পরমাণু ইস্যুতে আমেরিকার আরেকটি পদক্ষেপ: ইরানের কোনো অধিকারই থাকবে না
(last modified Sat, 04 May 2019 13:14:29 GMT )
মে ০৪, ২০১৯ ১৯:১৪ Asia/Dhaka
  • মাইক পম্পেও
    মাইক পম্পেও

বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা অত্যন্ত গুরুত্ব। কিন্তু এই চুক্তিকে ধ্বংস করার জন্য আমেরিকা গত ৮মে এ থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বছর দুই দফায় ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইরানের পরমাণু কার্যক্রমের ব্যাপারে তিনটি বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া হবে না এবং বাকি বিষয়ে ছাড়ের ক্ষেত্রে ১৮০ দিনের পরিবর্তে ৯০ দিন কমিয়ে আনা হয়েছে। আজ শনিবার থেকে ইরানের বুশহর পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র উন্নয়ন কিংবা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ও ভারি পানি ইরানের বাইরে স্থানান্তরের সঙ্গে জড়িত দেশগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, বর্তমান নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইরানের পরমাণু প্লান্টে উৎপাদিত ভারি পানি মজুদ করার অনুমতি দেয়া হবে না।

বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, পরমাণু সমঝোতায় ইরানকে ৩.৬৭ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমেরিকার সাম্প্রতিক নানা পদক্ষেপের অর্থ হচ্ছে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কোনা অধিকারই থাকবে না। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির শুরুতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন এখনো ইরানের তৎপরতাকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য হুমকি বলে মনে করে এবং ইরান যাতে পরমাণু অস্ত্র অর্জন করতে না পারে সেজন্য তেহরানের ব্যাপারে ওয়াশিংটন কঠোর নীতি নিয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আমেরিকা এ বিবৃতি প্রকাশের মাধ্যমে মূলত পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত দেশগুলোকে টার্গেট করেছে। এ ছাড়া বুশহর পরমাণু বিদ্যুত প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত রাশিয়াকেও চাপের মুখে রেখেছে। সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ও ভারি পানি যাতে ওমানে যেতে না পারে সে পথও বন্ধ করার চেষ্টা করছে আমেরিকা। এ বিবৃতির ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও দাবি করেছেন, "ইরান যাতে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে না পারে সেজন্যই দেশটির ওপর এসব সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে।"

মাইক পম্পেও এমন সময় এ বক্তব্য দিয়েছেন যখন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আইএইএ ১৪টি প্রতিবেদনে বলেছে ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির কোনো চেষ্টা করছে না। আমেরিকার এসব পদক্ষেপ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবেরও লঙ্ঘন। পরমাণু ইস্যুতে ইরানের সঙ্গে অন্য দেশের সহযোগিতা বন্ধ করতে আমেরিকা বল প্রয়োগের নীতি গ্রহণ করেছে।

প্রকৃতপক্ষে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও গত বছর যে ১২টি প্রস্তাব তুলে ধরেছিলেন তা বাস্তবায়নে এখন তিনি নিজেই তৎপরতা শুরু করেছেন। অর্থাৎ তিনি ইরানের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করছেন। বাস্তবতা হচ্ছে, আইএইএর প্রতিবেদনের ওপর আমেরিকার কোনো আস্থা নেই এবং কেবল ইসরাইলের দেয়া মিথ্যা দাবির ভিত্তিতে ইরান বিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু তারপরও ইরান আমেরিকার বেআইনি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।#   

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৪

 

 

ট্যাগ