'ইরান উপনিবেশ ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বলে আমি সব সময়ই ইরানের অনুরাগী'
(last modified Sun, 12 May 2024 14:05:21 GMT )
মে ১২, ২০২৪ ২০:০৫ Asia/Dhaka
  • আইরিশ চলচ্চিত্র নির্মাতা সন মুরে
    আইরিশ চলচ্চিত্র নির্মাতা সন মুরে

আইরিশ চলচ্চিত্র নির্মাতা সন মুরে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, 'পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো ইরান সম্পর্কে সব সময়ই এমন চিত্র তুলে ধরে যে মনে হয় যেন ইসলামী এই দেশটি মারাত্মক অচলাবস্থার শিকার।

অবশ্য আমি মনে করি প্রথম থেকেই চলমান ঘটনা প্রবাহের বিষয়ে খুবই ধৈর্যশীল অবস্থান বজায় রাখছে ইরান।'  

ইরানের মেহের বার্তা সংস্থাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সম্প্রতি তেহরানে তার সফরের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ইরানের সংস্কৃতি সব সময়ই আমার জন্য এক বড় আকর্ষণ এবং যেভাবে দেশটি উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে লড়াই করে আসছে তা ও দেশটিতে ৪৫ বছর আগে সংঘটিত ইসলামী বিপ্লবের বিজয়-এসবই আমাকে ইরানের গভীর অনুরাগীতে পরিণত করেছে।

সম্প্রতি ইরানে প্রত্যূষ বা সোব্‌হ্‌ শীর্ষক আন্তর্জাতিক মিডিয়া উৎসবের দ্বিতীয় দফার আয়োজন এবং তাতে কয়েকটি স্বাধীন পশ্চিমা মিডিয়ার উপস্থিতির কথা তুলে ধরে সন মুরে বলেছেন, পাশ্চাত্যের স্বাধীন মিডিয়াগুলোর উপস্থিতিতে এ ধরনের নানা সম্মেলন অনুষ্ঠান বেশ গঠনমূলক হতে পারে।   

পশ্চিমা মিডিয়াগুলোর তুলে ধরা চিত্র হতে ইরানের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন 

সন মুরে উল্লেখ করেছেন যে পশ্চিমা মিডিয়াগুলো ইরানকে তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ হিসেবে তুলে ধরে। কিন্তু ইরান ভ্রমণের অভিজ্ঞতার আলোকে আমি পশ্চিমা মিডিয়াগুলোর তুলে ধরা এ ধরনের চিত্র বা ধারণার সঙ্গে  সম্পূর্ণ ভিন্ন মত পোষণ করছি। ইরান ভ্রমণে আমি দেখেছি যে ইরান খুবই সুন্দর ও চমৎকার এক দেশ, এই চিত্র আমার কাছে নতুন বা অদ্ভুত কোনো বিষয় নয়। কারণ আমি দীর্ঘ অনেক বছর ধরে ইরানি সংস্কৃতি সম্পর্কে গবেষণা করেছি, বিশেষ করে এর প্রাচীন সংস্কৃতি এবং যেভাবে তা বর্তমানে ইসলামী সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে তা আমি জানি। আর এ বিষয়টি আমার কাছে খুবই আকর্ষণীয়। অথচ পশ্চিমা মিডিয়াগুলো ইরানের মত দেশগুলোকে দুর্বল হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে এবং পাশ্চাত্যের জনগণকে তারা এভাবে ইরান সম্পর্কে অজ্ঞ রাখতে চায়। 

আইরিশ চলচ্চিত্র নির্মাতা এইসব মিথ্যা চিত্র মুছে পাশ্চাত্যের জনমতের ওপর প্রভাব ফেলার সবচেয়ে ভালো পন্থা হিসেবে নানা ধরনের গণ-জ্ঞাপক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা এবং পাশ্চাত্যের স্বাধীন মিডিয়াগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বর্তমানে স্বাধীন বা নিরপেক্ষ অনেক ওয়েবসাইট গড়ে ওঠায় এক নতুন পর্যায় সূচিত হয়েছে বলে মুরে মন্তব্য করেন। সামাজিক ও ডিজিটাল মিডিয়া ইরানের মত দেশগুলোর সঙ্গে নানা সম্পর্ক গড়ে তোলার ভালো ক্ষেত্র  গড়ে তুলেছে বলে মুরে উল্লেখ করেন। 

ফিলিস্তিনে ব্যাপক অন্যায়-অবিচার চলছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন পশ্চিমা চলচ্চিত্র নির্মাতারা এক্ষেত্রে ইরানি মিডিয়ার সমমনা এবং এ বিষয়টি যৌথ সহযোগিতার ভিত্তি রচনা করতে পারে।

পশ্চিমা মিডিয়াগুলো সব সময়ই এটা তুলে ধরতে চেয়েছে যে ইরান অচলাচবস্থায় রয়েছে 

মুরে আরও বলেছেন, পশ্চিমারা মিডিয়ার ক্ষেত্রে ইরানের মত দেশগুলোর চেয়ে অনেক বছর এগিয়ে রয়েছে। তাই পাশ্চাত্যের স্বাধীন মিডিয়া ও ইরানের অভিন্ন বার্তার ওপর কাজ করা খুবই জরুরি এবং তা হতে হবে গুণগত ও পরিমাণগত উভয় ক্ষেত্রেই। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো ইরান সম্পর্কে সব সময়ই এমন চিত্র তুলে ধরে যে মনে হয় যেন ইসলামী এই দেশটি মারাত্মক অচলাবস্থার শিকার। অবশ্য আমি মনে করি প্রথম থেকেই চলমান ঘটনা প্রবাহের বিষয়ে খুবই ধৈর্যশীল অবস্থান বজায় রাখছে ইরান। 

তিনি আরও বলেছেন, গাজায় ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ ও ইসরাইলের অন্যান্য অপরাধ ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় এবং ব্রিটেন আয়ারল্যান্ডে নানা অপরাধে জড়িত হওয়ায় মার্কিন ও ব্রিটিশ যুব প্রজন্মের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ বিষয়টি ইসরাইলের এবং ইহুদিবাদী মতাদর্শের বিলুপ্তির আশা সৃষ্টি করেছে। আমি মনে করি ইসরাইল গত ১১ অক্টোবর থেকে যা করেছে তাতে অপরিবর্তনযোগ্য তথা অবশ্যম্ভাবী পথ সূচিত হয়েছে।

ইরানে প্রত্যূষ বা সোব্‌হ্‌ শীর্ষক আন্তর্জাতিক মিডিয়া উৎসবের দ্বিতীয় দফার বৈঠক হবে এ বছরের (২০২৪) চলতি মাসের আগামী ১৯ থেকে ২১ মে। এতে থাকবে তিনটি বিভাগ: মা, বিশ্ব বিভাগ ও ফিলিস্তিন। আন্তর্জাতিক বিষয়ে চলচ্চিত্র ও অনুষ্ঠান নির্মাণের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এ উৎসবে। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১২   

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।