ইরানে আটক পশ্চিমা গুপ্তচর: ‘ইরানের কারাগারগুলো গুপ্তচরদের উপযুক্ত নয়!’
(last modified Wed, 03 Jul 2024 03:42:02 GMT )
জুলাই ০৩, ২০২৪ ০৯:৪২ Asia/Dhaka
  • ইরানে আটক পশ্চিমা গুপ্তচর: ‘ইরানের কারাগারগুলো গুপ্তচরদের উপযুক্ত নয়!’
    ইরানে আটক পশ্চিমা গুপ্তচর: ‘ইরানের কারাগারগুলো গুপ্তচরদের উপযুক্ত নয়!’

পার্সটুডে- ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানে সম্প্রতি ইরান থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত পশ্চিমা গুপ্তচর সিয়ামাক নামাজির একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে তিনি ইরানে পশ্চিমা গুপ্তচরবৃত্তির বিরুদ্ধে লড়াই ও পশ্চিমা গুপ্তচরদের আটকের ঘটনাকে ‘অমানবিক’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।

সিয়ামাক নামাজি তার নিবন্ধের শিরোনাম দিয়েছেন এরকম: “আমি ইরানের সবচেয়ে কুখ্যাত কারাগার এভিনে থেকেছি। সুইডেন কীভাবে ওই কারাগারে তার নাগরিকদের থাকার সুযোগ দেবে যাতে তারা মারা যায়!”

সিয়ামাক তার নিবন্ধে মূলত ইরানের কারাগারে আটক ইরানি বংশোদ্ভূত সুইডিশ নাগরিক আহমাদরেজা জালালির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সেইসঙ্গে তিনি তার নিবন্ধের পরতে পরতে ইরান-বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। পার্সটুডের রিপোর্ট অনুসারে, সিয়ামাক নামাজি ফার্সি ১৩৯৪ সালে অর্থাৎ ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে বিদ্বেষী সরকারগুলোকে সহযোগিতা করার অপরাধে ইরানে গ্রেফতার হন।

২০২৩ সালে আমেরিকার কারাগারে আটক পাঁচ ইরানি নাগরিকের মুক্তির বিনিময়ে ইরান যে পাঁচ মার্কিন গুপ্তচরকে মুক্তি দেয়, সিয়ামাক ছিলেন তাদের অন্যতম।

সিয়ামাক তার নিবন্ধে অতি সম্প্রতি ইরান থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত দুই সুইডিশ গুপ্তচরের প্রসঙ্গেও কথা বলেন। সুইডেনে ইরানবিদ্বেষী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মুজাহেদিনে খালকের অভিযোগের ভিত্তিতে আটক ইরানের বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তা হামিদ নুরির মুক্তির বিনিময়ে ওই দুই সুইডিশ নাগরিককে মুক্তি দেয় তেহরান।

সিয়ামাক তার নিবন্ধে পাঠকের অনুভূতিকে উস্কে দেয়ার জন্য পশ্চিমা গুপ্তচরদের পাশাপাশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মুজাহেদিনে খালকের অপরাধযজ্ঞকে মার্জিত রূপ দেয়ার চেষ্টা করেছেন।

১৯৮১ সালে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মুজাহেদিনে খালকের হামলায় মারাত্মক আহত একটি ইরানি শিশু      

নিবন্ধের একাংশে তিনি লিখেছেন: “আমি একজন সাবেক পণবন্দি যে কিনা ইরানের কারাগারে আট বছর আটক ছিল। আমি ইরানের এভিন কারাগারের জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছি।”  

সিয়ামাক ইরানবিদ্বেষী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মুজাহেদিনে খালককে ‘ইরানের বিরোধীদল’ বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। অথচ এই গোষ্ঠীর হামলায় কমপক্ষে ১৭ হাজার ইরানি নিহত হয়েছে। সিয়ামাক তার নিবন্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির এই কালো ইতিহাস তুলে ধরেননি।    

সিয়ামাকের নিবন্ধে ইরান ভ্রমণে যাওয়া কথিত ‘নিরপরাধ’ পশ্চিমা নাগরিক ও পর্যটককের জন্য বিপজ্জনক দেশ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। তিনি তার নিবন্ধে বলেন, ইরান পশ্চিমা নাগরিকদের আটক করার পর পাশ্চাত্যে নানা অপরাধে আটক ইরানি নাগরিকদের মুক্ত করার জন্য তাদেরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। ইরান থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত মার্কিন গুপ্তচর এমন সময় এসব মিথ্যাচার করেন যখন হাজার হাজার পশ্চিমা নাগরিক প্রতি বছর নির্বিঘ্নে ইরান ভ্রমণ করে এদেশের ঐতিহাসিক নিদর্শন ও স্থাপনা দেখে মুগ্ধ হন।

বিশ্ব পর্যটন সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে, গত ফার্সি বছরের প্রথম ১১ মাসে সারাবিশ্ব থেকে ৫২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৬৪ ব্যক্তি ইরান ভ্রমণ করেন। #                                                                                    

পার্সটুডে/এমএমআই/এমএআর/৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ