আইএইএতে ইরানবিরোধী প্রস্তাবের নেপথ্যে এবং তেহরানের হুঁশিয়ারি
(last modified Mon, 06 Jun 2022 13:30:39 GMT )
জুন ০৬, ২০২২ ১৯:৩০ Asia/Dhaka

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ’র সদরদপ্তরে এই সংস্থার নির্বাহী বোর্ডের আসন্ন সভা প্রসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলের সঙ্গে নিজের সাম্প্রতিক টেলিফোনালের কথা উল্লেখ করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির -আব্দু্ল্লাহিয়ান আজ সোমবার সকালে এক টুইটার বার্তায় বলেন, জোসেফ বোরেলের সঙ্গে ইরানের ওপর থেকে অন্যায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আলোচনা এবং সেটি কিভাবে এগিয়ে নেয়া যায় সে ব্যাপারে কথা হয়েছে।

জোসেফ বোরেলের সঙ্গে টেলিফোনালাপে আমির-আব্দুল্লাহিয়ান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমেরিকা এবং তিন ইউরোপীয় দেশের যেকোনো রাজনৈতিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ইরান তাৎক্ষণিকভাবে সমানুপাতিক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন “যারা আইএইএতে ইরানবিরোধী প্রস্তাব আনতে যাচ্ছে এর যেকোনো পরিণতির দায় তাদেরকে নিতে হবে।” ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, “ভিয়েনায় পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবনের আলোচনা থেকে আমরা একটি টেকসই ও শক্তিশালী চুক্তি চাই। আমেরিকা ও তিন ইউরোপীয় দেশ বাস্তববাদী হলে সে চুক্তি অবশ্যই সম্ভব।”

অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় আজ (১১সোমবার) বিকেলে আইএইএ’র সদরদপ্তরে এই সংস্থার নির্বাহী বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সভায় আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি ইরানের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করবে বলে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। প্রস্তাবটিতে দাবি করা হয়েছে, ইরানের অঘোষিত স্থাপনাগুলোতে ইউরোনিয়ামের উপস্থিতির বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় তারা ভিষণ উদ্বিগ্ন। চারটি দেশ আরো অভিযোগ করেছে যে আইএইএকে ইরানের পক্ষ থেকে ঠিকমতো সহযোগিতা করা হচ্ছে না।

মনে হচ্ছে  আমেরিকার ওপর যখন ইরানের ন্যায় সঙ্গত এবং যৌক্তিক দাবি বিশেষ তেরানের ওপর থেকে আমেরিকার সব ধরনের অন্যায় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পাশাপাশি ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ডবাাহিনী বা আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেয়ার দাবি জোরদার হচ্ছে তখন বাইডেন সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু দেশকে সঙ্গে নিয়ে আইএইএকে যথাযথভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে না এই অজুহাতে তেহরানের ওপর কঠোর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

ইরান অতীতে আইএইএ'র সঙ্গে পারমাণবিক ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সামরিক মাত্রা বা পিএমডি নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান করেছে। কিন্তু এখন আবার ইহুদিবাদী ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠীর কথিত দাবির প্রতি প্রভাবিত হয়ে এই সংস্থা কিছু কথিত সাইটের বিষয়ে আবার এই বিষয়টি উত্থাপন করেছে।

আমরা অতীতে দেখেছি ইরান কিভাবে মার্কিন চাপ মোকাবেলা করেছে বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদিত পরমাণু সমঝোতা থেকে তার দেশকে প্রত্যাহার করে নিয়ে তেহরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি অবলম্বন করেছিল তখনও ইরান মার্কিন হুমকি ও চাপের কাছে নতি স্বীকার করে নি। বরং ইরান উল্টো নিপীড়নমূলক এবং অবৈধ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাবকে কমিয়ে দিতে সর্বোচ্চ প্রতিরোধের নীতি অনুসরণ করেছে। 

আইএইএ’র মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসির ইসরাইল সফরের পর এ প্রস্তাব আনা হচ্ছে বলেই ইরান গ্রোসির ওই সফরের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, আইএইএ’র স্বাধীন ও স্বতন্ত্র কর্মকাণ্ডের ওপর তেল আবিব কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে তা মেনে নেয়া হবে না। এই বিষয়ে, আমির আবদুল্লাহিয়ান বৃহস্পতিবার তার সিঙ্গাপুরের প্রতিপক্ষের সাথে টেলিফোনালাপে বলেন,  গ্রোসির সাম্প্রতিক তেহরানে সফরের সময় আমরা তার সঙ্গে একটি পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য চুক্তিতে পৌঁছেছিলাম। আমরা আইএইএ'র প্রযুক্তিগত বিষয়ে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপকে সম্পূর্ণরূপে অগঠনমূলক বলে মনে করি।"#

পার্সটুডে/ বাবুল আখতার/৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ