ইরানের প্রযুক্তিমন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণ ও আমেরিকার হাস্যকর দাবি
(last modified Sat, 23 Nov 2019 11:09:34 GMT )
নভেম্বর ২৩, ২০১৯ ১৭:০৯ Asia/Dhaka
  • মোহাম্মাদ জাওয়াদ অযারি জাহরোমি
    মোহাম্মাদ জাওয়াদ অযারি জাহরোমি

মার্কিন সরকার ইরানে সম্প্রতি গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের প্রতি সমর্থন দেয়ার পাশাপাশি নানা অজুহাতে দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে চলেছে।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় এবার ইরানের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ অযারি জাহরোমিকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরানে গত কয়েক দিনে ইন্টারনেটের ওপর ব্যাপক মাত্রায় সীমাবদ্ধতা আরোপ করার কারণে মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানুচিন এ ব্যাপারে বলেছেন, "বহিঃর্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী ও বার্তা প্রেরণকারী বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর সীমাবদ্ধ আরোপ করার কারণেই ইরানের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।"

মার্কিন অর্থমন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, আমেরিকায় মোহাম্মাদ জাওয়াদ অযারি জাহরোমির সমস্ত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও গতকাল টুইট বার্তায় বলেছেন, "ইরানের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করার কারণেই দেশটির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।" 

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন সরকার এ জন্য চিন্তিত যে,  গত বেশ কিছুদিন ধরে ইরানে ইন্টারনেটের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ থাকায় সেদেশে গোলযোগ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ হাত ছাড়া হয়ে গেছে। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার এক টুইটবার্তায় ইরানে আপেল মোবাইল ও গোগল কিংবা মাইক্রো সফট্ ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ  দেয়ার কথা জানান যাতে ইরানিরা ইন্টারনেট সুবিধা পেতে না পারে। অথচ বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে ইরান সরকার নিজেই ইন্টারনেটের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করায় এখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানি জনগণের অধিকার রক্ষার কথা বলছেন যা খুবই হাস্যকর।

গত বছর এপ্রিলে মার্কিন অর্থমন্ত্রণালয় ইরানের ইন্টারনেট পরিসেবার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে বেশ কিছু পদক্ষেপ নয়। মার্কিন সরকার ইরানের জনগণের প্রতি সংহতি ও সমর্থন জানাচ্ছে। অথচ তারাই ওষুধসহ অন্যান্য বহু জরুরি পণ্য সামগ্রী আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে যার ফলে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছে ইরানের জনগণ।

তবে, জ্বালানি তেলের মূল্য সংস্কার ঘোষণার পর সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ঠেকাতে ইরান সরকার ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ব্যাপক মাত্রায় সীমাবদ্ধতা আরোপ করার কারণে পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত হয়ে এসেছে। বর্তমানে অন্তত ১০টি প্রদেশে ইন্টারনেট পরিসেবা ফের চালু করা হয়েছে। ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্তে আমেরিকা হৈ চৈ শুরু করে দিয়েছে এবং ইরানের জনগণের প্রতি সমর্থন দিয়েছে। অথচ এই আমেরিকা ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে ওষুধসহ অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। এ অবস্থায় ইরানের জনগণ কখনোই ওয়াশিংটনের প্রতারণার ফাঁদে পা দেবে না।#         

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৩

ট্যাগ