ইরানের ওপর জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের মার্কিন দুরাশা!
(last modified Wed, 10 Jun 2020 14:30:10 GMT )
জুন ১০, ২০২০ ২০:৩০ Asia/Dhaka
  • ইউরোপীয় জোটের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল
    ইউরোপীয় জোটের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালের ৮ মে অবৈধভাবে ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও এখনও এ সমঝোতার শরিক বলে দাবি করে ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের আশা করছে। 

ইরানের পরমাণু সমঝোতা অনুযায়ী দেশটির ওপর আগামী অক্টোবর মাসে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। এ নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে ইরান বিশ্ব-বাজার বা যে কোনো দেশ থেকে অস্ত্র কিনতে পারবে ও বিক্রিও করতে পারবে।

ইরানের পরমাণু সমঝোতার একটি ধারায় এর শরিক পক্ষগুলোর মধ্যে বিরোধ-মীমাংসার যে ব্যবস্থা রয়েছে তাতে বলা হয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ যদি ওই বিরোধ মীমাংসার ব্যাপারে একটি নির্দিষ্ট সময়ে (ত্রিশ দিনে) ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখাকে পুনর্বহাল করার রায় দিতে না পারে তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইরানের ওপর জাতিসংঘের পুরনো সব নিষেধাজ্ঞা ফিরে আসবে। মার্কিন সরকার এই পদ্ধতিকে অপব্যবহারের আশায় বলছে যে তারা এখনও এই সমঝোতার শরিক!

অথচ এ চুক্তির অন্য পক্ষ ইউরোপীয় জোটের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল গতকাল (মঙ্গলবার) বলেছেন, পাশ্চাত্যের সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকা বেরিয়ে গেছে; কাজেই তার পক্ষে এই সমঝোতার সদস্যপদ ব্যবহার করে ইরানের বিরুদ্ধে স্থায়ী অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার উদ্যোগ নেয়া সম্ভব নয়। এর আগেও তিনি কয়েকবার এই একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছে।

ইউরোপীয় জোট ছাড়াও চীন ও রাশিয়াও মার্কিন এই প্রচেষ্টাকে অবৈধ বলে উল্লেখ করে আসছে।  

ইরান পরমাণু সমঝোতা মানছে না বলে মার্কিন সরকার অভিযোগ করে আসছে। তাই আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাও যদি বলে যে ইরান পরমাণু সমঝোতা মেনে চলছে না তাহলে বিষয়টি আবারও জাতিসংঘে উত্থাপন করার অধিকার রাখে এ সমঝোতার শরিক যে কোনো পক্ষ। কিন্তু মার্কিন সরকার দুই বছর আগেই এ সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেছে প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে।

অন্যদিকে  একই সমঝোতার ২৬ ও ৩৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে প্রতিপক্ষ যদি এ সমঝোতার অঙ্গীকারগুলো পালন না করে তাহলে ইরানও আংশিকভাবে বা পুরোপুরি এ সমঝোতায় উল্লেখিত অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়ন বন্ধ রাখতে পারবে। এরই ভিত্তিতে ইরান এখন এ সমঝোতায় উল্লেখিত অঙ্গীকার বাস্তবায়ন ব্যাপক মাত্রায় কমিয়ে এনেছে। 

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও পরমাণু সমঝোতার শরিক দেশগুলো যদি ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের বিরোধিতা করে তাহলে মার্কিন সরকার কূটনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে এই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের চেষ্টা করবে বলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ঘোষণা করেছেন। 

ইরানের বিরুদ্ধে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াকে অপব্যবহারের মার্কিন চেষ্টা সফল হবে না বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন। মার্কিন সরকার এরিমধ্যে এ বিষয়ে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে অনেকটা একঘরে হয়ে পড়েছে। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১০ 
 

ট্যাগ