ফিলিস্তিন ও লেবাননের প্রতিরোধ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত
নির্যাতিত জাতিগুলোর সমর্থনে ইরানের নীতি অপরিবর্তিত থাকবে: পেজেশকিয়ান
পার্সটুডে- ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান মঙ্গলবার তেহরানে ফিলিস্তিনের ইসলামি জিহাদ আন্দোলনের মহাসচিব জিয়াদ আন-নাখালা ও লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর উপ মহাসচিব শেখ নাঈম কাসেমের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জাতির মুক্তির সংগ্রাম এবং জেরুজালেম আল-কুদসের স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রতি সমর্থন করা ইরানের মূলনীতি এবং এদেশের সরকার পরিবর্তনের ফলে এই নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না।
জিয়াদ আন-নাখালা ও শেখ নাঈম কাসেম ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরান সফরে এসেছেন। পার্সটুডে ফার্সি জানাচ্ছে, জিয়াদ আন-নাখালার সঙ্গে বৈঠকে পেজেশকিয়ান বলেন, নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জাতির মুক্তির সংগ্রামের প্রতি ইরানের পৃষ্ঠপোষকতা শক্তিমত্তার সঙ্গে অব্যাহত থাকবে এবং এ কাজে কেউ সামান্যতম বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারবে না।
গাজা উপত্যকার ওপর গণহত্যা বন্ধ করতে ইসরাইলের ওপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে জানিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন: তার সরকার সকল মুসলিম দেশের পাশাপাশি বিশ্বের স্বাধীনচেতা দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে গাজা যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করবে এবং ইহুদিবাদীদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নির্যাতিত ফিলিস্তিনি ভাইদের একা ফেলে যাবে না।
ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতে ইসলামি জিহাদ নেতা নাখালা বলেন: পেজেশকিয়ান শপথ গ্রহণ করেই ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ নেতাদের সঙ্গে যে সাক্ষাৎ করলেন তাতে মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্ববাসীর কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছে গেল। সবাই এখন একথা জেনে গেল যে, ইরানের নতুন সরকার আগের মতোই ফিলিস্তিনি জাতির প্রতি পৃষ্ঠপোষকতা চালিয়ে যাবে এবং এ ঘটনায় প্রতিরোধ সংগ্রামীদের মনোবল আরো শক্তিশালী হবে।
এদিকে হিজবুল্লাহর উপ মহাসচিব শেখ নাঈম কাসেমের সঙ্গে সাক্ষাতে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে লেবাননের হিজবুল্লাহ যে আত্মত্যাগ স্বীকার করেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে চলমান প্রতিরোধ যুদ্ধে হিজবুল্লাহর পাশে থাকাকে ইরান ধর্মীয় ও নৈতিক কর্তব্য বলে মনে করে এবং এই কর্তব্য পালনে তেহরান বিন্দুমাত্র পিছপা হবে না।
ইরানের নয়া প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ও সহযোগিতা শক্তিশালী করার নীতি গ্রহণ করেছে তার সরকার। গাজা উপত্যকার নিরীহ ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের পাশবিকতা বন্ধ করতে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্যের বিকল্প নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সাক্ষাতে ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করায় ডা. মাসুদ পেজেশকিয়ানকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান হিজবুল্লাহ নেতা শেখ নাঈম কাসেম। হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাঈয়্যেদ নাসরুল্লাহ প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানকে অভিনন্দন জানিয়ে যে চিঠি লিখেছিলেন তার যে জবাব ইরানের প্রেসিডেন্ট দিয়েছিলেন তাকে পিতৃসুলভ ও ভ্রাতৃপ্রতীম বলে বর্ণনা করেন নাঈম কাসেম। তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদে দায়িত্ব পালন করে পেজেশকিয়ান যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন রাষ্ট্র পরিচালনার কাজে সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে এবং ইরান আগের চেয়ে দ্রুতগতিতে অগ্রগতি অর্জন করবে।
শেখ নাঈম কাসেম দক্ষিণ লেবানন লেবানন থেকে ইহুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনীকে হটিয়ে দেয়া এবং সিরিয়ায় উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর পরাজয়ের কথা স্মরণ করে বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলে ওই দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয় অর্জন করা সম্ভব হতো না।#
পার্সটুডে/এমএমআই/জিএআর/ ৩১