ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে ইরানের সহযোগিতা বিস্তারে প্রেসিডেন্ট রুহানির গুরুত্বারোপ
(last modified Thu, 19 May 2016 12:33:52 GMT )
মে ১৯, ২০১৬ ১৮:৩৩ Asia/Dhaka

ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্রাবার কিতারোভিচ তেহরানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানির সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। এ সাক্ষাতে প্রেসিডেন্ট রুহানি সব ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সহযোগিতা বিস্তারে ইরান ও ক্রোয়েশিয়া সরকারের দৃঢ় ইচ্ছার কথা উল্লেখ করে বিরাজমান সুযোগ সুবিধাগুলোকে কাজে লাগানোর আহবান জানিয়েছেন।

ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্রাবার কিতারোভিচ তেহরানে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানির সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। এ সাক্ষাতে প্রেসিডেন্ট রুহানি সব ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সহযোগিতা বিস্তারে ইরান ও ক্রোয়েশিয়া সরকারের দৃঢ় ইচ্ছার কথা উল্লেখ করে বিরাজমান সুযোগ সুবিধাগুলোকে কাজে লাগানোর আহবান জানিয়েছেন।

ইরান ও ক্রোয়েশিয়ার কর্মকর্তারা এ পর্যন্ত বহুবার সফর বিনিময় করেছেন এবং আর্থ-রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বিস্তারে একাধিক চুক্তিতে সই করেছেন। ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেশটির অন্যান্য পদস্থ কর্মকর্তাদের তেহরান সফর থেকে ইরানের সঙ্গে নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিস্তারে তাদের আগ্রহের বিষয়টি ফুটে উঠেছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক অনেকটাই শিথিল হয়ে পড়েছে। কিন্তু পরমাণু সমঝোতার পর ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে যেসব সমঝোতা হয়েছে তাতে ফের অর্থনৈতিক সহযোগিতা এগিয়ে নেয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিস্তারের জন্য প্রয়োজন ব্যবসায়িদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করা এবং তাদের কাজের ক্ষেত্র তৈরি করা। তাই বাণিজ্য ও শিল্প ক্ষেত্রে পুঁজিবিনিয়োগ ছাড়াও শিক্ষা, বিজ্ঞান, সাংস্কৃতিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে ইরান ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে। এ ছাড়া, ইরান ও ক্রোয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য আলাদা কোটা বরাদ্দ এবং দু’দেশের ভাষা ইন্সটিটিউট চালু করা যেতে পারে।

বর্তমানে সন্ত্রাসবাদ সারা বিশ্বের জন্য কঠিন সমস্যা ও বিরাট হুমকিতে পরিণত হয়েছে। এ কারণে ইরান ও ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সাক্ষাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিস্তারের উপায় নিয়ে আলোচনা হওয়া ছাড়াও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সহযোগিতার বিষয়েও তাদের মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী নীতির তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, আমেরিকাসহ পাশ্চাত্যের কয়েকটি দেশের হস্তক্ষেপের কারণেই মধ্যপ্রাচ্যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধ কেবল লোক দেখানো নয় বরং বাস্তব ও আন্তরিক হওয়া উচিৎ।

ইরানের প্রেসিডেন্ট আরো বলেছেন, আফগানিস্তানে তৎপর সন্ত্রাসীদের আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে মাদক ব্যবসা। এ থেকেই বোঝা যায়, পাশ্চাত্য আল কায়দা ও দায়েশের মতো সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বরং তাদের প্রতি সমর্থন যুগিয়ে চলেছে। এ কারণে সন্ত্রাসীরা সহজেই এ অঞ্চলে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বহু মানুষ নিহত হওয়া ছাড়াও লাখ লাখ মানুষ শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে যাদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে। তাদের জন্য এখন প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সমর্থনের। এ অবস্থায় সন্ত্রাসীদের দমনে পাশ্চাত্য যদি সত্যিই আন্তরিক হয়ে থাকে তাহলে সবার সহযোগিতায় মানবিয় বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব হবে।

এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট রুহানি আরো বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রতামুক্ত বিশ্ব গড়ার ক্ষেত্রে ইরান ও ক্রোয়েশিয়া পরস্পরকে সহযোগিতা করতে পারে। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে সব দেশ, ধর্ম ও জাতির মধ্যে আরো বেশি ঘনিষ্ঠতা ও ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্টও তার দেশে ইসলাম ধর্মকে স্বীকৃতি দেয়ার ১০০তম বার্ষিকীর কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ইউরোপের অন্যান্য দেশে যখন ইসলাম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে তখন ক্রোয়েশিয়ায় মুসলমান ও খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের অনুসারীরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে।#

পার্সটুডে/মোঃ রেজওয়ান হোসেন/১৯

ট্যাগ