হুমকির জবাবে সোলাইমানি বলতেন আল্লাহ যেন আমাকে শত্রুর হাতে শহীদ করেন
(last modified Sat, 01 Jan 2022 10:44:43 GMT )
জানুয়ারি ০১, ২০২২ ১৬:৪৪ Asia/Dhaka

ইরানের সন্ত্রাস-বিরোধী শীর্ষ কমান্ডার লে. জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ও তার সহযোগীদের হত্যার দ্বিতীয় বার্ষিকীর প্রাক্কালে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এ হত্যাকাণ্ডে আমেরিকার নিশ্চিত আন্তর্জাতিক দায় রয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, 'শহীদ জেনারেল সোলাইমানি মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার ইরানি মূলনীতি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালান। জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যা করার যে অপরাধী পদক্ষেপ ওয়াশিংটন নিয়েছে তা সন্দেহাতীতভাবে একটি 'সন্ত্রাসী হামলা' যা তৎকালীন মার্কিন প্রশাসনের নির্দেশে চালানো হয়েছে। আর এ দায় এখন হোয়াইট হাউজের'।

২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ভোরের দিকে জেনারেল সোলাইমানি বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে মার্কিন সন্ত্রাসী সেনাদের হামলায় শাহাদাত বরণ করেন। তিনি ছাড়াও তাকে স্বাগত জানাতে আসা ইরাকের জনপ্রিয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাশদ আশ শাবির সেকেন্ড ইন কমান্ড আবু মাহদি আল মোহান্দেসও একই স্থানে শহীদ হন।

শহীদ সোলাইমানি ছিলেন ইরানে ইসলামি বিপ্লবের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন সারা বিশ্বে অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অগ্রনায়ক। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী ২০০১ সালে  সোলাইমানিকে ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসির কুদস ব্রিগেডের কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন।

পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইলের মদদপুষ্ট দায়েশ বা আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধকালে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলেন। আইএস জঙ্গিরা যখন ইরাক ও সিরিয়াকে প্রায় দখল করে ফেলেছিল তখন ওই দেশ দুটির সরকার ইরানকে সহযোগিতার অনুরোধ জানায়। ওই আহ্বানে সাড়া দিয়ে জেনারেল সোলাইমানি ইরাক ও সিরিয়ার মুসলমান ও খ্রিস্টান জনগণকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন এবং শেষ পর্যন্ত তিনি সন্ত্রাসীদেরকে পরাজিত করতে সক্ষম হন।

প্রকৃতপক্ষে, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়ার ক্ষেত্রে জেনারেল সোলাইমানির অসামান্য অবদানের কারণে আমেরিকা ও ইসরাইলি কর্মকর্তারা সবসময়ই তাকে হত্যার হুমকি দিত। তবে এসব হুমকির জবাবে শহীদ সোলাইমানি মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে বলতেন 'এটা কোনো হুমকি নয় বরং এটা আমার শাহাদাতের পথকে সুগম করবে। যারা মনে করে হুমকি ও ভয় দেখিয়ে আমাদের নতজানু করতে পারবে তার জবাবে বলতে চাই আল্লাহ তাআলা যেন আমাকে শত্রুর হাতে শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করান'।

সোলাইমানি শহীদ হওয়ার পর ইরানও পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ওই হামলা চালিয়ে এ অঞ্চল থেকে মার্কিনীদের বিতাড়নের কাজ তরান্বিত করে ইরান। এরপর আফগানিস্তান ও ইরাক থেকে পর্যায়ক্রমে সেনা সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় আমেরিকা। বলা যায় পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন সামরিক কৌশল পাল্টে যায় জেনারেল সোলাইমানির শাহাদাতের পর। #  

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/০১ 

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ