ইরানে সংঘটিত ভূমিকম্পের সর্বশেষ অবস্থা: সর্বোচ্চ নেতা ও প্রেসিডেন্ট যা বললেন
(last modified Tue, 14 Nov 2017 11:56:34 GMT )
নভেম্বর ১৪, ২০১৭ ১৭:৫৬ Asia/Dhaka

গত রবিবার রাতে ইরাক এবং ইরানের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তবর্তী প্রদেশগুলোতে ৭.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ জন নিহত এবং আহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। দুঃখজনক এ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর আজ ইরানে এক দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী এক শোকবার্তায় ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের প্রতি সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে তিনি অসহায় মানুষদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য ইরানের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

ভূমিকম্পে আহতদের কয়েকজন

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা তাঁর শোকবার্তায় বলেছেন, “সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুশৃঙ্খল ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্গত মানুষদের উদ্ধারে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে যাতে হতাহতের সংখ্যা আর বাড়তে না পারে।”

তিনি বলেন, “উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় সেনাবাহিনী, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীকে কাজে লাগাতে হবে। একইসঙ্গে সরকারের সব সামরিক ও বেসামরিক বিভাগকে দুর্গত মানুষের সেবায় এগিয়ে যেতে হবে।”

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা

ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন আব্দুল হোসেন মো'য়েজ্জির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ত্রাণ তৎপরতা দেখভাল করার জন্য এরই মধ্যে দুর্গত এলাকায় পৌঁছে গেছেন। কেরমানশাহে ভূমিকম্প আঘাত হানার পরপরই সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ ও কর্মকর্তারা দুর্গত মানুষের সহায়তায় একযোগে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জাফারি এবং সেনাবাহিনীর প্রধান আব্দুর রহিম মুসাভি দুর্যোগ কবলিত এলাকায় ছুটে গেছেন এবং উদ্ধার অভিযান পর্যবেক্ষেণ করছেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানিও ত্রাণ তৎপরতার অবস্থা খোঁজখবর নেয়ার জন্য আজ কেরমানশাহের ভূমিকম্প কবলিত এলাকা সফরে গেছেন। সেখানে পৌঁছে তিনি জনতার উদ্দেশ্যে বলেছেন, “এই বিপর্যয়ের শিকার হয়ে যেসব মানুষ আহত হয়েছেন ইরানের জনগণের পক্ষ থেকে আমি তাদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি এবং যারা নিহত হয়েছেন সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি ইরানের জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি কারণ প্রাথমিক সহযোগিতা জনগণের পক্ষ থেকেই এসেছে।"

এদিকে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশের শীর্ষ কর্মকর্তা ও নেতৃবৃন্দ শোকবার্তা পাঠিয়ে কিংবা টেলিফোন করে ইরানের সরকার ও জনগণের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় সহায়তায় এগিয়ে আসতে তাদের প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছেন।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ

ওদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, অনেক দেশই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। যেসব দেশ, সংস্থা ও ব্যক্তি সমবেদনা জানিয়েছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন জারিফ।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, সবসময়ই বন্যা, ঝড় ও ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা যুদ্ধের মতো যে কোনো বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে  ইরানের সরকার ও জনগণ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দুর্গতদের পাশে এসে দাঁড়ায়। কেরমানশাহে সংঘটিত ভূমিকম্পেও ইরানের সরকার ও জনগণ যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তা পারস্পরিক সহযোগিতা ও সংহতির বিরাট দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।#

পার্সটুডে/মো. রেজওয়ান হোসেন/১৩

 

ট্যাগ