আগস্ট ২১, ২০২০ ১৮:৫০ Asia/Dhaka

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পরমাণু সমঝোতার অপব্যবহার করে স্ন্যাপব্যাক মেকানিজমের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা পুনরুদ্ধারের যে চেষ্টা চালাচ্ছে তা অবৈধ এবং প্রত্যাখ্যাত।

ইতোপূর্বে রাশিয়া আমেরিকার এই পদক্ষেপকে 'অলীক কল্পনা' বলে মন্তব্য করেছে। মুহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ গতকাল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রধানকে লেখা এক চিঠিতে আরও বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার কোনো অধিকার আমেরিকার নেই। সুতরাং মার্কিন এই পদক্ষেপ নিরাপত্তা পরিষদসহ আন্তর্জাতিক সমাজের পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান করা উচিত। ২০১৮ সালের মে মাসে পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকা একতরফাভাবে বেরিয়ে গিয়ে বিরামহীনভাবে চেষ্টা করেছে পরমাণু সমঝোতাকে বিলুপ্ত করে নতুন একটি সমঝোতায় যেতে। এ লক্ষ্যে তারা প্রথমেই ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

মার্কিন এই পদক্ষেপ ছিল পরমাণু সমঝোতার সরাসরি লঙ্ঘন। কারণ সমঝোতা অনুযায়ী ইরানের অর্থনৈতিক স্বার্থ নিশ্চিত করার কথা ছিল। মজার ব্যাপার হলো এই চাপ প্রয়োগের স্থপতি ব্রায়ান হুক ব্যর্থতার দায়ভার কাঁধে নিয়ে নিজেই চাপের মুখে ট্রাম্প সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন। প্রথম পদক্ষেপ ব্যর্থ হবার পর মার্কিন সরকারের কর্মকর্তারা পশ্চিমা দেশগুলো সফর করে ইউরোপীয় পক্ষগুলোকে ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস করাতে প্রলুব্ধ করে। কিন্তু গত ১৪ আগস্টে নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল ইস্যুতে ভোটাভুটিতে আমেরিকা পুনরায় চরমভাবে পরাজিত হয়েছে। পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে আমেরিকা যতবারই নিরাপত্তা পরিষেদে পদক্ষেপ নিয়েছে ততবারই ব্যর্থ হয়েছে।

সর্বশেষ ব্যর্থতার পর এবার আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে একেবারে ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ দাঁড় করানোর পাঁয়তারা করছে। অভিযোগটি হলো ইরান নাকি পরমাণু সমঝোতা যথাযথভাবে মেনে চলে নি, যদিও সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে আমেরিকা এ ধরনের অভিযোগ উত্থাপন করার অধিকার হারিয়েছে। আমেরিকা এখন হাস্যকরভাবে বলতে চাচ্ছে যে তারা তো এক সময় পরমাণু সমঝোতার একটি পক্ষ ছিল-সেই অধিকারে তারা ইরানের বিরুদ্ধে স্ন্যাপব্যাক ম্যাকানিজম কাজে লাগাতে চায়। যদিও সমঝোতা অনুযায়ী স্ন্যাপব্যাক ম্যাকানিজম ব্যবহারের কোনো অধিকারই আমেরিকার নেই।

জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধি মাজিদ তাখতে রাভনচিও গতকাল একই কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন যেহেতু আমেরিকা এই সমঝোতা বা জেসিপিওএ থেকে বেরিয়ে গেছে সুতরাং তাদের নয়া সকল পদক্ষেপই পরমাণু সমঝোতা এবং ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের লঙ্ঘন। নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন ব্যর্থতা মূলত বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টকারী মার্কিন নীতিকে বিশ্ববাসীর পক্ষ থেকে 'না' বলারই শামিল। যেমনটি ইরানের প্রেসিডেন্সিয়াল দফতরের প্রধান মাহমুদ ওয়ায়েজি সম্প্রতি বলেছেন: মনে হচ্ছে রাশিয়া, চীনসহ ইউরোপীয় দেশগুলো মার্কিন নয়া পদক্ষেপের সঙ্গে একমত নয়। তার মানে আমেরিকা আরেকটি ব্যর্থতা  ও পরাজয়ের মুখোমুখি।#

পার্সটুডে/এনএম/২১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ