ইরানের প্রেসিডেন্টের তুরস্ক সফর: বাইরের দেশগুলোর জন্য রয়েছে বিশেষ বার্তা
আঙ্কারায় ইরান ও তুরস্কের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের পঞ্চম শীর্ষ বৈঠক বিবৃতি প্রকাশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে বার্ষিক বাণিজ্য তিন হাজার কোটি ডলারে নেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়েছে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার ওপর তাগিদ করা হয়েছে। ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার কঠোর একতরফা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার একই সময়ে তেহরান ও আঙ্কারার মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সহযোগিতা থেকে বোঝা যায় শত বাধা ও প্রতিকূলতা সত্বেও তুরস্ক সরকার ইরানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বার্ষিক বাণিজ্য তিন হাজার কোটি ডলারে নেয়ার প্রতিশ্রুতি থেকে আরো প্রমাণিত হয়েছে তুরস্ক ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার একতরফা নিষেধাজ্ঞা মানবে না।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি সম্প্রতি তেহরানে তুর্কি পার্লামেন্ট স্পিকার বিন আলি ইয়ালদিরিমকে দেয়া সাক্ষাতে ইরান বিরোধী মার্কিন অন্যায় নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় তুরস্কের প্রেসিডেন্টের ভূমিকার ব্যাপক প্রশংসা করে বলেছেন, তার দেশের সঙ্গে সহযোগিতা বিস্তারে তুর্কি সরকারের আগ্রহকে আমরা স্বাগত জানাই।
রাজনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি ছাড়াও ইরান ও তুরস্কের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিস্তারে যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে সেটা হচ্ছে এ দুই দেশের অভ্যন্তরে ও সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা। বিষয়টি যৌথ বিবৃতিতেও উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিবৃতির অন্য অংশে বলা হয়েছে, দু'দেশের জনগণের স্বার্থে সীমান্তে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও বেআইনি কর্মকাণ্ডে তৎপর গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে যৌথভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।
ইরান ও তুরস্ক পশ্চিম এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী ভ্রাতৃপ্রতিম দুটি মুসলিম দেশ। স্থিতিশীল দেশ হিসেবে ইরান ও তুরস্ক মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছে। এ দুই দেশ মনে করে পশ্চিম এশিয়ার নিরাপত্তার সঙ্গে তাদেরও নিরাপত্তা জড়িয়ে আছে। এ কারণে ইরান ও তুরস্ক এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোতে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছে। সিরিয়া সংকট নিরসনে রাশিয়ার সঙ্গে ইরান ও তুরস্কের সহযোগিতা থেকে পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাদের আন্তরিকতার বিষয়টি ফুটেছে এবং এখন পর্যন্ত তাদের প্রচেষ্টা সফল। কাজাখস্তানে অনুষ্ঠিত বৈঠক সিরিয়া সংকট সমাধানের পথকে আরো সহজ করে দিয়েছে। সিরিয়ার সংবিধান বিষয়ক কমিটির বৈঠক আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত স্টিফেন দ্যা মিস্তোরা বলেছেন, সিরিয়ার সংবিধান বিষয়ক কমিটির কার্যক্রমের ব্যাপারে ইরান, তুরস্ক ও রাশিয়ার প্রচেষ্টা ব্যাপক প্রশংসার দাবি রাখে।
পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইরান ও তুরস্ক যেভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তা বিদেশিদের জন্য এই বার্তায় পৌঁছে দিয়েছে যে, এ অঞ্চলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার ক্ষমতা বাইরের কোনো দেশের নেই। এ কারণে ইরানের প্রেসিডেন্টের তুরস্ক সফরকে অনেক গুরুত্ব বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। #
পার্সটুড/রেজওয়ান হোসেন/২১
- খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন