কর্মতৎপরতা ও উন্নতির ৪০ বছর
https://parstoday.ir/bn/news/letter-i106764-কর্মতৎপরতা_ও_উন্নতির_৪০_বছর
২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল ইরানের বাংলাভাষী একমাত্র গণমাধ্যম রেডিও তেহরান ৪০তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। আমি এই শক্তিশালী গণমাধ্যমের একজন সামান্য সেবক হিসেবে রেডিও তেহরানের সম্মানিত সহকর্মীদের- যারা অত্যন্ত পেশাদারী মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন- তাদেরকে জানাচ্ছি আন্তরিক অভিনন্দন ও মুবারকবাদ।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
এপ্রিল ১৭, ২০২২ ১৪:৪১ Asia/Dhaka
  • কর্মতৎপরতা ও উন্নতির ৪০ বছর

২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল ইরানের বাংলাভাষী একমাত্র গণমাধ্যম রেডিও তেহরান ৪০তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। আমি এই শক্তিশালী গণমাধ্যমের একজন সামান্য সেবক হিসেবে রেডিও তেহরানের সম্মানিত সহকর্মীদের- যারা অত্যন্ত পেশাদারী মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন- তাদেরকে জানাচ্ছি আন্তরিক অভিনন্দন ও মুবারকবাদ।

বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলো এবং বিশ্বের অন্যান্য স্থানে বসবাসরত অন্তত ৩০ কোটি বাংলাভাষী মানুষের কাছে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পৌঁছে দেয়ার জন্য রেডিও তেহরানের সুনাম রয়েছে। নিঃসন্দেহে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে শীর্ষে অবস্থানকারী রেডিওগুলোর মধ্যে নিজের স্থান করে নিয়েছে রেডিও তেহরান। আর চার দশক ধরে সততা ও বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখার কারণে বাংলাভাষী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কাতারে শামিল হয়েছে রেডিও তেহরান।

আমার মতে, আইআরইবি’র বিশ্ব কার্যক্রম ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশের জন্য বিশেষ করে বাংলা ভাষায় অনুষ্ঠান প্রচার করার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল তা সম্পূর্ণ সফল হয়েছে। এই অঞ্চলের শ্রোতাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে আইআরআইবি। কারণ, বাংলাদেশ ও সার্বিকভাবে উপমহাদেশকে ইরানি সংস্কৃতিরই অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলা যায়। দীর্ঘ ৬০০ বছর এই উপমহাদেশে ফার্সি ছিল রাষ্ট্রীয় ভাষা এবং তখন এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ইরানি সংস্কৃতির ব্যাপক প্রভাব পড়ে। সংস্কৃতি, সভ্যতা, ইতিহাস ও ভাষাগত অভিন্নতা বাংলাদেশ ও ইরানকে কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। একথা মনে রাখা প্রয়োজন যে, বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে ইরানের প্রতি যে গভীর ভালোবাসা রয়েছে তাকে আরো বেশি গভীর করাই গণমাধ্যম হিসেবে রেডিও তেহরানের কর্তব্য। এটি এই গণমাধ্যমের কূটনৈতিক দায়িত্বও বটে।

মুজতবা ইব্রাহিমি

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতি জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশের মানুষের যে অকৃত্রিম ভালোবাসা রয়েছে রেডিও তেহরানের জনপ্রিয়তা পাওয়ার পেছনে তা অন্যতম নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছে। আর বাংলা ভাষায় প্রচারিত এই গণমাধ্যমের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে ইরানের মহান ইসলামি বিপ্লব।

বাস্তবতা হচ্ছে, উপমহাদেশে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি দীর্ঘদিন শাসন করলেও এ অঞ্চলের মানুষ তাদের আত্মপরিচয় ভুলে যায়নি।  তৎকালীন যুগে ব্রিটিশরা এবং বর্তমানে নব্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আমেরিকা সব সময় উপমহাদেশ থেকে ইসলামের নাম-নিশানা মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। অথচ তাদের সে আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে এ অঞ্চলে ইসলাম ও মুসলিম জনগোষ্ঠী দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে। কাজেই এ অঞ্চলের মানুষের চাহিদা পূরণ করার ক্ষেত্রে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের গণমাধ্যম হিসেবে রেডিও তেহরানের দায়িত্বও দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।

রেডিও তেহরানের অন্যতম সাফল্য হিসেবে এই রেডিওর ওয়েবসাইট- ‘পার্সটুডে বাংলা’র অসংখ্য ভিজিটরের কথা উল্লেখ করা যায়।  বিশ্বসংবাদ ও অন্যান্য অনুষ্ঠান শোনার জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই ওয়েবসাইট ভিজিট করেন। বিশেষ করে ইরান, মধ্যপ্রাচ্য ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের নানা গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে অসংখ্য বাংলাভাষী মানুষ পার্সটুডে বাংলায় প্রবেশ করেন। যেসব কারণে এই ওয়েবসাইট এত জনপ্রিয়তা পেয়েছে সেসবের মধ্যে রয়েছে- আঞ্চলিক যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার খবর তাৎক্ষণিকভাবে আপলোড করা, ওয়েবসাইটে রেডিও অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা এবং ফেসবুক, ইউটিউব ও টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এই ওয়েবসাইটের আকর্ষণীয় কনটেন্টগুলো শেয়ার করা।

রেডিও তেহরানের জনপ্রিয়তার আরেকটি কারণ হচ্ছে- শ্রোতাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া। শ্রোতা ব্যক্তিগতভাবে হোক কিংবা ক্লাবের মাধ্যমে হোক যেকোনো মতামত তুলে ধরলে আমরা তাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেই।  এছাড়া, শ্রোতাদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে অনেক বড় কনটেন্টকে সংক্ষিপ্ত আকারে গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়। বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান বা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলীর ভিডিও ক্লিপ ওয়েবসাইটে তুলে ধরার কাজও এখন নিয়মিত চলছে। আর এসব কাজে রেডিও তেহরানে কর্মীবৃন্দ তিন শিফটে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন।

আমি আশা করব, রেডিওর নিউজ এডিটরগণ, অনুবাদকবৃন্দ, লেখকগণ ও সংবাদ পাঠকবৃন্দ তাদের পেশাদারিত্ব বজায় রেখে বাংলা ভাষাভাষী অন্যান্য গণমাধ্যমের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বিষয়টি বিবেচনা করে কাজ করে যাবেন এবং প্রায় চার দশকের অভিজ্ঞাতে কাজে লাগিয়ে ইরানের এই জনপ্রিয় গণমাধ্যমকে উপমহাদেশের শ্রোতা ও পাঠকদের কাছে আরো বেশি জনপ্রিয় করে তোলার কাজে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন।

 

মুজতবা ইব্রাহিমি

পরিচালক, বাংলা বিভাগ, রেডিও তেহরান।

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।