রায়িসির উগান্ডা সফর: মধ্যএশিয়ায় পণ্য বিক্রিতে ইরানের ট্রানজিট সুবিধা নিতে পারে এ দেশটি
(last modified Thu, 13 Jul 2023 07:04:48 GMT )
জুলাই ১৩, ২০২৩ ১৩:০৪ Asia/Dhaka

ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি আফ্রিকার দেশ উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইওওয়েরি মুসোনির আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ওই দেশটির রাজধানী কাম্পালায় পৌঁছেছেন।

আফ্রিকার দেশগুলোর সাথে সহযোগিতা জোরদার করার জন্য কেনিয়া, উগান্ডা ও জিম্বাবুয়ে সফর  শুরু করেছেন। প্রথমে তিনি কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি সফরে গিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রোতোর সাথে দেখা করেন এবং ওই দেশটির সাথে সহযোগিতা বিষয়ক পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে সই করেন। ইরান ব্যাপক অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক তৎপরতা  চালিয়ে আফ্রিকার দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে একদিকে ইরান আফ্রিকা থেকে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ করবে এবং অন্যদিকে, আফ্রিকার মতো বড় বাজারে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার পাশাপাশি চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ সরবরাহ করতে পারবে। 

প্রকৃতপক্ষে, আফ্রিকা মহাদেশের বিশাল এবং বৈচিত্র্যময় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সক্ষমতা এবং বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থসহ জনসংখ্যা বৃদ্ধির উচ্চ হার অনেক দেশকে এই মহাদেশে বিনিয়োগের প্রতি আকৃষ্ট করেছে। এ কারণে ইরানের প্রেসিডেন্ট আফ্রিকা মহাদেশ সফরের জন্য উগান্ডাকে দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বেছে নিয়েছেন। উগান্ডা হচ্ছে ভিক্টোরিয়া হ্রদের ধারে অবস্থিত একটি দেশ যা আফ্রিকার মধ্য-পূর্বে অবস্থিত। এ ছাড়া, এ দেশটি দক্ষিণ সুদান, কঙ্গো, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, তানজানিয়া ও কেনিয়ার সীমান্তে অবস্থিত। উগান্ডা ১৮৯০ সাল থেকে ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল এবং ১৯৬২ সালের ৯ অক্টোবর স্বাধীনতা লাভ করে। এই দেশের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে চার কোটি। উগান্ডার প্রথম সরকারী ভাষা ইংরেজি এবং দ্বিতীয় সরকারী ভাষা সোহেলি। এই দেশটির ৮৪ শতাংশ মানুষ খ্রিস্টান এবং ১২ শতাংশ মানুষ মুসলমান।

স্থলবেষ্টিত দেশ হিসাবে, উগান্ডাকে বিশ্বের সবচেয়ে কম জনসংখ্যার তিনটি দেশের মধ্যে বিবেচনা করা হয় এবং করোনার পর গত দুই বছরে এর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩.৩ শতাংশে পৌঁছেছে। দেশের অর্থনীতির প্রধান অংশ হল কৃষি, যা দেশের জিডিপির এক তৃতীয়াংশ। চীন, কেনিয়া এবং ভারত প্রথম ৩টি দেশ যারা উগান্ডায় পণ্য রপ্তানি করে; সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শুল্ক বর্জন করে বিশ্বের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য প্রতিষ্ঠার নীতি গ্রহণ করেছে এ দেশটি।

ইরান ও উগান্ডার মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক ১৯৭৪ সালে শুরু হলেও কোনো প্রতিনিধি দল ছিল না।  ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পর আফ্রিকার দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয় ইরান।  এ কারণে উগান্ডার সাথে যোগাযোগ জোরদার করা হয়েছিল এবং ইরান প্রায়ই ওই দেশটিকে ঋণ ও অর্থনৈতিক সাহায্য দিত। যাইহোক, ইরান, একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে এবং পারস্য উপসাগরে রেল ও সড়ক পরিবহন অবকাঠামো এবং গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক বন্দর থাকার কারণে মধ্য এশিয়ার দেশগুলো, ককেশাস এবং রাশিয়ার সাথে উগান্ডা কৃষিসহ অর্থনৈতিক সহযোগিতা গড়ে তুলতে পারে। বিশেষ করে চা ও কফি রপ্তানিতে উগান্ডা এই সুবিধা নিতে পারে।

এ ছাড়া, উগান্ডার রাস্তা নির্মাণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, জল পাম্পিং, পাইপ স্থাপন ও পানীয় জল সরবরাহ এবং উগান্ডার উর্বর জমিগুলোর সেচের উন্নতির ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নিয়ে ইরান এগিয়ে আসতে পারে। সে কারণে ইরানের প্রেসিডেন্টের উগান্ডা সফরকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ