আধিপত্যকামী পশ্চিমা দেশের নেতা আমেরিকার বিরুদ্ধে ইরানের পাল্টা নিষেধাজ্ঞা
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i115288-আধিপত্যকামী_পশ্চিমা_দেশের_নেতা_আমেরিকার_বিরুদ্ধে_ইরানের_পাল্টা_নিষেধাজ্ঞা
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে আমেরিকার কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ১০ মার্কিন নাগরিক এবং ৪টি প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে মন্ত্রাণালয় জানিয়েছে।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
নভেম্বর ০১, ২০২২ ১৮:৩৭ Asia/Dhaka

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে আমেরিকার কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ১০ মার্কিন নাগরিক এবং ৪টি প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে মন্ত্রাণালয় জানিয়েছে।

এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে: ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিম্নোক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে মানবাধিকার বিরোধী কার্যকলাপ, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ, ইরানে সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য অভিযুক্ত করেছে। এছাড়া বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ইরানে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে ব্যাপকমমাত্রায় ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে উস্কানি দেয়া এবং উৎসাহিত করার পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রচেষ্টা ও কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করার মাধ্যমে ইরানি জাতির উপর চাপ বৃদ্ধি যা অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আর এ কারণেই এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।   

এসব মার্কিন কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইরানের এ পদক্ষেপের লক্ষ্য হচ্ছে ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপের মোকাবিলা করা এবং ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রবণতার বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া। ইরানে সাম্প্রতিক অস্থিরতা এবং সহিংসতার পর  তা উস্কে দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময়ে হস্তক্ষেপমূলক বিবৃতি দেয়ার পাশাপাশি ইরানী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

আমেরিকা পশ্চিমা ব্লকের নেতা হিসাবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুগের পর থেকে তেহরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ করার নীতির অংশ হিসেবে ইরানে দারিদ্র্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে কেবল নিষেধজ্ঞাই দেয়নি ইরানে নানা ঘটনাকে অজুহাত করে  বিভিন্ন সময় উস্কানিমূলক বক্তব্য ও বিবৃতিও অব্যাহত রেখেছে। যেমন পেট্রলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ২০১৮ সালের নভেম্বরের দাঙ্গা ও সহিংসতা কিংবা ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে যেসব দাঙ্গাবাজ ইরানজুড়ে সহিংস কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার পাশাপাশি সরকারী সম্পত্তি ধ্বংস করাার লীলায় মেতে উঠেছিল তাদেরকে উৎসাহিত ও সমর্থন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। সম্প্রতি মাহসা আমিনীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানজুড়ে  সহিংসতা এবং দাঙ্গাকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে ওয়াশিংটন প্রকাশ্যে এসব দাঙ্গাবাজদের কেবল সমর্থনই দেয় নি ইরানের ওপর থেকে ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেয় আমেরিকা। আশ্চর্যের বিষয় হল যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এসছে এবং সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে ট্রাম্প যুগের পর থেকে ইরানি জনগণের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠোর ও নিষ্ঠুর নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করেছে। বিখ্যাত মার্কিনি লেখক ও সাংবাদিক বলেছেন গ্লিন গ্রিনওয়াল্ড বলেছেন, সাধারণ জ্ঞানের অধিকারী যে কেউ অন্য দেশের জনগণের রাজনৈতিক অধিকার দমন বা তা সুরক্ষার বিষয়ে ওয়াশিংটনের বিবৃতিকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেন বা বিবেচনা করেন তিনি নিশ্চিতভাবেই নির্বোধ।"

পরিশেষে আমেরিকার বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ইরান দেখিয়েছে যে তারা ওয়াশিংটনের হুমকি এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ভীততো নয়ই বরং ইরান বিরোধী পদক্ষেপের সঙ্গে সরাসরি জড়িত মার্কিন কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। 

পার্সটুডে/এমবিএ/১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।