পাক প্রধানমন্ত্রীর ইরান সফর: আঞ্চলিক উত্তেজনা নিরসনে দু'দেশের গুরুত্বারোপ
(last modified Mon, 14 Oct 2019 12:37:00 GMT )
অক্টোবর ১৪, ২০১৯ ১৮:৩৭ Asia/Dhaka
  • সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাত
    সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাত

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী তেহরান সফরকারী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দেয়া সাক্ষাতে বলেছেন, ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কেবল সরকারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং এ সম্পর্ক দু'দেশের জনগণ পর্যায়ে রয়েছে।

পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তান সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে পশ্চিম এশিয়ার অবস্থানকে অত্যন্ত বিপজ্জনক হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ইরাক ও সিরিয়ায় তৎপর সন্ত্রাসীদের প্রতি কয়েকটি দেশের সমর্থন এবং ইয়েমেনে যুদ্ধ ও রক্তপাতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পশ্চিম এশিয়ায় গত কয়েক বছরের ঘটনাবলী বিশেষ করে আমেরিকা, সৌদি আরব ও ইসরাইলের সমর্থনপুষ্ট দায়েশ সন্ত্রাসীদের অপরাধযজ্ঞ এবং ইয়মেনের বিরুদ্ধে চলমান জুলুম-অত্যাচার থেকে বোঝা যায় হত্যা, ধ্বংস, নিরাপত্তাহীনতা ও শরণার্থী সংকট ছাড়া আর কোনো ফল বয়ে আসেনি। এ সংকট অবসানের জন্য প্রয়োজন তাদের ইচ্ছাশক্তি যারা প্রক্সি যুদ্ধের মাধ্যমে এ অঞ্চলে উত্তেজনা জিইয়ে রেখেছে।

ইরান ও পাকিস্তান মনে করে, আলোচনার মাধ্যমে আঞ্চলিক যেকোনো সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, "তার তেহরান সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে আঞ্চলিক উত্তেজনা নিরসনে চেষ্টা চালানো।" ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, "প্রতিবেশী সব দেশের অংশগ্রহণে আমরা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এ লক্ষ্যে  ইরান এরই মধ্যে ইয়েমেন যুদ্ধের অবসান ও পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছে। ইয়েমেন ইস্যুতে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা, জরুরি মানবিক ত্রাণ পাঠানো, ইয়েমেনিদের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সংলাপ এবং সব পক্ষের অংশগ্রহণে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে ইরান। তেহরান এখনো ওই চারটি প্রস্তাব বাস্তবায়নে প্রস্তত রয়েছে।

পাক প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া সাক্ষাতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতাও এ বিষয়ে ইরানের অবস্থান তুলে ধরেছেন।

তিনি ইয়েমেনের ব্যাপারে ইরানের পক্ষ থেকে উত্থাপিত ওই চারটি প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, "যুদ্ধের অবসান ঘটলে এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।" তিনি বলেন, "প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এ অঞ্চলের অনেক দেশ আমেরিকার পদাঙ্ক অনুসরণ করছে এবং ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন নীতি বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।" আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী আরো বলেন, "ইসলামি ইরান কখনো কোনো যুদ্ধ শুরু করেনি কিন্তু কেউ যদি ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের দুঃসাহস দেখায় তাহলে তাদেরকে অনুতপ্ত হতে হবে।"

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরান সবসময়ই এ অঞ্চলে উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ইরান মনে করে কেবল সংলাপের মাধ্যমেই আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও দেশগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। বিশেষ করে যত দ্রুত সম্ভব ইয়েমেন যুদ্ধের অবসান ঘটা জরুরি। এ অবস্থায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ইরান সফর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। #   

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৪

ট্যাগ