মার্কিন তেল নিষেধাজ্ঞা ইরানি জাতির বিরুদ্ধে চরম শত্রুতার বহিঃপ্রকাশ: তেলমন্ত্রী
(last modified Sat, 27 Apr 2019 11:50:50 GMT )
এপ্রিল ২৭, ২০১৯ ১৭:৫০ Asia/Dhaka
  • মার্কিন তেল নিষেধাজ্ঞা ইরানি জাতির বিরুদ্ধে চরম শত্রুতার বহিঃপ্রকাশ: তেলমন্ত্রী

ইরানের তেলমন্ত্রী বিজান জাঙ্গানেহ বলেছেন, মার্কিন তেল নিষেধাজ্ঞা ইরানি জাতির বিরুদ্ধে চরম শত্রুতার বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, ইরানের তেল বিক্রি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার মার্কিন স্বপ্ন কখনোই পূরণ হবে না।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের তেল বিক্রি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার ব্যাপারে আমেরিকার হুমকি এবারই প্রথম নয়। পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেন। গত বছরের নভেম্বর তিনি ইরানের তেল বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে বিশ্বের দেশগুলোর পক্ষ থেকে প্রচণ্ড বিরোধিতার সম্মুখীন হন। ফলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, তুরস্ক, গ্রিস ও ইতালির ওপর থেকে ছয় মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। ওই আটটি দেশকে ছয় মাসের মধ্যে ইরান বাদে অন্য কোনো দেশের কাছ থেকে তেল কিনতে বলা হয়।

মাইক পম্পেও

ছয় মাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, "ইরানি তেলের বৃহৎ ক্রেতাদের জন্য দেয়া ছাড় আর নবায়ন করা হবে না এবং এর মাধ্যমে ইরানের তেল বিক্রি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হবে।"

তিনি বলেন, "সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্ববাজারে ইরানের তেলের ঘাটতি পূরণ করবে।" মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও'র এ বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন ইরানের তেলমন্ত্রী জাঙ্গানেহ। তিনি বলেন, "আমেরিকা ও তার মিত্রদের এটা জেনে রাখা উচিত ইরানের বিরুদ্ধে তেল নিষেধাজ্ঞার পরিণতিতে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।" ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইয়্যেদ আব্বাস মুসাভিও বলেছেন, ইরানের সরকার ও জাতি কয়েকটি দেশের শত্রুতা কখনো ভুলে যাবে না। তিনি বলেন, ইরানের তেলের বাজার কেড়ে নেয়ার সুযোগ কাউকে দেয়া হবে না।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের ইসলামি সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেও বাস্তবে তারা ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুস ওগ্লু সম্প্রতি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞার প্রধান লক্ষ্য ইরানের জনগণ তাই এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যুদ্ধবিরোধী সংগঠনের কর্মকর্তা মেদিয়া বেঞ্জামিন এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, আমেরিকার ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা খুবই অন্যায় কারণ এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় খাদ্য ও ওষুধও রয়েছে যার ফলে ভোগান্তির মুখে পড়েছে জনগণ।

ওয়াশিংটনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে ইরানের সরকার ও জনগণের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করা। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী সম্প্রতি শ্রমিকদের এক সমাবেশে তেল বিক্রি বন্ধে মার্কিন প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি সাহস করেন তাহলে তারা তেল বিক্রি করতে পারবে এবং আমেরিকা কিছুই করতে পারবে না। তিনি বলেন আমেরিকা হয়তো এটা ভুলে গেছে ইরানি জাতি কখনোই মার্কিন চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না।

যাইহোক, অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায় সামরিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও নিরাপত্তাগত দিক থেকে আমেরিকা ইরানের কাছে পরাজিত হয়েছে। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৭

 

 

ট্যাগ