ইরানের পরমাণু কর্মসূচি:
আইএইএ'র নির্বাহী পরিষদের বৈঠকের প্রাক্কালে গ্রোসির তেহরান সফর
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ'র মহাপরিচালক ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান সফর করছেন। গতকাল (শুক্রবার) থেকে ২দিনের সফরে রাফায়েল গ্রোসি ইরানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করবেন। ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি এর আগে গ্রোসির ইরান সফর সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন: গ্রোসির এই সফরটি উভয় পক্ষের জন্যই উপকারী হওয়া অনিবার্য দাবি।
গ্রোসি নিজেও এই সফরের আগে বলেছিলেন: পরমাণু সমঝোতা বিষয়ক প্রক্রিয়া এবং ইরানের সাথে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পরিবেশ বর্তমানে খুব ভাল অবস্থায় নেই। তিনি বলেন আশা করি আমি এই অনিবার্য সংলাপকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং শক্তিশালী করতে পারব। তা না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেছিলেন। বিগত বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে ইহুদিবাদী ইসরাইলসহ পশ্চিমা শাসকদের ভিত্তিহীন কিছু দাবির পুনরাবৃত্তি করেছে।
২০২৩ সালে আইএইএ'র নির্বাহী পরিষেদের প্রথম বৈঠক আসছে ৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গত ৪ মাস আগে নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে ইরানের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। ওই প্রস্তাবে ইরানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল যেসব দাবি উত্থাপিত হয়েছে সে ব্যাপারে কারিগরি ব্যাখ্যা দিতে এবং ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো পরিদর্শনের ব্যবস্থা করতে। বিগত সপ্তাজুড়ে পশ্চিমা গণমাধ্যমে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে এমন সব দাবি তোলা হয়েছে যেগুলো পর্যালোচনা করলে বুঝতে পারা যায়, পশ্চিমারা ইরানের বিরুদ্ধে নির্বাহী পরিষদে নয়া প্রস্তাব পাস করতে উঠেপড়ে লেগেছে। আমেরিকার নিউজ চ্যানেল ব্লুমবার্গ সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে ২ জন পদস্থ কূটনীতিকের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে-ইরানের পরমাণু স্থাপনায় আইএইএ'র পরিদর্শকরা শতকরা ৮৪ মাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের সন্ধান পেয়েছে। ওই প্রতিবেদনের জবাবে ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বলেছেন শতকরা ৬০ মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কোনো কর্মসূচি ইরানের নেই। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালও লিখেছে দুটি নির্ভরযোগ্য সূত্র তাদের জানিয়েছে যে আইএইএ ইরানের ৮৪ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধির ব্যাপারে পৃথক কোনো প্রতিবেদন দিতে চাচ্ছে না।
যদিও সংস্থার প্রযুক্তিবিদরা সমস্যাগুলো নিরসনের লক্ষ্যে ২ বার ইরান ভ্রমণ করেছেন। ইরান নিজেও সংস্থাটির মহাপরিচালককে তেহরান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার পরিদর্শকরা ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো বহুবার পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি সামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে-এমন কোনো তথ্য-প্রমাণ তারা কখনোই পান নি।
যাই হোক, ইরান মনে করে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার উচিত ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির ব্যাপারে নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখা। ইরানের ওপর চাপ বাড়ানোর জন্য পশ্চিমা সরকার বা ইহুদিবাদী শাসকদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত না হওয়া।#
পার্সটুডে/এনএম/৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।