সম্পর্ক বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে পেজেশকিয়ানের মধ্য এশিয়া সফর
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i154952-সম্পর্ক_বৃদ্ধির_লক্ষ্য_নিয়ে_পেজেশকিয়ানের_মধ্য_এশিয়া_সফর
পার্সটুডে- ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং পরামর্শ করার জন্য এই দুটি মধ্য এশিয়ার দেশ সফর করছেন।
(last modified 2025-12-10T11:09:50+00:00 )
ডিসেম্বর ১০, ২০২৫ ১৬:৩৪ Asia/Dhaka
  • ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান মধ্য এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফর করছেন।
    ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান মধ্য এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফর করছেন।

পার্সটুডে- ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং পরামর্শ করার জন্য এই দুটি মধ্য এশিয়ার দেশ সফর করছেন।

প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের উপ-রাজনৈতিক বিষয়ক কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেহেদী সানাই, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান কাজাখস্তান এবং তারপর তুর্কমেনিস্তান দুই দিনের সফরের ঘোষণা দিয়েছেন। সানাই এক্স সোশ্যাল নেটওয়ার্কে একটি বার্তা পোস্ট করে লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুই দিনের সফরে কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।

প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের উপ-রাজনৈতিক বিষয়ক কর্মকর্তা এই বার্তাটি অব্যাহত রেখে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট কাজাখস্তানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন। সানাই উল্লেখ করেছেন,  নথি স্বাক্ষর করা এবং একটি ব্যবসায়িক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করাও প্রেসিডেন্টের ভ্রমণের এজেন্ডায় থাকবে। তুর্কমেনিস্তানে শান্তি ও আত্মবিশ্বাস শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি পেজেশকিয়ান আয়োজক দেশগুলোর বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করবেন।

বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে ইরানের সহযোগিতা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে ইরানের সহযোগিতা সম্প্রসারণ কেবল অর্থনৈতিক ও জ্বালানি ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং বিদেশী হস্তক্ষেপ মোকাবেলা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার করার জন্যও এর কৌশলগত মাত্রা অপরিহার্য। মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক সম্প্রসারণ ইরানকে পূর্ব ও পশ্চিম এশিয়ার সংযোগ স্থাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থলে পরিণত করতে পারে।

অর্থনীতি ও বাণিজ্যের দিক থেকে মধ্য এশিয়ার দেশগুলো ইরানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও রপ্তানির সুযোগ প্রদান করে। ইরান মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর পারস্য উপসাগর এবং ওমান সাগরে তেল ও গ্যাস রপ্তানির জন্য একটি উপযুক্ত ট্রানজিট রুটও হতে পারে।

কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের সাথে ইরানের সম্পর্ক সম্প্রসারণের ফলে উজবেকিস্তান এবং কিরগিজস্তানের মতো অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর সাথে সহযোগিতার বিকাশ ঘটবে। মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে অবকাঠামো প্রকল্প, রেলপথ ও সড়ক, কৃষি এবং হালকা শিল্প বিকাশের জন্য ইরানের ভালো সক্ষমতা রয়েছে।

রাজনৈতিক ও নিরাপত্তার দিক থেকে কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের সাথে ইরানের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বিদেশী প্রভাব কমাতে একটি সাধারণ ফ্রন্ট তৈরি করতে সহায়তা করতে পারে। ইরান এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলো সন্ত্রাসবাদ, মাদক পাচার এবং সীমান্ত সংকটের মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সহযোগিতা এই হুমকিগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত ভিত্তি তৈরি করে।

সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে ইরান এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে গভীর ভাষাগত, ধর্মীয় এবং সভ্যতাগত সম্পর্কও রয়েছে, যা সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত এবং পর্যটন সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে। সাংস্কৃতিক ও বৈজ্ঞানিক সম্মেলন আয়োজন এবং ফার্সি ভাষাকে শক্তিশালী করার ফলে ইরানের বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং মধ্য এশিয়ার সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আরো গভীর বন্ধন তৈরি হবে।

সাংহাই সহযোগিতা সংস্থায় ইরানের সক্রিয় উপস্থিতি এবং ইউরেশিয়ান অর্থনৈতিক ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক মধ্য এশিয়ার পাশাপাশি ইউরেশিয়ার আঞ্চলিক সমীকরণে ইরানের অবস্থানকে শক্তিশালী করবে।

ইরানের প্রেসিডেন্টের কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান সফর মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে তেহরানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হবে। এই সফর কেবল এই অঞ্চলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে না, বরং মধ্য এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণে আরো সক্রিয় হওয়ার জন্য ইরানের দৃঢ় সংকল্পের একটি স্পষ্ট বার্তাও পাঠাবে।

পেজেশকিয়ানের কাজাখস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান সফরের মধ্য দিয়ে এটা  দেখায় যে ইরান মধ্য এশিয়ার সাথে বহু-স্তরের সম্পর্ককে আরো গভীর করতে চাইছে; এমন সম্পর্ক যা নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক প্রভাব বৃদ্ধি এবং ইউরেশিয়ায় ইরানের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করতে পারে। এই সফর মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সাথে ইরানের সম্পর্কের একটি নতুন পর্বের সূচনা হতে পারে, যার পরিণতি অঞ্চলের বাইরে সমগ্র ইউরেশিয়ান অঞ্চলকে প্রভাবিত করবে।#