বিশ্ব হয়তো শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকারকে হারালো: কিয়ারোস্তামির মৃত্যুতে ‘দ্য ফিল্ম স্টেজ'
বিশ্বখ্যাত ইরানি চলচ্চিত্রকার আব্বাস কিয়ারোস্তামির মৃত্যুতে ইরানি ও বিশ্ব-চলচ্চিত্র অঙ্গনে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
নিউইয়র্কের চলচ্চিত্র ম্যাগাজিন ‘দ্য ফিল্ম স্টেজ’ (The Film Stage) কিয়ারোস্তামির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে লিখেছে, বিশ্ব সম্ভবত শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাকে হারালো। শোক প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট।
কিয়ারোস্তামি ক্যান্সারে ভুগে গতকাল সোমবার বিকেলে প্যারিসে ইন্তেকাল করেন (ইন্না...রাজিউন)। চিকিৎসার জন্য তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। কিয়ারোস্তামির বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ। কিয়ারোস্তামির বন্ধু অস্কার-জয়ী ইরানি চলচ্চিত্র নির্মাতা আসগার ফরহাদি বলেছেন, তিনি গভীরভাবে মর্মাহত। সোমবার বিকেলে প্যারিসে তাকে দেখতে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন ফরহাদি।
আর্ট ফিল্মের অন্যতম কিংবদন্তী ও দিকপাল কিয়ারোস্তামি ৪০ বছরে ৪০টিরও বেশি প্রামাণ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য ছায়াছবি উপহার দিয়ে গেছেন। কয়েক ডজনেরও বেশি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। তার নির্মিত ছায়াছবি ‘টেস্ট অফ চেরি’ (চেরি ফলের স্বাদ) ১৯৯৭ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের শীর্ষ পুরস্কার ‘গোল্ডেন পাম’ পেয়েছিল। সেরা পরিচালককে দেয়া হয় এ পুরস্কার।
লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবের ‘ব্রোঞ্জ লিওপার্ড’ পুরস্কারও পেয়েছিলেন কিয়ারোস্তামি। গত সপ্তায় বিশ্বখ্যাত ‘চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞান একাডেমী’ (Academy of Motion Pictures and Sciences) কিয়ারোস্তামিকে এই সংস্থার সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।
১৯৮৭ থেকে ১৯৯৪ সালে নির্মিত ‘ভূমিকম্প ট্রিলজি’ বা কোকার ট্রিলজি এবং ১৯৯৯ সালে নির্মিত ‘দ্য উইন্ড উইল ক্যারি আস’ (হাওয়া আমাদের নিয়ে যাবে) কিয়ারোস্তামির আরও দু’টি সাড়া-জাগানো ছায়াছবি।
ইরানি চলচ্চিত্র শিল্পের দু’জন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা কিয়ারোস্তামির লাশ তেহরানে আনার জন্য প্যারিস রওনা হয়েছেন।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ, সংস্কৃতি ও ইসলামী দিক-নির্দেশনামন্ত্রী আলী জান্নাতি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাইয়্যেদ হুসাইন কাজিজাদেহ হাশেমি, ইরানি চলচ্চিত্র সংস্থার প্রধান হুজ্জাতুল্লাহ আইয়ুবি, ইরানের সম্প্রচার বিভাগের সাবেক প্রধান ইজ্জাতুল্লাহ জারগামি এবং ইরানি চলচ্চিত্রের বিশিষ্ট কলাকুশলী ও কর্মকর্তারা কিয়ারোস্তামির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
কিয়ারোস্তামির সম্মানে আজ রাত দশটায় ইরানের সিনেমা হলগুলোয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হবে যাতে সে সময় দর্শকরাসহ সবাই তার জন্য সুরা ফাতিহা পাঠ করতে পারেন। #
পার্সটুডে/মু.আ. হুসাইন/৫