ইরানে ব্রিটিশ গুপ্তচরবৃত্তি:
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ইরান বিরোধী প্রস্তাবের নেপথ্যে
গতকাল (বুধবার) ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ইরান বিরোধী একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। প্রস্তাবটি হলো: ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে (আইআরজিসি) ইউরোপীয় ইউনিয়নের সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া না হয়। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে গতকাল (বুধবার) এই প্রস্তাব পাস করে ইউরোপীয় পরিষদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, আইআরজিসির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা যেন প্রত্যাহার করা না হয়।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ৬৩৮ জন সদস্যের উপস্থিতিতে উত্থাপিত ওই প্রস্তাবের পক্ষে ৫৯৮ টি ভোট পড়েছে। প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র ৯টি। ৩১ জন পার্লামেন্ট সদস্য ভোট দানে বিরত ছিল। ইরান ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই পদক্ষেপকে হস্তক্ষেপকামী বলে মন্তব্য করেছে।
ইউরোপীয় সংসদের সিদ্ধান্তগুলোকে সাধারণত প্রস্তাব বা আবেদন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় ইউরোপীয় পরিষদ। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সন্ত্রাসী তালিকার অন্তর্ভুক্ত রাখা হবে কি না সে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। কেননা ইউরোপীয় পরিষদের জন্য ইউরোপীয় সংসদের প্রস্তাব অনুমোদন করা বাধ্যতামূলক কোনো বিষয় নয়।
তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ের ভিত্তিতে নেয় না। তারা ঐকমত্যের ভিত্তিতে এ ধরনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ওই প্রস্তাবের ওপর ইউরোপীয় পরিষদে চূড়ান্ত ভোটাভুটি সম্ভবত আজ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত হবে। ইরান ইতিমধ্যেই এ ধরনের প্রস্তাব গ্রহণের ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সতর্ক করে দিয়েছে।
প্রশ্ন উঠতে পারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন হঠাৎ কেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ভাবছে? এর জবাব হলো: গত দুই সপ্তাহ আগে কেরমান প্রদেশের সারুল্লাহ ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর জনসংযোগ বিভাগ একটি বিবৃতি দেয়। ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে ব্রিটিশদের সঙ্গে যুক্ত একটি সংগঠিত গোয়েন্দা চক্রকে তারা সনাক্ত করেছে এবং তাদের ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। তারপর থেকেই আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় রাখার চাপ তীব্র হয়। ব্রিটিশদের পক্ষে ওই গুপ্তচর চক্রটি ইরানে সংঘটিত সাম্প্রতিক দাঙ্গায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল। ইরান ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই পদক্ষেপকে অবৈধ এবং একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ট্রাম্পের নীতি অনুসরণ করতে গিয়ে আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী তালিকার অন্তর্ভুক্ত করেছিল।#
পার্সটুডে/এনএম/১৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।