জাতিসংঘ পর্যটন সংস্থার রিপোর্ট
বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ২০ পর্যটন অঞ্চলের অন্যতম ইরান
-
বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ২০ পর্যটন অঞ্চলের অন্যতম ইরান
পার্স টুডে- ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিশটি পর্যটন কেন্দ্রের অন্যতম ছিল ইরান। জাতিসংঘের পর্যটন সংস্থা এক নতুন রিপোর্টে এ তথ্য জানিয়েছে।
পার্স টুডে জানিয়েছে ইরানের পর্যটন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও হস্তশিল্প বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আনুশিরৌয়ান মোহসেনি বান্দপি এই তথ্য উদ্ধৃত করে আরো বলেছেন, পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ইরান আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পর্যায়ে সবচেয়ে ভালো রেকর্ডের অধিকারী। আর এক্ষেত্রে ইরান স্থিতিশীল, আকর্ষণীয় ও বিচিত্রময় নানা পর্যটন-গন্তব্যস্থলের আদর্শ অঞ্চলে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরো বলেছেন, এই যে আদর্শ অবস্থান তা কেবল পর্যটন খাতে ইরানের নানা ধরনের সম্ভাব্য শক্তিমত্তারই নিদর্শন নয় একইসঙ্গে এই খাতে দেশটির বুদ্ধিদৃপ্ত নীতিনির্ধারণ, বেসরকারি খাতের সমন্বয়, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বিশ্বে ইরানের আসল চেহারার সঠিক বর্ণনার প্রয়োগের প্রমাণ।
উল্লেখ্য চারটি ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে ইরানের সৌন্দর্য ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে অপরূপ ও বর্ণিল হয়ে দেখা দেয়। বিশাল সাগরের জলরাশি বেষ্টিত উপকূল, সবুজ শ্যামল সুউচ্চ পাহাড়-পর্বত, চার ঋতুর চমৎকার আবহাওয়া, প্রাচীন ঐতিহাসিক নানা স্থান, ইরানের উন্নত সভ্যতা ও সংস্কৃতির সাক্ষ্য বহনকারী প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নানা নিদর্শন- এসবই বিশ্বের নানা অঞ্চলের পর্যটকদের দারুন ভাবে আকৃষ্ট করে। এখানে ছবিসহ ইরানের এ জাতীয় কয়েকটি আদর্শ পর্যটন কেন্দ্রের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরছি।
তাখতে জামশিদ বা পার্সেপোলিস

পার্সেপোলিস ইরানের ফারস প্রদেশের অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শন। পার্সেপোলিস প্রায় ২৫ শতাব্দী আগে নির্মিত। এই ভবন কমপ্লেক্সের অসাধারণ শিল্পকর্মগুলো বা মাস্টারপিসগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশাল মূর্তি, রাজধানী, শিলালিপি, কারুকার্যময় স্তম্ভ-শীর্ষ এবং পাথরের শিলালিপি।
কেশ্ম্ দ্বীপ

দক্ষিণ ইরানের কেশম দ্বীপের আশ্চর্যজনক দৃশ্যপট রয়েছে এবং এটি প্রাকৃতিক নানা বিস্ময়ে পরিপূর্ণ। কেশমের দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে তারা-উপত্যকা। এই উপত্যকার শিলাগুলো বেলেপাথর এবং মার্ল (কাদামাটিময় চুনাপাথর) দিয়ে তৈরি এবং বছরের পর বছর ধরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে অদ্ভুত আকারে পরিণত হয়েছে যা একটু কল্পনা করলেই প্রাণী, মুখ, হাত বা অন্যান্য অনেক জিনিসের মতো দেখাতে পারে।
চোঘা জানবিল

ইরানের খুজিস্তান প্রদেশে অবস্থিত চোঘা জানবিল জিগুরাত কমপ্লেক্স খ্রিস্টপূর্ব ১৩ শতক আগের। এটি কিউনিফর্ম শিলালিপিসহ পোড়ামাটির ইট দিয়ে নির্মিত। এমনকি ভবনের মাটির একাংশে একটি শিশুর পায়ের ছাপও দেখা যায়।
ববাক দুর্গ

ববাক দুর্গ ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে সমুদ্রপৃষ্ঠ-এর ২৩০০ থেকে ২৬০০মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এবং গভীর পার্বত্য উপত্যকা-বেষ্টিত।
নাসির আল-মোলক মসজিদ

শিরাজের নাসির আল-মোলক মসজিদ নিঃসন্দেহে ইরানের সবচেয়ে সুন্দর মসজিদগুলোর একটি। আপনি যখন এই মসজিদে প্রবেশ করবেন, তখন আপনি যেন রঙিন নক্শার জগতে হারিয়ে যাবেন। টাইলওয়ার্কের বিশেষ রঙের কারণে এই মসজিদটি 'গোলাপি মসজিদ ' নামেও পরিচিত।
আনজালি জলাভূমি

আনজালি জলাভূমি বা বিল উত্তর ইরানে অবস্থিত। এখানে নৌ-ভ্রমণে আপনি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখতে পাবেন, সেইসাথে এই বিলের অন্ধকার পানিতে ফুটে ওঠা জলপদ্ম আপনাকে করবে মুগ্ধ, আবসারাগুলোও (ঘর বা আশ্রয়স্থল যার ভিত্তি জলের মধ্যে তৈরি হয়েছে) এখানকার অন্যতম বাড়তি আকর্ষণ।
নকশ-ই জাহান

ইসফাহানের নকশ-ই জাহান স্কোয়ার একসময় পোলো খেলার জায়গা ছিল। এই স্কোয়ারের চারপাশে, আপনি অন্যান্য ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ যেমন আলী কাপু প্রাসাদ, ইমাম মসজিদ, শেখ লুতফুল্লাহ মসজিদ এবং ঐতিহ্যবাহী ইসফাহান বাজার ঘুরে দেখতে পারেন।
শুশতারের ঐতিহাসিক পানি-সেচ-প্রকল্প

ইরানের খুজেস্তান প্রদেশের শুশতারের ঐতিহাসিক পানি-সেচ-প্রকল্প খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর সেচ ব্যবস্থার একটি সিরিজ। এই সিস্টেমগুলোর কার্য-প্রক্রিয়া ঘনিষ্ঠভাবে দেখার আগে প্রাচীন ইরানী প্রকৌশলের জাঁকজমক দেখতে পিছনের পাহাড়ে আরোহণ করুন।
রুদখান দুর্গ

ইরানের গিলান প্রদেশের রুদখান দুর্গ হল একটি সুরক্ষিত সামরিক দুর্গ যা সাসানিয় সম্রাটদের যুগে নির্মিত এবং এর মূল নির্মাণের কয়েক শতাব্দী পরে পুনর্নির্মিত হয়েছিল। এটি সিড়ির "হাজার ধাপের দুর্গ" নামেও পরিচিত।
কাতালেখোর গুহা

কাতালেখোর গুহা ইরানের জাঞ্জান প্রদেশে অবস্থিত। এক শতাব্দীরও কম সময় আগে আবিষ্কৃত হয়েছিল এ গুহা। কিন্তু খননগুলো থেকে বোঝা যায় যে গুহাটি জুরাসিক (প্রায় সাড়ে বিশ থেকে সাড়ে ১৪ কোটি বছর আগের) বা প্রাগৌতিহাসিক যুগের।#
পার্স টুডে/এম এ এইচ/১৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।