পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালীর নিরাপত্তা রক্ষায় ইরানের অপরিহার্য ভূমিকা
-
রিয়ার অ্যাডমিরাল আলীরেজা তাংসিরি
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র নৌশাখার কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আলীরেজা তাংসিরি বলেছেন, হরমুজ প্রণালী দিয়ে যেকোনো নৌযান স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারে এবং ইরান এই প্রণালীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। তিনি দক্ষিণ ইরানের বন্দরআব্বাসে প্রতিরক্ষা বিষয়ক এক শিল্প প্রদর্শনী পরিদর্শনের সময় এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, যেসব বহিঃশক্তি পারস্য উপসাগরে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে এ অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করবে ইরান তাদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
ইরান সব সময় মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা সেনা উপস্থিতির বিরোধিতা করে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে পারস্য উপসাগরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি মাজিদ তাখতে রাভানচি এক বক্তব্যে বলেছেন, পারস্য উপসাগরের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব এর তীরবর্তী দেশগুলোর এবং এই জলপথে বহিঃশক্তির উপস্থিতি এ অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে যা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।

তবে দুঃখজনকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের কিছু আরব দেশ এ অঞ্চলে পশ্চিমা শক্তিগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে পারস্য উপসাগরে বিদেশি হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দিয়েছে। এসব দেশের কারণে আমেরিকা পারস্য উপসাগরে নিজের উপস্থিতির পক্ষে বড় গলায় কথা বলতে পারছে।
কিন্তু ইরান শুরু থেকেই এ অঞ্চলে আমেরিকার সামরিক উপস্থিতির কঠোর বিরোধিতা করে এসেছে। আন্তর্জাতিক আইন মেনে পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালীর নিরাপত্তা রক্ষার সব ধরনের আয়োজনও সম্পন্ন করেছে তেহরান। কাজেই এখন এ অঞ্চলের কথিত নিরাপত্তা রক্ষার নামে আমেরিকার নেতৃত্বে ব্রিটেন, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব যে সামরিক জোট গঠন করতে যাচ্ছে তা যদি ইরানের স্বার্থকে হুমকিগ্রস্ত করে তাহলে তেহরান তা কোনোভাবেই সহ্য করবে না। ফলে উদ্ভুত যেকোনো পরিস্থিতির জন্য এসব দেশকে দায়ী থাকতে হবে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি সম্প্রতি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরনের সঙ্গে এক টেলিফোনালাপে বলেছেন, ইরান শত শত বছর ধরে পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালির নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও এ অঞ্চলের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব ইরানের হাতেই থাকবে।
ইরান সম্প্রতি মার্কিন গোয়েন্দা ড্রোন ভূপাতিত করে এবং আইন লঙ্ঘনকারী ব্রিটিশ তেল ট্যাংকার আটক করে পারস্য উপসাগরের নিরাপত্তা রক্ষায় নিজের সক্ষমতার জানান দিয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ এ সম্পর্কে বলেছেন, “পারস্য উপসাগরের সঙ্গে আমাদের ১,৫০০ মাইল সীমান্ত রয়েছে বলেই এই উপসাগরের নাম পারস্য উপসাগর। এটি মেক্সিকো উপসাগর নয় বরং এটি ইরানের সীমান্তবর্তী একটি সাগর।
সার্বিকভাবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানকে বাদ দিয়ে কারো পক্ষে পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জারিফ তার তিন ইউরোপীয় দেশ সফরে এ বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছেন।#
পার্সটুডে/এমএমআই/২১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।