মার্কিন সরকারের দানবীয় চেহারা: করোনা ছড়ানোর সময়ও ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা!
(last modified Thu, 19 Mar 2020 11:40:23 GMT )
মার্চ ১৯, ২০২০ ১৭:৪০ Asia/Dhaka
  • মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর এই হাসি কতদিন থাকবে?
    মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর এই হাসি কতদিন থাকবে?

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ওপর আবারো নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন সরকার।

তেহরানের পরমাণু কর্মসূচিতে সহযোগিতার দায়ে ইরানের পাঁচ পরমাণু বিজ্ঞানী ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানিয়েছে মার্কিন বাণিজ্য-কর্তৃপক্ষ।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানিয়েছেন, ইরানের পেট্রোক্যামিকেল খাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ লেনদেনে জড়িত থাকায় দেশটির তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ওয়াশিংটন কালো-তালিকাভুক্ত করেছে!

ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি সামাজিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ও এর পরিচালকরাও কালো-তালিকার মধ্যে পড়েছে বলে পম্পেও জানান। এ প্রতিষ্ঠানটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা কিছু কোম্পানিতে বিনিয়োগে জড়িত ছিল বলে পম্পেও উল্লেখ করেন।

বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ইরানের ওপর থেকে একতরফা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন ওয়াশিংটনের প্রতি জোর আহ্বান জানাচ্ছে তখন নতুন করে এসব নিষেধাজ্ঞার খবর এলো। 

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে চীন ও রাশিয়া এরই মধ্যে ওয়াশিংটনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে। দেশ দু’টি বলেছে, ‘মার্কিন অমানবিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ইরানের ইসলামী সরকারের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের মার্কিন নীতির আলোকে ওয়াশিংটন ২০১৮ সনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অনুমোদিত পরমাণু সমঝোতা থেকে বের হয়ে যায়। আন্তর্জাতিক এ চুক্তি লঙ্ঘনের পর  অতীতের সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পাশাপাশি ইসলামী এই দেশটির ওপর প্রায়ই নতুন নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে ট্রাম্প সরকার। অথচ এর ফলে ইরানের ইসলামী সরকারের কোনো ক্ষতি না হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশটির জনগণ।

 মার্কিন সরকার ইরানের জনগণের বিরোধী নয় বলে দাবি করে আসলেও বাস্তবে তারা ইরানের জনগণেরও স্বাধীনতা, মর্যাদা ও উন্নয়নের শত্রু। করোনার মত মারাত্মক মহামারি ছড়িয়ে পড়ার সময়ও ইরানের প্রতি সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে দেশটির ওপর নতুন নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপই এ সত্যকে আবারও প্রমাণ করল।

ইরানের জনগণের জন্য মার্কিন সরকারের কথিত মানবাধিকারের, গণতন্ত্রের ও বাক-স্বাধীনতার ধ্বজাধারী হওয়ার মার্কিন দাবি শিয়ালের মোরগ-প্রেমের মতই হাস্যকর

বিশ্বের অনেক গবেষক, বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন সরকারই তার শত্রু এবং প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন ও ইরানে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়ে থাকতে পারে নতুন জীবাণু অস্ত্র পরীক্ষা করা বা এ ধরনের অস্ত্র প্রয়োগের ফলাফল দেখার জন্য; কিন্তু পরে এর ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় বিশ্বজুড়ে এর বিস্তার ঘটেছে।

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স অবিলম্বে ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলা করার স্বার্থে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। স্যান্ডার্স বলেছেন, আমেরিকার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হতে দেয়া যাবে না।

ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও ইউরোপসহ বিশ্ব-সমাজের উদাসীনতা দেশটিতে বর্তমান করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে বলে ইরানি নেতৃবৃন্দ সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বার বার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।   #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ