বাতিল হতে পারে পরমাণু সমঝোতা: ইরানের পাল্টা পদক্ষেপে দুশ্চিন্তায় পম্পেও
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i70951-বাতিল_হতে_পারে_পরমাণু_সমঝোতা_ইরানের_পাল্টা_পদক্ষেপে_দুশ্চিন্তায়_পম্পেও
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বছরের ৮মে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেলেও ইরানের পক্ষ থেকেও একই পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে বলে দেশটির কোনো কোনো কর্মকর্তা আশঙ্কা করতেন।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
জুন ০৪, ২০১৯ ১৭:৪১ Asia/Dhaka
  • মাইক পম্পেও
    মাইক পম্পেও

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বছরের ৮মে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেলেও ইরানের পক্ষ থেকেও একই পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে বলে দেশটির কোনো কোনো কর্মকর্তা আশঙ্কা করতেন।

সর্বশেষ মন্তব্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও পরমাণু সমঝোতা বাতিল হয়ে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অথচ তিনি পরমাণু সমঝোতা থেকে তার দেশের বেরিয়ে যাওয়া এবং ইরানের বিরুদ্ধে একের পর এক অন্যায় নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়ার বিষয়টিকে এড়িয়ে যান। সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ’র সর্বশেষ প্রতিবেদন এ আশঙ্কা তৈরি করেছে যে, ইরান পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ব্যাপারে হোয়াইট হাউজের উদ্বেগ প্রশমিত হয়নি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন সময় এ বক্তব্য দিলেন যখন আইএইএ’র মহাসচিব ইউকিয়া আমানো গত শুক্রবার বলেছেন, তেহরান এখনো পরমাণু সমঝোতার আওতায় নিজের পরমাণু কর্মসূচি পরিচালনা করছে।

পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়ন না করা যদি খারাপ কিছু হয়ে থাকে তাহলে কোনো কারণ ছাড়াই কেন আমেরিকা এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেল সেটাই এখন প্রশ্ন। এ ছাড়া, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য পরমাণু সমঝোতা যদি একমাত্র কার্যকর পন্থা হয়ে থাকে তাহলে ওয়াশিংটন কেন এ থেকে বেরিয়ে গেল? অথচ তেহরান প্রথম থেকেই এ চুক্তি মেনে চলছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও হয়তো এটা ভুলে গেছেন যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অজুহাত হিসেবে বলেছিলেন, এ চুক্তির মাধ্যমে ওয়াশিংটনের লক্ষ্য পূরণ হয়নি।  অর্থাৎ ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে বলে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ১২টি অযৌক্তিক দাবি তুলে ধরেন যার মধ্যে রয়েছে তিনি ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার কথা বলেন। অথচ পরমাণু সমঝোতার প্রতি সমর্থন জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।

আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার এক বছর পরও ইউরোপ মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় চলতি বছর ৮মে ইরানও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে পরমাণু সমঝোতার ২৬ ও ৩৬ নম্বর ধারা বাস্তবায়ন না করার ঘোষণা দেয়। এরপরই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও পরমাণু চুক্তি বাতিল হওয়ার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন। ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা জানিয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী তারা এতদিন ৩.৬৭ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করলেও এর পরিমাণ চারগুণ বাড়িয়ে দেয়া হবে। তবে ইরান এ কাজ সম্পাদনের জন্য ইউরোপকে দুই মাস সময় বেধে দিয়েছে যাতে তারা এ সময়ের মধ্যে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিতে পারে।

যাইহোক, মার্কিন সরকার এমনকি ইউরোপও ভেবেছিল মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্বেও ইরান পরমাণু চুক্তি মেনে চলবে। কিন্তু এখন তারা বুঝতে পেরেছে ইরান সম্পর্কে তারা যা ভেবেছিল তা সঠিক নয়। এ কারণেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরমাণু সমঝোতা বাতিল হওয়ার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।#    

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।