে পণ্য পরিবহন করা যয় এবং পারস্য উপসাগরের মাধ্যমে ভারত মহাসাগরকে কাস্পিয়ান সাগর এবং এরপর আজারবাইজান, রাশিয়া ও উত্তর ইউরোপকে সংযুক্ত করা যায়।

যাইহোক, অভিন্ন ধর্ম, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অধিকারী হওয়ার কারণে ইরান ও আজারবাইজানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও সহযোগিতা দিন দিন  বাড়ছে। যা কিনা আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা  রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে।

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২২ 

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।