মার্কিন গণমাধ্যমকে পেজেশকিয়ান
'কিছু বলদর্পী দেশ অন্যদের জন্য উন্নয়নের পথ রুদ্ধ করতে চায়'
নিউইয়র্ক সফরের প্রথম দিনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান,আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং আমেরিকার গণমাধ্যমগুলোর ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
সোমবার ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ৪০টিরও বেশি আমেরিকার গণমাধ্যমগুলোর সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে কিছু পশ্চিমা মিডিয়ায় ইরানকে নিয়ে মিথ্যাচারের সমালোচনা করে বলেন: আমাদের দেশ ও জাতির রয়েছে দীর্ঘদিনের সমৃদ্ধ সভ্যতা এবং সংস্কৃতি। এই বৈঠকে মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন যে ইরানের কিছু মিডিয়ার মাধ্যমে উপস্থাপিত চিত্র ভুল এবং তিনি স্পষ্ট করেন যে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান কোনভাবেই বিশ্বে যুদ্ধ এবং অনিরাপত্তা চায় না এবং তিনি উল্লেখ করেন যে বিশ্বের সব দেশ ও জাতির কানে পৌছে দেয়ার জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় শান্তি ও বন্ধুত্বের বার্তা উপস্থাপন করেছে ইরান।
বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ইরানের সমর্থন
ইরানের প্রেসিডেন্ট বিভিন্ন দেশের সাবেক প্রধান এবং আর্ন্তাজাতিক সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে গঠিত প্রভাবশালী প্রবীণ গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন পশ্চিম এশিয়া অঞ্চল এবং বিশ্বে যেকোনো শান্তি ও নিরাপত্তা জোরদারে প্রচেষ্টার প্রতি ইরান দৃঢ় সমর্থন জানাবে। তিনি বলেন, আজকের বিশ্বের গুরুতর সমস্যা হলো গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার নামে ক্ষমতাধারী কিছু দেশ অন্য দেশের ওপর উন্নয়নের সব পথ বন্ধ করে দিচ্ছে। এছাড়া তারা স্বাধীনতা এবং মুক্তিকামী দেশগুলোকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করছে।
ইরানের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিস্তৃত করা
সোমবার নিউইয়র্কে হোটেলে সুইস প্রেসিডেন্ট ভায়োলা আমহার্ডের সঙ্গেও দেখা করেন পেজেশকিয়ান। এই বৈঠকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে দেশীয় ও পররাষ্ট্রনীতিতে ইরানের নতুন সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করেন এবং তিনি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। কিন্তু দখলদার ইহুদিবাদী সরকার পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে যুদ্ধ উসকে দিতে এবং নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ইসলামি বিশ্বের মহানুভবতা প্রদর্শন করা
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট এ অঞ্চলে একটি বৃহৎ সাধারণ বাজার সৃষ্টি করা এবং একাডেমিক,বৈজ্ঞানিক ও অর্থনৈতিক আদান-প্রদানের মাধ্যমে বিশ্বকে ইসলামি বিশ্বের মহিমা দেখানোর ওপর জোর দিয়ে বলেন, একটি সফল প্রচেষ্টার ওপর ইসলামি দেশগুলোর উন্নত ভবিষ্যত নির্ভর করছে। তাই আমাদের সবার উচিত ঐক্য গড়ে তোলা এবং এই ঐক্যের ছায়ায় গাজায় যা ঘটছে তার মতো অপরাধযজ্ঞ আমরা আর কখনই প্রত্যক্ষ করব না।
সংলাপ এবং বোঝাপড়াই একটি সাধারণ ভাষা এবং দৃষ্টিভঙ্গিতে পৌঁছানোর একমাত্র পথ
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেলের সঙ্গে এক বৈঠকে পেজেশকিয়ান বলেছেন, আমরা পারস্পরিক উন্নতি এবং সংলাপের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য একটি সাধারণ ভাষা এবং দৃষ্টিভঙ্গি খুঁজছি।
ইসরাইল এই অঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতার কারণ
জাতিসংঘের মহাসচিবের সাথে এক বৈঠকে মাসুদ পেজেশকিয়ান পশ্চিম এশীয় অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করে উল্লেখ করেছেন যে তেহরানে ইসমাইল হানিয়াকে শহীদ করার পরও ইরান যখন মুখোমুখি উত্তেজনা বৃদ্ধি রোধ করার জন্য ধৈর্য ধরেছিল ইহুদিবাদীরা তাকে শহীদ করার পর গাজার অন্তত ৪১ হাজার মানুষকে তারা হত্যা করেছে এবং এখন লেবাননে হামলা চালিয়ে অনেককে তারা শহীদ করেছে।#
পার্সটুডে/এমবিএ/২৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।