ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩ ২০:৪২ Asia/Dhaka

ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট সম্প্রতি প্রকাশিত এক নিবন্ধে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সরকার ব্যবস্থাকে উৎখাতের আহ্বান জানিয়েছেন। গত ২৮ ডিসেম্বর মার্কিন দৈনিক পত্রিকা "ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে" প্রকাশিত একটি নিবন্ধে তিনি দাবি করেছেন যে তেল আবিব সরকার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানকে উৎখাত করার জন্য একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।

নাফতালি বেনেট আরও বলেন, "আমি ইসরাইলের নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলাম যে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোকে সমর্থনের জন্য তেহরানকে যাতে এরজন্য মূল্য দিতে হয় তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়।

এ প্রসঙ্গে তিনি ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় কেরমানশাহের কাছে ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি'র ঘাঁটিতে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর অভিযান এবং কুদস বাহিনীর কমান্ডাার হাসান সায়াদ খোদেইকে হত্যার কথা উল্লেখ করেন।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত বেনেটের নিবন্ধটি অধিকৃত অঞ্চলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। কিছু সমালোচক বলেছেন যে ইসরাইলের এই সাবেক সিনিয়র কর্মকর্তা সামরিক সেন্সরশিপ বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর সবচেয়ে গোপন গোয়েন্দা বিষয়গুলো ফাঁস করে দিয়েছেন। জেরুজালেম পোস্টের সাবেক সম্পাদক ইয়াকভ ক্যাটস এই সম্পর্কে লিখেছেন, আমি আজ ইসরাইলের সামরিক সেন্সরশিপ বিভাগকে জিজ্ঞাসা করেছি যে তারা নাফতালি বেনেটের নিবন্ধটি অনুমোদন করেছিলেন কিনা।  উত্তর ছিল: না!

যাইহোক, ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এই বাগাড়ম্বর এবং দাবি সম্পর্কে এখানে কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন।  প্রথমত এই এসব বক্তব্যের মাধ্যমে এটা স্পষ্ট দলিল যে ইসরাইল বিভিন্ন দেশে নাশকতামূলক এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। ফলে ইহুদিবাদী ইসরাইলি সরকারের সন্ত্রাসী তৎপরতার স্বীকৃতি বিশ্বে এই অবৈধ সরকারের কেবল আসল চেহারাই উন্মোচিত করছে না বরং ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের আত্মরক্ষা ও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকারও তুলে ধরছে।

আরেকটি বিষয় হল যে, ইসলামী বিপ্লবের পর থেকেই দেখা যাচ্ছে যে  ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠী ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ শত্রুরা সব সময় এই বিপ্লবের আদর্শ ও লক্ষ্য অর্জনে বাধা দিতে বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসাত্বক পন্থা অবলম্বন করে আসছে যার মধ্যে ইরানের সামরিক কমান্ডারদের হত্যাও রয়েছে। এছাড়া শত্রুরা ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যা, শিল্প ও প্রতিরক্ষা স্থাপনায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর পাশাপাশি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে ইরানকে দুর্বল করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু শত্রুরা তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের লক্ষ্য ও আদর্শ বাস্তবায়নের পথে তারা কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারে নি। উল্টো এই অঞ্চলে ইরানের আধ্যাত্মিক প্রভাব বাড়ার পাশাপাশি এখানে প্রতিরোধকামীতার মডেল সৃষ্টি করতে ইরান শতভাগ সফল হয়েছে। পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর ব্যাপক বিস্তার এবং ইসরাইল-মার্কিন বিরোধী তৎপরতার দিকে দৃষ্টি দিলে এর সত্যতা খোঁজে পাওয়া যায়।

আরেকটি বিষয় হল যে নাফতালি বেনেটের সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং বাগারম্বর  ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর ব্যর্থতা এবং বর্তমান সংকট ঢাকার চেষ্টা হিসাবে মূল্যায়ন করা যেতে পারে। কারণ ৭ অক্টোবরে সংঘটিত ইসলামি প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর সফল আল আকসা তুফান অভিযানের পর ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠী এক অভূতপূর্ব সংকট ও অচলাবস্থায় পৌঁছেছে এবং এমনকি কিছু ইহুদিবাদী কর্তৃপক্ষ এবং বিশেষজ্ঞ এর মাধ্যমে ইসরাইলের পতনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বলেও স্বাকারোক্তি দিচ্ছেন।#      

 

পার্সটুডে/এমবিএ/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ