আর তো বাকি নেই! "ইরানবিরোধী নিষেধাজ্ঞা চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছেছে": মার্কিন অর্থমন্ত্রী
(last modified Mon, 23 Sep 2019 15:02:40 GMT )
সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯ ২১:০২ Asia/Dhaka
  • মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানুচিন
    মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানুচিন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির নীতি গ্রহণ করেছেন। অনেক বাগাড়ম্বর ও হুমকি ধমকির পর তিনি এখন ইরানবিরোধী নীতির ব্যর্থতার কথা স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছেন।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানুচিন বলেছেন, "ইরানবিরোধী নিষেধাজ্ঞা চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছেছে।" একইসঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের সম্ভাবনার ব্যাপারে তিনি বলেছেন, এ বিষয়টিও আলোচনার টেবিলে রয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, গত বছর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেওর ১২ দফা প্রস্তাব বাস্তবায়নের দাবিসহ বিভিন্নভাবে ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির মার্কিন চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট সর্বশেষ ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন তাও পুরানো নিষেধাজ্ঞারই পুনরাবৃত্তি মাত্র।

প্রকৃতপক্ষে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যতটুকু সাধ্য আছে ততখানি নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছেন ইরানের বিরুদ্ধে। অর্থাৎ নিষেধাজ্ঞা আরোপের আর কিছুই বাকি নেই। এ অবস্থায় সরাসরি নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর  মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখন অন্য দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সব দিক দিয়ে ইরানকে চাপে ফেলার চেষ্টা করছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত বছর ৮মে নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব লঙ্ঘন করে একতরফাভাবে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে আগস্ট ও নভেম্বরে দুই দফায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এ নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য ইরানের তেল বিক্রি শূন্যে নামিয়ে আনা। কিন্তু তারপরও আমেরিকা ইরানকে নতজানু করতে পারেনি। অর্থনৈতিকভাবে ইরানকে পঙ্গু করার চেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ার পর এখন মার্কিন সরকার আন্তর্জাতিক সমাজকে ইরানের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ভিত্তিহীন অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে বলেছেন, ওয়াশিংটন ইরানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। তিনি এবিসি টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই সম্প্রতি সৌদি আরবের দু'টি তেল স্থাপনায় হামলার ঘটনায় ইরানকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি আশা করেন অন্তত এই ইস্যুতে বিশ্বের দেশগুলো ইরানের ওপর মার্কিন চাপ সৃষ্টির নীতির প্রতি সমর্থন দেবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন সময় এসব কথা বলেছেন, যখন সৌদিআরব ও দখলদার ইসরাইলসহ হাতে গোনা আরো কয়েকটি দেশ ছাড়া আর কেউ মার্কিন নীতির প্রতি সমর্থন জানায়নি। এমনকি চুক্তিতে সইকারী দেশগুলো ও ইউরোপও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে ফের পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। মার্কিন বিরোধিতার আরেকটি দৃষ্টান্ত হচ্ছে, পারস্য উপসাগর অঞ্চলে নিরাপত্তার নামে আমেরিকা ইরান বিরোধী যে জোট গঠনের চেষ্টা করছে তাতে মাত্র পাঁচটি দেশ ছাড়া আর কেউই সমর্থন জানায়নি। মার্কিন সিনেটর বেন কার্ডিন বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানকে কোণঠাসা করতে গিয়ে বিশ্বে মার্কিন সরকারকে কোণঠাসা করে ফেলেছেন এবং পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে তুলেছেন। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিও বলেছেন, পরমাণু সমঝোতা লঙ্ঘন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির মূল কারণ। তাই বর্তমান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও আন্তর্জাতিক সমাজকে ইরানের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর যে চেষ্টা চালাচ্ছেন তাতে তিনি সফল হবেন না বলেই পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। বিশ্বের দেশগুলো মার্কিন নীতির প্রতি সমর্থন দিচ্ছে না। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৩

 

 

ট্যাগ