ইরানের শীর্ষ ১০টি জাদুঘর যা আপনাকে অবশ্যই দেখতে হবে (ছবিসহ)
(last modified Sun, 08 Jun 2025 10:30:14 GMT )
জুন ০৮, ২০২৫ ১৬:৩০ Asia/Dhaka
  • ইরানি জুয়েলারি জাদুঘরের বিখ্যাত ঘড়ি
    ইরানি জুয়েলারি জাদুঘরের বিখ্যাত ঘড়ি

পার্সটুডে: ইতিহাস ও সভ্যতার জন্মভূমি হিসেবে ইরান সবসময় বিশ্বের পর্যটক ও সংস্কৃতি প্রেমীদের নজর কেড়েছে। এখানকার জাদুঘরগুলো ইরানের সংস্কৃতি ও সভ্যতা তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই প্রতিবেদনে ইরানের ১০টি সেরা জাদুঘর সম্পর্কে সচিত্র বিবরণ তুলে ধরা হলো:

ইতিহাস ও সভ্যতার লীলাভূমি হিসেবে ইরান ইতিহাসবিদ ও ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য স্বর্গসদৃশ। এই সত্যিই ইরানে অসংখ্য জাদুঘর গড়ে উঠার কারণ। ইরানে প্রথম সরকারিভাবে 'জাতীয় জাদুঘর' প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০৩ বছরেরও বেশি সময় পার হয়েছে।

ইরানের জাতীয় জাদুঘর

১. জাতীয় জাদুঘর

ইরানের জাতীয় জাদুঘর প্রাচীনত্ব ও সংরক্ষিত নিদর্শনের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাদুঘর। এটি দুটি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত: প্রাচীন ইরান জাদুঘর এবং ইসলামি পুরাতত্ত্ব ও শিল্প জাদুঘর। প্রাচীন ইরান জাদুঘরে ১০ লাখ বছর থেকে ১২,০০০ বছরের পুরোনো নিদর্শন সংরক্ষিত আছে। কিছু নিদর্শন প্রস্তর যুগের।

গোলেস্তান প্রাসাদ জাদুঘর

২. গোলেস্তান প্রাসাদ জাদুঘর

ইরানের সবচেয়ে বিখ্যাত রাজকীয় প্রাসাদ হলো গোলেস্তান প্রাসাদ। এর প্রধান কারণ হলো, বহু ইরানি শাসক এই প্রাসাদকে তাদের রাজকীয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এই প্রাসাদের ইতিহাস সাফাভি রাজা শাহ আব্বাসের সময় পর্যন্ত প্রসারিত। সুন্দর স্থাপত্য ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব এই জাদুঘরকে অনন্য করে তুলেছে।

সাদাবাদ প্রাসাদ জাদুঘর

৩. সাদাবাদ প্রাসাদ জাদুঘর

গোলেস্তান প্রাসাদের কথা বললে ইরানের অন্যতম সেরা জাদুঘর সাদাবাদ প্রাসাদের নাম না নিলেই নয়। সাদাবাদ প্রাসাদ মূলত কাজার রাজবংশের গ্রীষ্মকালীন আবাসস্থল ছিল। পরে প্রথম পাহলভীর শাসনামলে এর চারপাশে অনেক ভবন নির্মিত হয় এবং দ্বিতীয় পাহলভির সময় এটি রাজার বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

রত্ন জাদুঘর

৪. রত্ন জাদুঘর (জুয়েল মিউজিয়াম)

রত্ন এমন এক জিনিস যা সবার নজর কাড়ে। শিল্প, শিল্পশিল্প ও প্রকৃতির মিশেলে তৈরি এই রত্নের সামনে কারওই করা কঠিন। মজার ব্যাপার হলো, আজ পর্যন্ত কোনো গবেষক বা বিশেষজ্ঞই রত্ন জাদুঘরের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করতে পারেননি। এই সংগ্রহশালার সবচেয়ে বিখ্যাত নিদর্শন হলো গোলাপি রঙের 'দরিয়া-ই-নূর' হীরা।

আধুনিক শিল্প জাদুঘর

৫. আধুনিক শিল্প জাদুঘর (মিউজিয়াম অফ কন্টেম্পোরারি আর্ট)

ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিল্প জাদুঘর হলো সমকালীন শিল্প জাদুঘর, যা ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বলা হয়, আধুনিক শিল্পের ক্ষেত্রে এটি বিশ্বের সেরা সংগ্রহশালাগুলোর একটি। পিকাসো, গোগাঁ, রেনয়ারের মতো বিশ্ববিখ্যাত শিল্পীদের অসংখ্য কাজ এখানে দেখা যায়।

পবিত্র প্রতিরক্ষা জাদুঘর

৬. পবিত্র প্রতিরক্ষা জাদুঘর (ডিফেন্স মিউজিয়াম)

পবিত্র প্রতিরক্ষা জাদুঘরে ইরান-ইরাক ৮ বছরের যুদ্ধের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন সংরক্ষিত আছে। এই জাদুঘরের বিভিন্ন বিভাগ গল্পের মতো করে সাজানো হয়েছে। 'প্রজাপতি হল' ছাড়া বাকি বিভাগগুলো বর্ণনামূলক। খোররমশাহরের মসজিদসহ কিছু অংশ পুনর্নির্মাণ করে দেখানো হয়েছে, যা দর্শকদের জন্য খুবই আকর্ষণীয়।

ইমাম রেজা (আ.) পবিত্র স্থান জাদুঘর

৭. ইমাম রেজা (আ.) পবিত্র স্থান জাদুঘর

মাশহাদ শহরে ইমাম রেজা (আ.)-এর পবিত্র মাজারের পাশে অবস্থিত এই জাদুঘর ইরানের সেরা জাদুঘরগুলোর একটি। আর্থিক ও আধ্যাত্মিক উভয় দিক থেকেই এই জাদুঘরের নিদর্শনগুলো অত্যন্ত মূল্যবান। ১৯৪৫ সালে এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে সংরক্ষিত অনেক নিদর্শনই দানের মাধ্যমে সংগ্রহণ করা হয়েছে 

পার্স জাদুঘর, শিরাজ।

৮. শিরাজের পার্স জাদুঘর

কারিম খান জান্দের সমাধির পাশে অবস্থিত এই জাদুঘর ইরানের প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ জাদুঘরগুলোর একটি। কাজার যুগে নির্মিত এই অষ্টকোণাকৃতি ভবনটি ইরানি স্থাপত্য ও অলংকরণের দারুণ এক নিদর্শন। পারস্য নকশায় সজ্জিত জাদুঘর ভবন দর্শকদের মুগ্ধ করে।

পানি জাদুঘর, ইয়াজদ।

৯. ইয়াজদ-এর পানি জাদুঘর

ইরানের মধ্যভাগের মালভূমি অঞ্চল পানির অভাবে ভুগেছে। তাই পানিকে কৌশলগত সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে সেচ ও পানিবণ্টন ব্যবস্থা উন্নত করা হয়েছিল। ইরানের মরু অঞ্চলে পানি ও ক্বানাত (জলবাহী সুড়ঙ্গ) ব্যবস্থার ইতিহাস, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতি জানতে হলে এই জাদুঘর অনন্য। এটি ইরানের পানিসংক্রান্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক। এটি একটি আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।

সঙ্গীত জাদুঘর,  ইস্ফাহান

 

১০. ইস্ফাহানের সঙ্গীত জাদুঘর

২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ইস্ফাহানের সঙ্গীত জাদুঘর ইরানের সেরা বেসরকারি জাদুঘরগুলোর একটি। এই অনন্য জাদুঘরে ৩০০টিরও বেশি বাদ্যযন্ত্র প্রদর্শিত হয় এবং দর্শকদেরকে সেগুলোর ব্যবহার ও সুর শোনানো হয়।#

পার্সটুডে/এমএআর/৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।