বিশ্বে ব্রিক্সের অবস্থান এবং ইরানের জন্য এই সংস্থার গুরুত্ব
(last modified Wed, 31 May 2023 07:01:48 GMT )
মে ৩১, ২০২৩ ১৩:০১ Asia/Dhaka

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক কূটনীতি বিষয়ক উপমন্ত্রী মাহদি সাফারি বলেছেন: ব্রিক্স সদস্য দেশগুলো এখনো নতুন সদস্যের জন্য তাদের মানদণ্ড নির্ধারণ করে নি। ব্রিক্স ইরানের সদস্যপদ গ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন: তবে যে মানদণ্ড এখন আমাদের আছে, তার সঙ্গে আমরা সহজেই মানিয়ে নিতে পারবো।

ব্রিক্স (BRICS) হল উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর নেতৃত্বে গঠিত একটি গ্রুপের নাম। ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর ইংরেজি নামের প্রথম অক্ষরযোগে এই নামকরণ করা হয়েছে। দেশগুলো হলো  ব্রাজিল, রাশিয়া, ইন্ডিয়া, চীন এবং সাউথ আফ্রিকা। জোটের সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী ২ এবং ৩ জুন কেপটাউনে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে যোগ দেবেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ান। ইরান ছাড়াও সৌদি আরব, আর্জেন্টিনা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আলজেরিয়া, মিশর, বাহরাইন, ইন্দোনেশিয়া ব্রিক্স-এ যোগদানের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি ক্ষমতায় আসার পর ইরান প্রতিবেশী দেশ এবং প্রাচ্যের মিত্র দেশগুলোর সাথে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার প্রক্রিয়া জোরদার করেছে। ইরানের অর্থনীতির বিকাশ ঘটানো এবং মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করাই ছিল তার লক্ষ্য। ওই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য ইরান আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থায় যুক্ত হবার চেষ্টা করে। ইউরেশিয়া অর্থনৈতিক ইউনিয়ন এবং সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার মতো আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সদস্য হওয়ার চেষ্টা করার মাধ্যমে এই জাতীয় দেশগুলির সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রসারিত করার চেষ্টা করেছে ইরান। ব্রিকস-এ যোগদানকে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বহুপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য ইরানের অর্থনৈতিক কূটনীতির পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

ব্রিকস গ্রুপের গুরুত্বের অন্যতম কারণ হলো বিশ্ব অর্থনীতিতে এই সংস্থার প্রভাব বিস্তারের উচ্চ সম্ভাবনা। ব্রিক্সের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্রুত ঘটছে এবং বৈশ্বিক বিষয়গুলোতেও ব্রিক্সের প্রভাব দ্রুতই বাড়ছে। তাছাড়া ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর জনসংখ্যা বিশ্বের জনসংখ্যার অর্ধেকপ্রায়। বিশ্বের অর্থনৈতিক ক্ষমতার শতকরা ২৫ থেকে ২৮ শতাংশই ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর আয়ত্ত্বে রয়েছে। এ কারণে আমেরিকা ব্রিক্সের অন্যতম বিরোধী বলে মনে করা হয়। আমেরিকা সবসময় চেষ্টা করেছে তার পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে মিলে অপরাপর উন্নয়নশীল দেশগুলোর বিশ্বায়ন প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করতে। একটি উদীয়মান সংস্থা হিসাবে ব্রিক্সের লক্ষ্য ভবিষ্যতের বহুমেরুকেন্দ্রিক বিশ্বে ভূমিকা পালন করা এবং বর্তমান আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করা।

ব্রিক্সের আরেকটি লক্ষ্য হল আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের লেনদেনে মুদ্রা হিসেবে ডলার থেকে বেরিয়ে আসা। এ লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সদস্য দেশগুলোর মুদ্রার ওপর ভিত্তি করে একটি "আন্তর্জাতিক মুদ্রা" তহবিল প্রতিষ্ঠার বিষয়টি চলমান রয়েছে। আর এই পরিকল্পনাটিও ইরানের নীতির সঙ্গে মিলে যায়।#

পার্সটুডে/এনএম/৩১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ