রেডিও তেহরানের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
রেডিও তেহরানের নীতি-আদর্শই কাজের অনুপ্রেরণা
ড. সোহেল আহম্মেদ: ৪০ বছর পূর্ণ হলো রেডিও তেহরানের। এটি ন্যায়কামী সবার জন্য আনন্দের। পরিপক্বতা, আধুনিকতার ছোঁয়া ও নান্দনিকতায় রেডিও তেহরান এখন এক অনন্য গণমাধ্যম। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে আজ পর্যন্ত যারাই এই গণমাধ্যমের সঙ্গে ছিলেন এবং এখনও যারা আছেন তাদের সবার প্রতি রইল অন্তহীন ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা।
রেডিও তেহরানের পাশাপাশি বয়স বেড়েছে আমাদেরও। কিন্তু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির বয়স বাড়ার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। ব্যক্তির বয়স বৃদ্ধি মানেই মৃত্যুর দিকে আরও বেশি এগিয়ে যাওয়া, কিন্তু প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিষয়টা এমন নয়। রেডিও তেহরান বেঁচে থাকুক অনন্তকাল, এই গণমাধ্যমের অগ্রযাত্রায় আমাদের অতি সামান্য শ্রম ও প্রয়াস পরকালের পাথেয় হোক-এ দোয়া চাই।
রেডিও তেহরানের কিছু নীতি-আদর্শ আমার কাজের অনুপ্রেরণা। জীবনে চলার পথে দু’টি ট্রাজেডিকে সামনে রেখে নিজের গতিপথ নির্ধারণের চেষ্টা করি। একটি হলো কারবালায় ইমাম হোসেন (আ.)’র শাহাদাৎ, অপরটি রক্তাক্ত ফিলিস্তিন। রেডিও তেহরান এই দুই ইস্যুতে সদাসোচ্চার। শুধু মুসলমান হওয়ার কারণে আমি ত্রুটিমুক্ত থাকতে পারব- এমন ভাবনা থেকে আমাকে দূরে রাখে কারবালার ইতিহাস। বাস্তব জীবনে ন্যায্যতার অনুশীলন ও ন্যায়পরায়ণদের প্রতি সমর্থন যে আমার দায়িত্ব তা বারবারই মনে করিয়ে দেয় এই ট্রাজেডি। যাদের ওপর আমরা সর্বদা দরুদ পাঠাই তাদের অন্যতম এবং মহানবী (সা.)’র প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন শহীদ হয়েছেন মুসলমানদের হাতেই। কারবালার ঘটনা শুধু ইতিহাস হিসেবে পড়লেই একজন ন্যায়কামীর দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না, এই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবন পরিচালনা করতে হবে।
ফিলিস্তিন হচ্ছে একটি জীবন্ত ইস্যু। ফিলিস্তিনিরা যে সর্বব্যাপী জুলুম-নির্যাতনের শিকার তা জানতে ইতিহাস ঘাটতে হয় না। প্রতিদিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন খবরের দিকে একটু নজর দিলেই এর প্রমাণ পাওয়া যায়। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি বর্বরতা অতীতে যেমন ছিল এখনও আছে। যারা নিরপরাধ ও নিরস্ত্র মানুষকে নিজের ঘরবাড়ি থেকে বের করে সেখানে বসতি স্থাপন করে এবং নারী ও শিশুসহ অসহায়দের হত্যা করে, তাদেরকে মেনে নেয়া কাপুরুষতা। আসলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার শক্তি ও সাহস সবার থাকে না। কিন্তু রেডিও তেহরান এ ক্ষেত্রে অকুতোভয়।
ফিলিস্তিন, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, কাশ্মীর, রোহিঙ্গা, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনসহ আন্তর্জাতিক সব ইস্যুতে সত্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছে রেডিও তেহরান, এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। মরহুম ইমাম খোমেনীর নেতৃত্বে ইরানে যে ইসলামি বিপ্লব সফল হয়েছে তা বাংলাভাষী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেও রেডিও তেহরানের জুড়ি নেই। আমাদের কলম ও কণ্ঠ সব সময় সত্য, ন্যায় ও মানবতার সেবায় নিয়োজিত ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। পেশাগত কারণে জুলুম-নির্যাতনের পক্ষে কখনোই লিখতে ও বলতে হয়নি- রেডিও তেহরানে চাকরি জীবনে এটা আমার মানসিক প্রশান্তি।#
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, বাংলা বিভাগ, রেডিও তেহরান।
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।