জাতিসংঘে ইরানের উপ-রাষ্ট্রদূত:
'পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরানি নারীরা আরও ন্যায্য ভবিষ্যত গড়তে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ'
-
• ইরানি নারীরা আরও ন্যায্য ভবিষ্যৎ গড়তে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: জাতিসংঘে ইরানের উপ-রাষ্ট্রদূত:
পার্সটুডে - জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত এবং উপ-প্রতিনিধি নারীর অবস্থা সম্পর্কিত কমিশনের এক সভায় বলেছেন: "যদিও বাইরের কিছু দেশ চাপের মাধ্যমে ইরানি নারীদের অধিকার ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে, কিন্তু তারপরও তারা নিজেদের এবং তাদের সমাজের জন্য আরও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যত গড়ে তুলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।"
শুক্রবার নিউইয়র্কে নারীর অবস্থা সম্পর্কিত কমিশনের ৬৯তম অধিবেশনে ইরানের রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত উপ-প্রতিনিধি জাহরা এরশাদি বলেন: "একতরফা নিষেধাজ্ঞার নেতিবাচক প্রভাব এবং সর্বোচ্চ চাপ সত্ত্বেও, ইরানি নারীরা অগ্রগতির পথে হাঁটতে এবং তাদের সমাজ ও পরিবারকে আরো শক্তিশালী করতে বদ্ধ পরিকর।"
ইরনার বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, জাতিসংঘে ইরানের উপ-রাষ্ট্রদূত বলেছেন: "ইরানি নারীদের অধ্যবসায়, দৃঢ় সংকল্প এবং দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি তাদের জীবনের সকল ক্ষেত্রে অগ্রগতির মূল কারণ।" কিছু বিদেশী রাষ্ট্র চাপের মাধ্যমে তাদের অধিকার ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করলেও, ইরানি নারীরা নিজেদের এবং তাদের জাতির জন্য আরও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
ইসলামী বিপ্লবের পর ইরানি নারীদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে এরশাদি জোর দিয়ে বলেন: ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীদের ভূমিকাকে গুরুত্ব দেয়। আজ, ইরানি নারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ সদস্যদের ৩৩%, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ৪০%, উপ-বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ৩০%, স্বাস্থ্য কর্মীদের ৫০% এরও বেশি, সরকারি খাতের কর্মীদের ৪৫% এবং বেসরকারি খাতের ৭৪%।
জাতিসংঘে ইরানের উপ-প্রতিনিধির মতে, প্রতি বছর ৩০০,০০০ ইরানি গ্রামীণ ও যাযাবর শ্রেণীর নারী উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং ইরানে ৩২,০০০ অর্থনৈতিক উদ্যোগ নারীদের মালিকানাধীন। নতুন চাকরির ৪১ শতাংশের জন্য ইরানি নারীদের অবদান রয়েছে। বর্তমান সরকারে, ইসলামী প্রজাতন্ত্রের ব্যবস্থাপনা পদে ১৯০ জনেরও বেশি নারীকে নিয়োগ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মন্ত্রিসভায় চারজন নারীকে নিয়োগ (সরকারি মুখপাত্র এবং সড়ক ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী সহ), ১৪ জন নারী সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান, ১৩ জন উপমন্ত্রী, ১৭ জন উপদেষ্টা এবং সহকারী মন্ত্রী, ১১০ জন মহাপরিচালক, ১৭ জন গভর্নর এবং ১৬ জন মহিলা গভর্নর।
তার বক্তৃতা অব্যাহত রেখে, এরশাদি ফিলিস্তিনিদের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের চলমান অপরাধের কথা উল্লেখ করে বলেন: "গাজায় ইহুদিবাদী সরকারের বর্বর কর্মকাণ্ড গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের নির্মম অভিযান ছাড়া আর কিছুই নয়।" নিরীহ নারী ও শিশুদের ব্যাপক গণহত্যা, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ইচ্ছাকৃত ধ্বংস এবং ফিলিস্তিনিদের নৃশংসভাবে বাস্তুচ্যুত করার ফলে ফিলিস্তিনি নারী ও মেয়েদের তাদের মৌলিক মানবাধিকার ভোগ করতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং তাদের ক্ষমতায়নের যেকোনো সম্ভাবনা ধ্বংস হয়ে গেছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের উপ-রাষ্ট্রদূত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনাগুলিকে যথাযথভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার এবং এই অপরাধে জড়িত অপরাধীদের জবাবদিহিতা করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।