জুন ১৪, ২০২১ ১৮:৪৪ Asia/Dhaka

ইসলামি ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভিয়েনায় ইরানের পরমাণু বিষয়ক আলোচক দলের প্রধান সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, গত তিন বছরে মার্কিন সরকার বিশ্বের যেখানেই ইরানিরা রয়েছে সেখানেই তাদের ওপর অন্যায় ও অবৈধ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তিনি বলেন, বর্তমান বাইডেন প্রশাসনও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতি অনুসরণ করে চলেছেন এবং তিনিও মানবতাবিরোধী অপরাধের শরিক।

পরমাণু সমঝোতায় পুনরুজ্জীবিত করা, ইরানবিরোধী মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া এবং পরমাণু সমঝোতায় যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার লক্ষ্য নিয়ে ভিয়েনায়  ৪+১ গোষ্ঠীর সাথে ইরানের ষষ্ঠ দফায় আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবনের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া ছিল এবারের ভিয়েনা আলোচনার মূল লক্ষ্য। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে মূল লক্ষ্য অর্জনের পথে এখনো বাধা রয়ে গেছে। রাজনৈতিক ও পর্যবেক্ষক মহল এবং পরমাণু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র কঠোর অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এলে এ সংক্রান্ত জটিলতার অবসান ঘটতে পারে।

বাস্তবতা হচ্ছে, হোয়াইট হাউস ইরানবিরোধী কোন কোন নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখতে বদ্ধপরিকর হওয়ায় ভিয়েনা বৈঠকে সবপক্ষ অনেক দূর অগ্রসর হলেও পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবনের পথের তা অনেক বাধা হয়ে আছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন সম্প্রতি সিনেট কমিটিতে দেয়া এক প্রতিবেদনে বলেছেন, ইরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পরমাণু বিষয়ে সমঝোতা হলেও তেহরানের বিরুদ্ধে আরোপিত শত শত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। সম্প্রতি মিডিলইস্ট নিউজ বার্তা সংস্থা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইরানবিরোধী ১৬০০ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ৭০০ টি নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে এবং বাকি নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে ।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ভিয়েনায় পরমাণু বিষয়ে আলোচনা সফল না হওয়ার বা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে বাইডেন প্রশাসন তাদের শক্তিমত্তা দেখানোর চেষ্টা করছে। জো বাইডেন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধিরা এটা দেখানোর চেষ্টা করে আসছেন যে তারা এত সহজে পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসবেনা এবং ইরানবিরোধী নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে উঠে যাবে এমন প্রত্যাশা যেন কেউ না করে।

এদিকে পলিটিকো সাময়িকী জানিয়েছে, একদল মার্কিন সিনেটর এমন একটি প্রস্তাব পাশের চেষ্টা করছেন যাতে ইরানের সঙ্গে নতুন যেকোনো সমঝোতা হলে অবশ্যই তা কংগ্রেসের অনুমতির প্রয়োজন হবে। তবে এ ধরনের পরিকল্পনা সম্ভাব্য যেকোনো পরমাণু সমঝোতার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে সাময়িকীটি মন্তব্য করেছে ।

বাস্তবতা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সব সরকারই এটা প্রমাণ করেছে তারা আন্তর্জাতিক চুক্তি বা সমঝোতার প্রতি মোটেও শ্রদ্ধাশীল নয়। ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা এক্ষেত্রে উদাহরণ হয়ে আছে। দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট ভিয়েনায় চলমান পরমাণু সমঝোতা বিষয়ক আলোচনার কথা উল্লেখ করে লিখেছে, ষষ্ঠ দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হলেও বাইডেন প্রশাসন কোনো সমঝোতায় আসবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৪

 

ট্যাগ