ইরানে নারীর পোশাকের বিষয় ও কোনো কোনো পশ্চিমা মহলের চাপ
(last modified Mon, 23 Sep 2024 14:35:00 GMT )
সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪ ২০:৩৫ Asia/Dhaka
  • ইরানে নারীর পোশাকের বিষয় ও কোনো কোনো পশ্চিমা মহলের চাপ

যেসব সমাজ নগ্নতায় বিশ্বাস করে, সেখানে পোশাকের আবরণ বা পর্দা কিংবা ঢেকে রাখার আইনকে সীমাবদ্ধতা বলে মনে হতে পারে; কারণ আবরণের সীমা নির্ধারণ হয় সেই সমাজের নৈতিক রীতিনীতির মাধ্যমে।

কিন্তু ইরানে পর্দা বা পোশাকের শালীনতা এবং নৈতিক পবিত্রতা বা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার নৈতিক কর্মকাণ্ড খাঁটি বিষয়।  

ইরানের নারীদের পোশাকের বিষয়টি সব সময়ই পশ্চিমাদের নানা প্রচার মাধ্যম ও প্রতিষ্ঠানের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু। অথচ হিজাব বা ইসলামী শালীন পোশাকের বিষয়টি ইরানের সংস্কৃতির খুব গভীরে প্রোথিত। বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের মত ইরানের জনগণের মধ্যেও রয়েছে বিশেষ কিছু সাংস্কৃতিক ও প্রথাগত মূল্যবোধ। আর এদিক থেকে ইরানি সমাজে লৈঙ্গিক অগ্রাধিকার ও মানদণ্ডগুলো পশ্চিমা সমাজগুলোর চেয়ে ভিন্ন।

অবশ্য ইসলামী ইরানে যে কেউ নিজের ঘরের মধ্যে ব্যক্তিগত সীমানার মধ্যে যা-খুশি তাই করতে পারেন এবং এ জন্য কাউকে শাস্তি দেয়া হয় না। ইরানের আইন প্রণয়নকারীদের জন্য সেসব কাজই গুরুত্বপূর্ণ যেসব করা হয় সড়কগুলোতে ও সামাজিক পর্যায়ে। অন্য কথায় সড়কের কর্মকাণ্ডের মানদণ্ড হচ্ছে মৌলিক ব্যক্তি পর্যায়ের মানদণ্ড নয়। ব্যক্তি পর্যায়ে মানুষ স্বাধীন। 

অবশ্য এটা জেনে রাখা উচিত যে প্রত্যেক দেশেরই রয়েছে পোশাক সংক্রান্ত নিজস্ব আইন-কানুন তা আমাদের কাছে পছন্দের বা অপছন্দনীয় হতে পারে। কিন্তু প্রত্যেক সমাজের আইন-কানুন এমনই যে ওই সমাজের সদস্যকে ওই সমাজের আইনে নির্ধারিত পোশাকের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। ইরানেও এমনটি হতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে খুব সূক্ষ্ম বিষয় হল ইরানের আইন আসলে পোশাকের আইন নয়, বরং একে পোশাক খুলে ফেলা ও উলঙ্গ হওয়া প্রতিরোধ করার আইন বলা যায়।

পাশ্চাত্যেও এমন নিয়ম রয়েছে। যেমন, কানাডায় কেউ যদি উলঙ্গ হয়ে রাস্তায় আসে তাহলে জনসমক্ষে নগ্নতায় আদালত তাকে জরিমানা করবে। দেশটিতে টি-শার্ট না পরে কেউ ম্যাকডোনাল্ড রেস্তোরাঁয় প্রবেশই করতে পারবে না। এটাও তো পোশাক বিষয়ক এক ধরনের আইন। তাই যেসব সমাজ নগ্নতায় বিশ্বাস করে সেখানে পোশাকের আবরণ বা পর্দা কিংবা ঢেকে রাখার আইনকে সীমাবদ্ধতা বলে মনে হতে পারে; কারণ আবরণের সীমা নির্ধারণ হয় সেই সমাজের নৈতিক রীতিনীতির মাধ্যমে। কিন্তু ইরানের অবস্থা এমন নয়। এখানে পর্দা বা পোশাকের শালীনতা এবং নৈতিক পবিত্রতা বা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার নৈতিক কর্মকাণ্ড খাঁটি বিষয়। 

এ ছাড়াও ইরানে পোশাকের বিষয়টি ইরানি নারীদের জন্য সীমাবদ্ধতা নয়। এদেশের পুরুষরাও টি-শার্ট না পরে নগ্ন অবস্থায় জনসমক্ষে উপস্থিত হতে পারে না। তাদেরকে অবশ্যই জনসমক্ষে পোশাক পরে উপস্থিত হতে হবে। 

সর্বশেষ কথা হল এ বিষয়ে বিজাতীয় প্রচার-মাধ্যমগুলোর প্রচারণা ও চাপিয়ে-দেয়া সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি এবং নিজ সমাজের সাংস্কৃতিক কাঠামোর আলোকে প্রচার মাধ্যমের প্রচারণার কাছে নতি স্বীকার করা উচিত নয়।  #

পার্সটুডে/এমএএইচ/২৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে  লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন

  

ট্যাগ