মানবাধিকার ইস্যুতে ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশ: তেহরানের প্রতিক্রিয়া
(last modified Tue, 26 Oct 2021 12:45:34 GMT )
অক্টোবর ২৬, ২০২১ ১৮:৪৫ Asia/Dhaka

মানবাধিকার বিষয়টি ইরানের মতো উন্নয়নশীল ও স্বাধীন দেশগুলোর উপর চাপ সৃষ্টির জন্য রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।

ইরানের বিচার বিভাগের মানবাধিকার বিষয়ক পরিষদের প্রধান কাজেম গারিবাবাদি ইরানে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ প্রতিবেদকের প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, মানবাধিকারের দাবিদার আমেরিকাসহ পাশ্চাত্যের দেশগুলোর আচরণের কারণে বিশ্বব্যাপী নৈরাজ্য ও অবিচার চলছে। ইরান সবচেয়ে বেশি জুলুম নির্যাতনের শিকার হলেও জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ইরানে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে যা কিনা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

মানবাধিকার নিয়ে পাশ্চাত্যের আচরণের ব্যাপারে সবচেয়ে বড় সমালোচনার দিকটি হচ্ছে অন্য দেশের ওপর  রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে তারা মানবাধিকারকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। ইরানে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ প্রতিবেদক জাভেদ রহমানের প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় এই সংস্থায় নিযুক্ত ইরানের প্রতিনিধি জাহরা আরশাদি বলেছেন, মানবাধিকারকে অন্য দেশের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করাই তাদের লক্ষ্য। 

বাস্তবতা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো দেশগুলোই এ ধনের বিদ্বেষী প্রতিবেদনের প্রধান সমর্থক। তারা এমন সময় মানবাধিকারের বুলি আওড়াচ্ছে যখন তাদের সমাজেই নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন, অশ্বেতাঙ্গদের ওপর জুলুম নির্যাতন, সংখ্যালঘুদের বিশেষ করে মুসলমানদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ, বন্দীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন, ইউরোপে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বিশেষ আইন প্রণয়ন প্রভৃতির মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রয়েছে। পাশ্চাত্যের এ দেশগুলো নিজেরাই বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে অথচ তারাই রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অন্য দেশের মানবাধিকারের ব্যাপারে কথা বলছে যা খুবই লজ্জাজনক।

ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক পারসা জাফরি মানবাধিকারের বিষয়ে পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী নীতির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এ ধরনের আচরণ যদি প্রতিহত করা যায় তাহলে তা হবে মানুষের জন্য অনেক বড় উপঢৌকন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বর্তমানে ঠিক এর উল্টো চিত্র বিরাজ করছে। বৃহৎ শক্তিগুলো মানবাধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এটির মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, কেবল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে যদি এ ধরনের বিদ্বেষমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় তাহলে এতে কেবল মানবাধিকার পরিষদের আস্থা বিনষ্ট হবে। এ ছাড়া জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মানবাধিকার পরিস্থিতি তদারকিও বাধাগ্রস্ত  হবে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে ইরানের প্রতিনিধি পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী নীতির তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, মানবাধিকারসহ জাতিসংঘের যে কোনো ইশতেহারের প্রতি ইরান শ্রদ্ধাশীল এবং  নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন। তিনি মানবাধিকারের ব্যাপারে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের  আহ্বান জানিয়েছেন। # 

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।