বিপ্লববিরোধীদের আহ্বান উপেক্ষা করে আব্দুল্লাহিয়ানের সাথে পাশ্চাত্যের কর্মকর্তাদের সাক্ষাত
জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ এবং নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক বার্ষিক সম্মেলনের অবকাশে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দুল্লাহিয়ান মানবাধিকার পরিষদের হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক ছাড়াও ফিনল্যান্ড, আর্মেনিয়া ও বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অন্থেনিও গুতেরেসের সাথে সাক্ষাত করেছেন।
ইরানের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের রাজনৈতিক, মিডিয়া ও প্রচারণা যুদ্ধ বিশেষ করে ইরানের সাম্প্রতিক অস্থিরতাকে কেন্দ্র করে বিতর্কের পরও ইউরোপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিভিন্ন সময়ে বৈঠক হয়েছে। এখন ইউরোপ তাদের ব্যর্থতা বুঝতে পেরেছে এবং তারা উভয় পক্ষের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে ইরানের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে চায়। ধারণা করা হচ্ছে, ইউরোপীয় কর্মকর্তারা ইরানের ব্যাপারে তাদের পূর্বের নীতি থেকে কিছুটা সরে এসেছে। বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়ায় ইউরোপীয় সেনাবাহিনীকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে ইরানের পার্লামেন্টে দু'টি প্রস্তাব উত্থাপন করাসহ ইরানের শক্ত অবস্থান এবং অন্যদিকে ইরানে নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়ে চরম হতাশার কারণে ইউরোপ ইরানের ব্যাপারে সূর নরম করতে বাধ্য হয়েছে।
বিদেশে অবস্থানরত ইরানের বিপ্লববিরোধীরা ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত না করার আহ্বান জানানোর পরও জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অন্য ইউরোপীয় কর্মকর্তারা আমির আব্দুল্লাহিয়ানের সাথে বৈঠক করেছেন। প্রকৃতপক্ষে, ইউরোপীয় এবং পশ্চিমারা এটা বুঝতে পেরেছে যে ইরানের সাথে সংলাপের চ্যানেলগুলো বন্ধ করা তাদের স্বার্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তা ছাড়া ইরান নিজের অবস্থানে অটল রয়েছে এবং ইউরোপকে ছাড় দিতে রাজি নয়।
যাইহোক, জেনেভায় মানবাধিকার পরিষদের সম্মেলন এবং সম্মেলনের অবকাশে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তেহরানের দৃঢ় অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং ইরানের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের ষড়যন্ত্রের নানা দিকও তুলে ধরেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ান জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি মানবাধিকার বিষয়ে ইরানের অবস্থান তুলে ধরেন এবং হাইকমিশনারের বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব দেন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো রাখঢাক না রেখেই বলেছেন, মানবাধিকার পরিষদ নিজের দায়িত্ব পালন না করে পাশ্চাত্যের বৃহৎ শক্তিগুলোর রাজনৈতিক লক্ষ্য বাস্তবায়নের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার অন্যায় নিষেধাজ্ঞার কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন।
এদিকে, আমেরিকা এতোদিন ইরানে গোলযোগ উস্কে দিয়ে ইরানকে দুর্বল করার চেষ্টা করলেও এবং পরমাণু সমঝোতাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করার কথা বললেও কোনো লক্ষ্যই অর্জিত না হওয়ায় এখন তারা ফের পরমাণু সমঝোতা নিয়ে কথা বলার আগ্রহ দেখাচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেছেন, পরমাণু বিষয়ে কূটনৈতিক সংলাপের রাস্তা সবসময়ই খোলা রয়েছে। #
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।