এপ্রিল ০৬, ২০২৪ ২০:৫৫ Asia/Dhaka
  • ইসরাইলের বেপরোয়া আগ্রাসন সম্পর্কে এক্স পেজে দেয়া ১০টি  গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচিত মন্তব্য
    ইসরাইলের বেপরোয়া আগ্রাসন সম্পর্কে এক্স পেজে দেয়া ১০টি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচিত মন্তব্য

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স বা (সাবেক টুইটার) ব্যবহারকারীরা সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসের কনস্যুলেট ভবনে ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এখানে দশটি নির্বাচিত গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট তুলে ধরা হলো:-

১- আমেরিকা হচ্ছে ইসরাইলের প্রধান পৃষ্ঠপোষকতাকারী

আঁন্দ্রে ড্যামন, একজন আমেরিকান সাংবাদিক। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স ব্যবহারকারীদের একজন। তিনি তার পোস্টে আমেরিকাকে ইসরাইলের সার্বক্ষণিক সমর্থক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

আঁন্দ্রে ড্যামন তার পোস্টে লিখেছেন:

"আজ মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে, ইসরাইল যখন গাজায় ব্যাপক গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে তখন মার্কিন সরকার কেন ইসরাইলকে ২০০০ পাউন্ড বোমা দিয়েছে?

মিলার উত্তর দিয়েছেন, ইরানের সাথে লড়াই করার জন্য ইসরাইলের বোমা দরকার।

তিনি যেদিন এ কথা বলেন ঠিক সেদিনই ইসরাইল সিরিয়ায় ইরান দূতাবাসের কন্স্যুলেট ভবনে বোমা হামলা চালায়।

 আঁন্দ্রে ড্যামনের টুইট: 'আমেরিকা ইসরাইলের যোগানদাতা' 

আঁন্দ্রে ড্যামনের টুইট: 'আমেরিকা ইসরাইলের যোগানদাতা' 

২. ইরানের পক্ষ থেকে শক্ত জবাব জরুরি

কানা হচ্ছেন একজন ইরানি-লেবানিজ লেখক। তিনি তার এক্স পেজে দেয়া এক পোস্টে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের বিরুদ্ধে ইরানের পক্ষ থেকে শক্ত জবাব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

কানা লিখেছেন:  

'একটি প্রকাশ্য যুদ্ধে সবকিছুই প্রত্যাশিত। তাই কখনও কখনও শত্রুকে কঠিন আঘাত হানা উচিত। দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটকে লক্ষ্য করে ইসরাইল যা করেছে তা শুধু হামলা নয়, বরং তা ইসরাইলের দুঃসাহস। ইরানকে অবশ্যই এর জন্য সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ ও স্পষ্ট জবাব দিতে হবে'।

ইরানের পক্ষ থেকে শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানোর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কানার টুইট

 

৩. আইন না মানা মার্কিন দোষরদের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য

বেন এহরেনরিচ হচ্ছেন একজন আমেরিকান সাংবাদিক ও লেখক। তিনি তার এক পোস্টে আইন অমান্য করাকে ইসরাইলসহ আমেরিকার অনুগতদের একটি বৈশিষ্ট্য হিসাবে উল্লেখ করেছেন।

বেন এহরেনরিচ লিখেছেন:

'একটি দেশের দূতাবাসে হামলা হয়েছে।

মার্কিন সরকার তাদের ভাষায় কোনো দেশকে দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত ওইসব দেশের কোনো দূতাবাসে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এভাবে বেপরোয়া  হামলা চালানো হয়নি'।

 আইন না মানা মার্কিন দোষরদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বেন এহরেনরিচের পোস্টট

 

৪. রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দেওয়া

'আফিফা আবেদি' একজন ইরানি গবেষক। তিনি এক্স পেজে অর্থাৎ সাবেক টুইট বার্তায় গত ১ এপ্রিলে সিরিয়ায় ইরান দূতাবাসে হামলার ইসরাইলি পদক্ষেপকে উন্মাদনা হিসাবে অভিহিত করে একে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের সম্প্রসারণ বলে উল্লেখ করেছেন।

'আফিফা আবেদি' এক্স পেজে লিখেছেন:

'অন্য দেশের কূটনৈতিক ভবনে ইসরাইলের হামলা নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের বড় দৃষ্টান্ত। আর এ ক্ষেত্রে আমেরিকা নেতৃত্বের পর্যায়ে রয়েছে'।

রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে আফিফা আবেদির টুইট

 

৫. ইসরাইল গাজার চোরাবালিতে আটকা পড়েছে

একটি টুইট বার্তায়, ইরানি প্রযোজক হাসানেইন হাদ্দাদ বলেছেন যে গাজার চোরাবালিতে তেলআবিব আটকা পড়ার কারণেই সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসের কনস্যুলার বিভাগে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।  

তিনি আরো লিখেছেন,

'ইসরাইল গাজার চোরাবালিতে আটকে পড়ার পর এখন ইরানের অবস্থানে হামলা চালিয়ে নিজের সাফল্য ও শক্তিমত্তা দেখানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা অনেক বড় ভুল করছে এবং অবশ্যই শাস্তি পাবে'।

 গাজার চোরাবালিতে ইসরাইলের দুর্দশা সম্পর্কে হাসানেইন হাদ্দাদের টুইট

 

৬. ইসরাইলের চরম উগ্রবাদী হয়ে ওঠা

সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেট ভবনে ইসরাইলের হামলার পর ইরানি সাংবাদিক হোসেইন সারামি ইরান ও ইসরাইলের অবস্থানের তুলনামূলক পার্থক্য তুলে ধরেছেন।

সাংবাদিক হোসেইন সারামি লিখেছেন,

'ইরানের অবস্থান সত্যিকারের পাহাড়ের মতো এবং ইসরাইলের অবস্থান বরফ ঢাকা পাহাড়ের মতো। তাই ইসরাইল জানে হাল্কা গরমে কিংবা হাল্কা নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতি তৈরি হলেই ইসরাইল ধ্বসে পড়বে, ধ্বংস হয়ে যাবে। প্রকৃতপক্ষে, ইসরাইলের বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য নয় বরং দেশের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। তাই তারা যতই ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে ততই উগ্র হয়ে উঠবে'

 ইসরাইলের চূড়ান্ত উগ্রবাদী হয়ে ওঠা নিয়ে ইরানি সাংবাদিক হোসেইন সারামির টুইট

 

৭. একদিনে ইসরাইলের কিছু অপরাধের চিত্র

 'জ্যাকসন হিঙ্কেল' হচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স পেজ বা সাবেক টুইটার একান্ট ব্যবহারকারী একজন আমেরিকান নাগরিক। তিনিও তার পোস্টে ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।  

জ্যাকসন হিঙ্কেল লিখেছেন:

একদিনে ইসরাইল নিম্ন লিখিত কাজগুলো করেছে:

ত্রাণ সরবরাহ কাজে নিয়োজিত জাতিসংঘের ৫ কর্মীকে বোমা মেরে হত্যা করেছে।

ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের বিষয়ে রিপোর্ট করার কারণে আল-জাজিরাকে নিষিদ্ধ করেছে।

ইসরাইল আশ-শিফা হাসপাতাল ধ্বংস করেছে এবং এর ভিতরের বহু লোককে হত্যা করেছে।

সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে বোমা হামলা করে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে।

একদিনে ইসরাইলি অপরাধ নিয়ে জ্যাকসন হিঙ্কেলের টুইট

 

৮. ইসরাইলকে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর সবুজ সংকেত

ইরানের ইংরেজি সাহিত্য ও প্রাচ্য বিষয়ক গবেষক অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ মারান্দি। তিনি তার টুইট বার্তায় অপরাধ চালিয়ে যেতে ইসরাইলকে সবুজ সংকেত দেয়ার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর তীব্র সমালোচনা করেছেন।

সৈয়দ মোহাম্মদ মারান্দি এক্স পেজে লিখেছেন:

'দামেস্কে ইরানি কন্স্যুলেট ভবনে ইসরাইল এজন্য হামলা চালানোর দুঃসাহস দেখিয়েছে যে, পাশ্চাত্য বর্ণবাদী ইসরাইলকে যেকোনো অপরাধ বা নৃশংসতা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে রেখেছে। কিন্তু তাদের এটা বোঝা উচিত দুনিয়া পাল্টে গেছে এবং পাশ্চাত্যের আধিপত্যবাদের দিনও শেষ হয়ে আসছে'।

 ইসরাইলের প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর সবুজ সংকেত নিয়ে সৈয়দ মোহাম্মদ মারান্দির টুইট

 

৯. ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের প্রতি বিবিসির সমর্থন

ব্রিটিশ সাংবাদিক রিচার্ড মেডহার্স্ট ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের প্রতি বিবিসির সমর্থনের নিন্দা করেছেন।

সাংবাদিক রিচার্ড মেডহার্স্ট লিখেছেন:

আপনারা দেখুন কিভাবে বিবিসি এই ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের রক্ষা করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা এমনভাবে গত কয়েক বছর ধরে সিরিয়ার বিভিন্ন অবস্থানে ইসরাইলের বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়টি তুলে ধরছে যেন এটা খুবই সাধারণ ও ছোটখাটো বিষয় এবং এর সাথে জড়িত  ব্যক্তিদেরকেও তারা কৌশলে আড়াল করার চেষ্টা করছে।

ভাবখানা এমন যে এসব হামলা হয়তো তানজানিয়া বা চিলির কাজ ছিল! কে জানে?"

 ইসরাইলি অপরাধের বিষয়ে বিবিসির সমর্থন সম্পর্কে রিচার্ড মেডহার্স্টের টুইট

 

১০. জেনারেল জাহেদীর পথ চলা অব্যাহত  থাকবে

এক্স সোশ্যাল নেটওয়ার্কের আরেকজন ব্যবহারকারী, সিরিয়ায় ইসরাইলি বোমা হামলায় শহীদদের সম্মান জানিয়ে পশ্চিম এশীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা এবং দায়েশ বা এইএস জঙ্গিদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তাদের পথ চলা অব্যাহত  থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন।

তিনি আরো লিখেছেন,

'আমাদের একজন জেনারেলকে ইহুদিবাদীদের সামনে সাধারণ সৈনিক হিসাবে তুলে ধরা হয় ....

তারা আমাদের সামরিক কমান্ডারদের ক্ষমতা এবং চিন্তাভাবনাকে এতটাই ভয় পায় যে তারা এখন শুধুমাত্র তাদেরকেই লক্ষ্য বানিয়েছে....

কিন্তু তারা এটা জানে না যে, এ পর্যন্ত যেসব জেনারেলকে তারা শহীদ করেছে, এর বাইরে আরও অনেক জেনারেল এদেশে ইরানে গড়ে উঠেছে এবং তারা সবাই জেনারেল জাহেদীর মতো মানুষের পথ চলা অব্যাহত রেখেছেন .....'

জেনারেল জাহেদীকে নিয়ে এক্স সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীর টুইট

 

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৬


বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ