ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪ ১৬:০০ Asia/Dhaka
  • খোদাপ্রেমের অনুপম দোয়া মুনাজাতে শা'বানীয়াহ্

[এ দোয়াটি বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)’র পবিত্র আহলে বাইতের মহান ইমামগণ থেকে বর্ণিত অন্যতম প্রসিদ্ধ দোয়া। শেখ আব্বাস কুমী সংকলিত ‘মাফাতিহুল জিনান’ গ্রন্থে এ দোয়াটি বর্ণিত হয়েছে। মূল আরবী থেকে এটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন মো. মুনীর হোসেন খান।]

হে আল্লাহ্! আপনি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর (পবিত্র) বংশধরগণের ওপর দরূদ ও সালাত প্রেরণ করুন। যখন আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি তখন আমার প্রার্থনা শুনুন এবং যখন আপনাকে আহ্বান করি তখন আমার আহ্বান শুনুন। যখন আপনার কাছে আমি নিভৃতে প্রার্থনা করি তখন আমার দিকে এগিয়ে আসুন। আমি আপনার কাছে ছুটে এসেছি এবং আপনার কাছে একান্ত বাধ্য অবস্থায় বিনয়াবনতভাবে সওয়াবের প্রত্যাশা নিয়ে আপনার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আর আমার মনে যা আছে তা আপনি জানেন। আপনি আমার মনস্কামনা সম্পর্কে জ্ঞাত এবং আমার অন্তঃকরণের সাথে পরিচিত। আমার গতি-স্থিতি কোন কিছুই আপনার কাছে গোপন নয়। আর আমি আমার কণ্ঠের মাধ্যমে যা প্রকাশ করতে চাই, আমার যে আকাঙ্ক্ষিত বস্তুর কথা আমি ঠোঁটে ব্যক্ত করি এবং আমার যে পরিণতি আমি প্রত্যাশা করি তাও আপনার কাছে গোপন নয়।

 

হে আমার মাওলা! আমার জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমার গোপন ও প্রকাশ্য যা কিছু আছে সে সব ক্ষেত্রে আপনি যা কিছু নির্ধারণ করেছেন তা বলবত রয়েছে। আর আপনার হাতেই রয়েছে আমার সচ্ছলতা ও দারিদ্র্য, উপকার ও অপকার- অন্য কারো হাতে তা নেই। হে আমার ইলাহ্! যদি আপনি আমাকে বঞ্চিত করেন তাহলে কে আমাকে রিযিক দেবে? আপনি যদি আমাকে সাহায্য করা থেকে বিরত থাকেন তাহলে কে আমাকে সাহায্য করবে? হে আমার ইলাহ্! আমার ওপর আপনার ক্রোধ ও অসন্তুষ্টি অবতীর্ণ হওয়া থেকে আপনার কাছে আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আমার ইলাহ্! আমি যদি আপনার রহমত প্রাপ্তির অযোগ্য হই তাহলে আপনি আপনার প্রাচুর্যের বদৌলতে আমার ওপর অসীম দয়া ও অবারিত দান করার যোগ্য।

 

হে আমার ইলাহ্! আমি যেন আপনার সামনে দণ্ডায়মান এবং আপনার ওপর আমার নির্ভরতা (তাওয়াক্কুল) আমার প্রাণের ওপর সুশীতল ছায়া মেলে ধরেছে। অতঃপর আপনি যে বিষয়ের উপযুক্ত তা আঞ্জাম দিয়েছেন (বলেছেন) এবং আপনার ক্ষমা দিয়ে আমাকে ঢেকে দিয়েছেন।

 

হে আমার ইলাহ্! আপনি যদি আমাকে ক্ষমা করেন তাহলে আপনার চেয়ে এ ব্যাপারে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত আর কে আছে? আর যদি আমার অন্তিম মুহূর্ত ঘনিয়ে আসে এবং আমার কর্ম আমাকে আপনার কাছাকাছি বা ঘনিষ্ঠ না করে তাহলে পাপ কাজের ব্যাপারে আমার স্বীকারোক্তিকে আপনার কাছে আমার উসীলা বা মাধ্যম হিসেবে দাঁড় করিয়েছি। হে আমার ইলাহ্! আমি আমার নাফসের ওপর নজারদারির ক্ষেত্রে জুলুম করেছি (তথা কামনা-বাসনাকে সীমালঙ্ঘনের সুযোগ দিয়েছি)। তাই আপনি যদি তাকে ক্ষমা না করেন তাহলে তার জন্য আক্ষেপ!

 

হে আমার ইলাহ্! আমার জীবদ্দশায় যেমন আমার ওপর আপনার সদাচরণ, দয়া ও উপকার অব্যাহত আছে তেমনি আমার মৃত্যুর সময় আমা থেকে আপনার সদাচরণ, দয়া ও উপকার ছিন্ন করবেন না। হে আমার ইলাহ্! আমার মৃত্যুর পর আমার প্রতি আপনার সুদৃষ্টি থেকে আমি কিভাবে নিরাশ হব অথচ আমার জীবদ্দশায় (আপনি) আমাকে সুন্দর ছাড়া আর কিছুই প্রদান করেন নি? হে আমার ইলাহ্! আপনি যে বিষয়ের উপযুক্ত কেবল সে বিষয়টাই আমার জন্য পরিচালনা করুন। ঐ পাপী যার অজ্ঞতা তাকে আবৃত করে রেখেছে, তার ওপর আপনি যেভাবে অনুগ্রহ করেন সেরূপ অনুগ্রহের মাধ্যমে আপনি আমার পাপগুলো ঢেকেছিলেন অথচ আমি আখেরাতে দুনিয়ার চেয়েও সে সব পাপ গোপন রাখার ব্যাপারে আপনার কাছে বেশি মুখাপেক্ষী। যেহেতু দুনিয়ায় আপনি আমার পাপগুলোকে আপনার কোন সৎকর্মশীল বান্দার কাছে প্রকাশ করেন নি, তাই সকল চোখের সামনে আমাকে কিয়ামত দিবসে অপমানিত করবেন না।

 

হে আমার ইলাহ্! আপনার দান আমার আশা-আকাঙ্ক্ষাকে বাড়িয়ে দিয়েছে এবং আপনার ক্ষমা আমার আমলের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। হে আমার ইলাহ্! যেদিন আপনি আপনার বান্দাদের মাঝে বিচার করবেন সেদিন আপনার সাক্ষাত দিয়ে আমাকে আনন্দিত করুন। হে আমার ইলাহ! আপনার কাছে আমার অজুহাত ঐ ব্যক্তির অজুহাত প্রদর্শনের অনুরূপ যে তার অজুহাত গৃহীত হওয়া থেকে অমুখাপেক্ষী হতে পারেনি। অতএব, হে ঐ সত্তা, যাদের কাছে পাপীরা অজুহাত প্রদর্শন করে থাকে (আপনি) তাদের (সবার) চেয়ে দয়ালু! আমার অজুহাত কবুল করুন। হে আমার ইলাহ্! আমার মনস্কামনা প্রত্যাখ্যান করবেন না। আমার লোভ তথা আপনার দয়া ও অবারিত দান পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষাকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করবেন না। আপনার কাছে আমার আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ছিন্ন করবেন না। হে আমার ইলাহ্! আপনি যদি আমাকে দীন-হীন করার ইচ্ছা করতেন তাহলে আমাকে হেদায়েত করতেন না। আর আপনি যদি আমার অপমান চাইতেন তাহলে আমাকে ক্ষমা করতেন না।

 

হে আমার ইলাহ্! আমি ধারণা করছি না যে, আপনি আমাকে আমার এমন এক মনস্কামনা পূরণ করার ক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যাত করবেন যা আপনার কাছ থেকে অন্বেষণ করার জন্য আমি আমার পুরো জীবনটাই শেষ করে ফেলেছি। হে আমার ইলাহ্! আপনি যেমন ভালোবাসেন ঠিক তেমনি সমস্ত প্রশংসা আপনারই জন্য যা সর্বদা, চিরকাল এবং অনাদি-অনন্তকাল ধরে বৃদ্ধি পাবে এবং কখনই নিশ্চি‏‎হ্ন হবে না।

 

হে আমার ইলাহ্! আপনি যদি আমাকে আমার অপরাধের জন্য পাকড়াও করেন তাহলে আমি আপনার ক্ষমাকে আঁকড়ে ধরব। আপনি যদি আমাকে আমার পাপের কারণে পাকড়াও করেন তাহলে আমি আপনার ক্ষমার উসীলায় আপনাকে আঁকড়ে ধরব। আর আপনি যদি আমাকে জাহান্নামে প্রবেশ করান তাহলে আমি জাহান্নামের অধিবাসীদের কাছে ঘোষণা করছি যে, নিশ্চয়ই আমি আপনাকেই ভালোবাসি।

 

হে আমার ইলাহ্! আপনার আনুগত্যের ক্ষেত্রে আমার আমল যদি ক্ষুদ্র হয় তাহলে আপনাকে পাওয়ার ক্ষেত্রে আমার আশা বড় হবে। হে আমার ইলাহ্! কিভাবে আমি আপনার কাছে বঞ্চিত হব অথচ দয়া ও মুক্তিপ্রাপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে আপনার মহানুভবতা সম্বন্ধে আমার সুধারণা জন্মেছে?

 

হে আমার ইলাহ্! আমি আমার সমগ্র জীবনকে আপনার প্রতি অমনোযোগিতার অনলে ধ্বংস করে ফেলেছি। আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার যন্ত্রণায় আমার যৌবনকে বার্ধক্যে রূপান্তরিত করে ফেলেছি। হে আমার ইলাহ্! আপনার প্রতি আমার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ প্রদর্শনের এবং আপনার অসন্তুষ্টির পথে আমার দৃঢ়ভাবে অবস্থানের দিনগুলোতে আমি জাগ্রত হইনি।

 

হে আমার ইলাহ্! আমি আপনার বান্দা এবং আপনার বান্দার সন্তান যে আপনার সামনে দণ্ডায়মান এবং আপনার দয়া ও মহানুভবতার উসীলায় আপনার দ্বারস্থ হয়েছি এবং আপনার কাছে তাওয়াসসুল করছি তথা আপনার দয়া ও মহানুভবতাকেই উসিলা হিসেবে পেশ করছি। হে আমার ইলাহ্! আমি এমন এক বান্দা যে আপনার দৃষ্টিতে আমার লজ্জাহীনতার দরুন যা দিয়ে আপনার বিরোধিতা করেছি তা থেকে নিজেকে এখন পৃথক বলে গণ্য করছি। আমি আপনার কাছ থেকে ক্ষমা অন্বেষণ করছি। কারণ ক্ষমা হচ্ছে আপনার মহানুভবতারই একটি বৈশিষ্ট্য। হে আমার ইলাহ্! আমার কোন শক্তি ছিল না যাতে করে আমি তা দিয়ে আপনার বিরুদ্ধাচরণ থেকে বিরত থাকতে পারি, তবে সেই সময় ছাড়া যে সময় আপনি আমাকে আপনার ভালোবাসায় এবং আপনার ব্যাপারে অমনোযোগী থাকার দূষণ থেকে আমার অন্তঃকরণকে পবিত্র করার জন্য জাগ্রত করেছেন। আর আপনি যেমন আমার অস্তিত্বের ইচ্ছা করেছিলেন তদ্রূপ আমি অস্তিত্ব লাভ করেছি। তাই আমাকে আপনার দয়ার মাঝে প্রবেশ করানো এবং স্থান দেয়ার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি।

 

হে আমার ইলাহ্! আমার দিকে আপনি দৃষ্টি দিন ঐ ব্যক্তির প্রতি দৃষ্টি দানের মতো যাকে আপনি আহ্বান করেছেন; অতঃপর সে আপনার আহ্বানে সাড়া দিয়েছে এবং যাকে আপনার সাহায্যের মাধ্যমে কর্মে নিয়োজিত করেছেন; অতঃপর সে আপনার আনুগত্য করেছে। হে নিকটবর্তী সত্তা! যিনি তাঁর প্রতি দাম্ভিক আচরণকারী থেকেও দূরে সরে যান না; হে অত্যন্ত দানশীল, মহানুভব সত্তা! যিনি কার্পণ্য করেন না ঐসব ব্যক্তির প্রতি যারা তাঁর কাছে সওয়াব প্রত্যাশা করেছে।

 

হে আমার ইলাহ্! আমাকে এমন এক হৃদয় দিন যার আগ্রহ তাকে (আমাকে) আপনার নিকটবর্তী করবে, এমন এক জিহ্বা দিন যার সত্যবাদিতা আপনার কাছে উন্নীত হবে, এমন দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন চক্ষু দান করুন যার অধিকার (সুষ্ঠু ব্যবহার) যাকে আপনার সান্নিধ্যে নিয়ে যাবে। হে আমার ইলাহ্! যে আপনাকে চিনেছে সে বিস্মৃত ও উপেক্ষিত হয় না। আর যে আপনার কাছে আশ্রয় নিয়েছে সে কখনই আপনার সাহায্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয় না। আর যার দিকে আপনি এগিয়ে আসেন সে কখনই অস্থির বা পেরেশান হয় না। হে আমার ইলাহ্! নিশ্চয়ই যে আপনার মাধ্যমে পথ চলেছে সে-ই আলোকপ্রাপ্ত। আর যে আপনার রজ্জুকে আঁকড়ে ধরে আসলে সে-ই মুক্তিপ্রাপ্ত।

 

হে আমার ইলাহ্! আমি আপনার আশ্রয় নিয়েছি। অতঃপর আপনার রহমতের ব্যাপারে আমার যে সুধারণা আছে তা ব্যর্থ করে দেবেন না। আপনার অনুগ্রহ প্রাপ্তি থেকে আমাকে বাধাগ্রস্ত করবেন না। হে আমার ইলাহ্! আপনার বন্ধুদের মাঝে যারা আপনার বেশি ভালোবাসা প্রত্যাশা করেছে তাদের স্থানে আমাকে অধিষ্ঠিত করুন।

 

হে আমার ইলাহ্! আপনাকে স্মরণ করার মাধ্যমে আপনার স্মরণকে জাগরূক রাখার জন্য আমাকে আগ্রহ-উদ্দীপ্ত করুন। আর আপনার পবিত্র নামসমূহের মাধ্যমে নাজাত-প্রাপ্তি এবং আপনার পবিত্র সান্নিধ্যে অবস্থান লাভ করার উচ্চ সংকল্প দিয়ে আমাকে অনুপ্রাণিত করুন। হে আমার ইলাহ্! আপনার কাছে আপনার মাধ্যমেই আমি দলিল পেশ করছি যাতে করে আপনি আমাকে আপনার অনুগত বান্দাদের পর্যায়ে অধিষ্ঠিত এবং আপনার সন্তুষ্টি আনয়ন করার যোগ্য স্থানে প্রবেশ করান। কারণ আমি নিজকে সুরক্ষা করতে সক্ষম নই এবং আমি নিজের উপকার করারও অধিকারী নই।

 

হে আমার ইলাহ্! আমি আপনার দুর্বল, অপরাধী এবং আপনার কাছে অনুশোচনাকারী পাপী বান্দা। সুতরাং আমাকে ঐ সব ব্যক্তির অন্তর্ভুক্ত করবেন না যাদের থেকে আপনি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এবং যাদের ভুল-ত্রুটি তাদেরকে আপনার ক্ষমা থেকে বাধাগ্রস্ত করেছে। হে আমার ইলাহ্! আপনি আমাকে সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একমাত্র আপনার দিকে পুরোপুরি রুজু হওয়ার তওফিক দিন। আমাদের অন্তরের চোখগুলোকে আপনার দিকে দৃষ্টি দেয়ার মাধ্যমে আলোকিত করে দিন যাতে করে অন্তঃচক্ষুর দৃষ্টিসমূহ আলোর পর্দাগুলো ভেদ করে মহত্ত্বের খনিতে গিয়ে উপনীত হয় এবং আপনার পবিত্র সত্তার সম্মানের সাথে আমাদের আত্মা সংযুক্ত হয়।

 

হে আমার ইলাহ্! আমাকে ঐ সব ব্যক্তির অন্তর্ভুক্ত করে দিন যাদেরকে আপনি আহ্বান করেছেন; অতঃপর তারা আপনার আহ্বানে সাড়া দিয়েছে, যাদের ওপর আপনি শুভ দৃষ্টি দিয়েছেন; অতঃপর তারা আপনার মহিমা ও গৌরব দর্শন করতঃ চিৎকার করে উঠেছে। অতঃপর আপনি তাদের সাথে সংগোপনে কথোপকথন করেছেন এবং তারা আপনার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে কর্ম সম্পাদন করেছে।

 

হে আমার ইলাহ্! আমি আমার সুধারণার ওপর হতাশাব্যঞ্জক চিন্তাকে কর্তৃত্বশীল করিনি এবং আপনার অনুপম দয়া ও দানের ব্যাপারে আমার আশা ছিন্নভিন্ন ও কর্তিত হয়ে যায় নি। হে আমার ইলাহ্! যদি আমার অপরাধগুলো আপনার কাছে আমাকে অধঃপতিত করে দেয় তাহলে আপনি আমাকে আপনার উপর নির্ভরতার বদৌলতে মার্জনা করে দিন। হে আমার ইলাহ্! যদি পাপ ও অপরাধ আমাকে আপনার মহান কৃপার পর্যায় থেকে নিচে ফেলে দিয়ে থাকে তাহলে আপনার মহান দয়া ও করুণার প্রতি আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমাকে জাগ্রত করবে।

 

হে আমার ইলাহ্! আপনার সাথে সাক্ষাৎ করার যোগ্যতা অর্জন করা থেকে অমনোযোগী হবার কারণে আমি যদি অসচেতনতার নিদ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে যাই তাহলে আপনার সুমহান নেয়ামতসমূহ সংক্রান্ত (আমার) পরিচিতি (জ্ঞান) আমাকে জাগ্রত করুক। হে আমার ইলাহ্! যদি আপনার ভয়ঙ্কর শাস্তি আমাকে জাহান্নামের আগুনের দিকে আহ্বান করে তাহলে আপনার মহান পুণ্য ও পুরস্কার আমাকে জান্নাতের দিকে আহ্বান করে।

 

হে আমার ইলাহ্! একমাত্র আপনার কাছেই আমি চাচ্ছি, একমাত্র আপনার কাছেই প্রার্থনা এবং প্রত্যাশা করছি। আপনার কাছে প্রার্থনা করছি যাতে করে আপনি হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তাঁর বংশধরগণের ওপর দরূদ ও সালাত প্রেরণ করেন। আমাকে ঐ সব ব্যক্তির অন্তর্ভুক্ত করুন যারা সর্বক্ষণ আপনার যিকির করে, আপনার সাথে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে না, আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা থেকে বিন্দুমাত্র গাফেল হয় না এবং আপনার নির্দেশকে তুচ্ছ জ্ঞান করে না।

 

হে আমার ইলাহ্! আপনার সর্বোচ্চ সৌন্দর্য্যমণ্ডিত সম্মানের আলোর সাথে আমাকে সংযুক্ত করে দিন যাতে করে আমি আপনার সঠিক পরিচিতি পাই এবং আপনি ছাড়া সব কিছু থেকে মুখ ফিরিয়ে নিই এবং আপনার ব্যাপারে ভীত ও সতর্ক হই। হে সকল মহিমা ও সম্মানের অধিকারী! হে আল্লাহ্! হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তাঁর পবিত্র বংশধরগণের ওপর দরূদ ও সালাত অবতীর্ণ করুন এবং তাঁদেরকে বেশি বেশি শান্তি ও নিরাপত্তা প্রদান করুন। (অনুবাদক: মুনীর হুসাইন খান )

 

আরবি টেক্সট :

اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ عَلَى آلِ مُحَمَّدٍ وَ اسْمَعْ نِدَائِی إِذَا نَادَیْتُکَ وَ اسْمَعْ دُعَائِی إِذَا دَعَوْتُکَ‏ وَ أَقْبِلْ عَلَیَّ إِذَا نَاجَیْتُکَ فَقَدْ هَرَبْتُ إِلَیْکَ وَ وَقَفْتُ بَیْنَ یَدَیْکَ مُسْتَکِیناً لَکَ مُتَضَرِّعاً إِلَیْکَ رَاجِیاً لِمَا لَدَیْکَ تَرَانِی وَ تَعْلَمُ مَا فِی نَفْسِی وَ تُخْبِرُ حَاجَتِی وَ تَعْرِفُ ضَمِیرِی وَ لَا یَخْفَى عَلَیْکَ أَمْرُ مُنْقَلَبِی وَ مَثْوَایَ وَ مَا أُرِیدُ أَنْ أُبْدِئَ بِهِ مِنْ مَنْطِقِی وَ أَتَفَوَّهُ بِهِ مِنْ طَلِبَتِی وَ أَرْجُوهُ لِعَاقِبَةِ أَمْرِی وَ قَدْ جَرَتْ مَقَادِیرُکَ عَلَیَّ یَا سَیِّدِی فِیمَا یَکُونُ مِنِّی إِلَى آخِرِ عُمُرِی مِنْ سَرِیرَتِی وَ عَلَانِیَتِی وَ بِیَدِکَ لَا بِیَدِ غَیْرِکَ زِیَادَتِی وَ نَقْصِی وَ نَفْعِی وَ ضُرِّی إِلَهِی إِنْ حَرَمْتَنِی فَمَنْ ذَا الَّذِی یَرْزُقُنِی وَ إِنْ خَذَلْتَنِی فَمَنْ ذَا الَّذِی یَنْصُرُنِی إِلَهِی أَعُوذُ بِکَ مِنْ غَضَبِکَ وَ حُلُولِ سَخَطِکَ إِلَهِی إِنْ کُنْتُ غَیْرَ مُسْتَأْهِلٍ لِرَحْمَتِکَ فَأَنْتَ أَهْلٌ أَنْ تَجُودَ عَلَیَّ بِفَضْلِ سَعَتِکَ إِلَهِی کَأَنِّی بِنَفْسِی وَاقِفَةٌ بَیْنَ یَدَیْکَ وَ قَدْ أَظَلَّهَا حُسْنُ تَوَکُّلِی عَلَیْکَ فَفَعَلْتَ فَقُلْتَ‏ مَا أَنْتَ أَهْلُهُ وَ تَغَمَّدْتَنِی بِعَفْوِکَ إِلَهِی فَإِنْ عَفَوْتَ فَمَنْ أَوْلَى مِنْکَ بِذَلِکَ وَ إِنْ کَانَ قَدْ دَنَا أَجَلِی وَ لَمْ یُدْنِنِی مِنْکَ عَمَلِی فَقَدْ جَعَلْتُ الْإِقْرَارَ بِالذَّنْبِ إِلَیْکَ وَسِیلَتِی إِلَهِی قَدْ جُرْتُ عَلَى نَفْسِی فِی النَّظَرِ لَهَا فَلَهَا الْوَیْلُ إِنْ لَمْ تَغْفِرْ لَهَا إِلَهِی لَمْ یَزَلْ بِرُّکَ عَلَیَّ أَیَّامَ حَیَاتِی فَلَا تَقْطَعْ بِرَّکَ عَنِّی فِی مَمَاتِی وَ أَنْتَ لَمْ تُوَلِّنِی إِلَّا الْجَمِیلَ فِی حَیَاتِی إِلَهِی تَوَلَّ مِنْ أَمْرِی مَا أَنْتَ أَهْلُهُ وَ عُدْ بِفَضْلِکَ عَلَى مُذْنِبٍ قَدْ غَمَرَهُ جَهْلُهُ إِلَهِی قَدْ سَتَرْتَ عَلَیَّ ذُنُوباً فِی الدُّنْیَا وَ أَنَا أَحْوَجُ إِلَى سَتْرِهَا عَلَیَّ مِنْکَ فِی الْأُخْرَى إِلَهِی قَدْ أَحْسَنْتَ إِلَیَّ إِذْ لَمْ تُظْهِرْهَا لِأَحَدٍ مِنْ عِبَادِکَ الصَّالِحِینَ فَلَا تَفْضَحْنِی یَوْمَ الْقِیَامَةِ عَلَى رُءُوسِ الْأَشْهَادِ إِلَهِی جُودُکَ بَسَطَ أَمَلِی وَ عَفْوُکَ أَفْضَلُ مِنْ عَمَلِی إِلَهِی فَسُرَّنِی بِلِقَائِکَ یَوْمَ تَقْضِی فِیهِ بَیْنَ عِبَادِکَ إِلَهِی اعْتِذَارِی إِلَیْکَ اعْتِذَارُ مَنْ لَمْ یَسْتَغْنِ عَنْ قَبُولِ عُذْرِهِ فَاقْبَلْ عُذْرِی یَا أَکْرَمَ مَنِ اعْتَذَرَ إِلَیْهِ الْمُسِیئُونَ إِلَهِی لَا تَرُدَّ حَاجَتِی وَ لَا تُخَیِّبْ طَمَعِی وَ لَا تَقْطَعْ مِنْکَ رَجَائِی وَ أَمَلِی إِلَهِی لَوْ أَرَدْتَ هَوَانِی لَمْ تَهْدِنِی وَ لَوْ أَرَدْتَ فَضِیحَتِی لَمْ تُعَافِنِی إِلَهِی مَا أَظُنُّکَ تَرُدُّنِی فِی حَاجَةٍ قَدْ أَفْنَیْتُ عُمُرِی فِی طَلَبِهَا مِنْکَ إِلَهِی فَلَکَ الْحَمْدُ أَبَداً أَبَداً دَائِماً سَرْمَداً یَزِیدُ وَ لَا یَبِیدُ کَمَا تُحِبُّ فَتَرْضَى إِلَهِی إِنْ أَخَذْتَنِی بِجُرْمِی أَخَذْتُکَ بِعَفْوِکَ وَ إِنْ أَخَذْتَنِی بِذُنُوبِی أَخَذْتُکَ بِمَغْفِرَتِکَ وَ إِنْ أَدْخَلْتَنِی النَّارَ أَعْلَمْتُ أَهْلَهَا أَنِّی أُحِبُّکَ إِلَهِی إِنْ کَانَ صَغُرَ فِی جَنْبِ طَاعَتِکَ عَمَلِی فَقَدْ کَبُرَ فِی جَنْبِ رَجَائِکَ أَمَلِی إِلَهِی کَیْفَ أَنْقَلِبُ مِنْ عِنْدِکَ بِالْخَیْبَةِ مَحْرُوماً وَ قَدْ کَانَ حُسْنُ ظَنِّی بِجُودِکَ أَنْ تَقْلِبَنِی بِالنَّجَاةِ مَرْحُوماً إِلَهِی وَ قَدْ أَفْنَیْتُ عُمُرِی فِی شِرَّةِ السَّهْوِ عَنْکَ وَ أَبْلَیْتُ شَبَابِی فِی سَکْرَةِ التَّبَاعُدِ مِنْکَ إِلَهِی فَلَمْ أَسْتَیْقِظْ أَیَّامَ اغْتِرَارِی بِکَ وَ رُکُوبِی إِلَى سَبِیلِ سَخَطِکَ إِلَهِی وَ أَنَا عَبْدُکَ وَ ابْنُ عَبْدَیْکَ قَائِمٌ بَیْنَ یَدَیْکَ مُتَوَسِّلٌ بِکَرَمِکَ إِلَیْکَ إِلَهِی أَنَا عَبْدٌ أَتَنَصَّلُ إِلَیْکَ مِمَّا کُنْتُ أُوَاجِهُکَ بِهِ مِنْ قِلَّةِ اسْتِحْیَائِی مِنْ نَظَرِکَ وَ أَطْلُبُ الْعَفْوَ مِنْکَ إِذِ الْعَفْوُ نَعْتٌ لِکَرَمِکَ إِلَهِی لَمْ یَکُنْ لِی حَوْلٌ فَأَنْتَقِلَ بِهِ عَنْ مَعْصِیَتِکَ إِلَّا فِی وَقْتٍ أَیْقَظْتَنِی لِمَحَبَّتِکَ فَکَمَا أَرَدْتَ أَنْ أَکُونَ کُنْتُ فَشَکَرْتُکَ بِإِدْخَالِی فِی کَرَمِکَ وَ لِتَطْهِیرِ قَلْبِی مِنْ أَوْسَاخِ الْغَفْلَةِ عَنْکَ إِلَهِی انْظُرْ إِلَیَّ نَظَرَ مَنْ نَادَیْتَهُ فَأَجَابَکَ وَ اسْتَعْمَلْتَهُ بِمَعُونَتِکَ فَأَطَاعَکَ یَا قَرِیباً لَا یَبْعُدُ عَنِ الْمُغْتَرِّ بِهِ وَ یَا جَوَاداً لَا یَبْخَلُ عَمَّنْ رَجَا ثَوَابَهُ إِلَهِی هَبْ لِی قَلْباً یُدْنِیهِ مِنْکَ شَوْقُهُ وَ لِسَاناً یَرْفَعُهُ إِلَیْکَ صِدْقُهُ وَ نَظَراً یُقَرِّبُهُ مِنْکَ حَقُّهُ إِلَهِی إِنَّ مَنْ تَعَرَّفَ بِکَ غَیْرُ مَجْهُولٍ وَ مَنْ لَاذَ بِکَ غَیْرُ مَخْذُولٍ وَ مَنْ أَقْبَلْتَ عَلَیْهِ غَیْرُ مَمْلُولٍ إِلَهِی إِنَّ مَنِ انْتَهَجَ بِکَ لَمُسْتَنِیرٌ وَ إِنَّ مَنِ اعْتَصَمَ بِکَ لَمُسْتَجِیرٌ وَ قَدْ لُذْتُ بِکَ یَا سَیِّدِی فَلَا تُخَیِّبَنَّ ظَنِّی مِنْ رَحْمَتِکَ وَ لَا تَحْجُبْنِی عَنْ رَأْفَتِکَ إِلَهِی أَقِمْنِی فِی أَهْلِ وَلَایَتِکَ مُقَامَ مَنْ‏ رَجَا الزِّیَادَةَ مِنْ مَحَبَّتِکَ إِلَهِی وَ أَلْهِمْنِی وَلَهاً بِذِکْرِکَ إِلَى‏ ذِکْرِکَ وَ همنی اجْعَلْ هِمَّتِی‏ إِلَى رَوْحِ نَجَاحِ أَسْمَائِکَ وَ مَحَلِّ قُدْسِکَ إِلَهِی بِکَ عَلَیْکَ إِلَّا أَلْحَقْتَنِی بِمَحَلِّ أَهْلِ طَاعَتِکَ وَ الْمَثْوَى الصَّالِحِ مِنْ مَرْضَاتِکَ فَإِنِّی لَا أَقْدِرُ لِنَفْسِی دَفْعاً وَ لَا أَمْلِکُ لَهَا نَفْعاً إِلَهِی أَنَا عَبْدُکَ الضَّعِیفُ الْمُذْنِبُ وَ مَمْلُوکُکَ الْمُنِیبُ الْمُغِیثُ فَلَا تَجْعَلْنِی مِمَّنْ صَرَفْتَ عَنْهُ وَجْهَکَ وَ حَجَبَهُ سَهْوُهُ عَنْ عَفْوِکَ إِلَهِی هَبْ لِی کَمَالَ الِانْقِطَاعِ إِلَیْکَ وَ أَنِرْ أَبْصَارَ قُلُوبِنَا بِضِیَاءِ نَظَرِهَا إِلَیْکَ حَتَّى تَخْرِقَ أَبْصَارُ الْقُلُوبِ حُجُبَ النُّورِ فَتَصِلَ إِلَى مَعْدِنِ الْعَظَمَةِ وَ تَصِیرَ أَرْوَاحُنَا مُعَلَّقَةً بِعِزِّ قُدْسِکَ إِلَهِی وَ اجْعَلْنِی مِمَّنْ نَادَیْتَهُ فَأَجَابَکَ وَ لَاحَظْتَهُ فَصَعِقَ بِجَلَالِکَ فَنَاجَیْتَهُ سِرّاً وَ عَمِلَ لَکَ جَهْراً إِلَهِی لَمْ أُسَلِّطْ عَلَى حُسْنِ ظَنِّی قُنُوطَ الْإِیَاسِ وَ لَا انْقَطَعَ رَجَائِی مِنْ جَمِیلِ کَرَمِکَ إِلَهِی إِنْ کَانَتِ الْخَطَایَا قَدْ أَسْقَطَتْنِی لَدَیْکَ فَاصْفَحْ عَنِّی بِحُسْنِ تَوَکُّلِی عَلَیْکَ إِلَهِی إِنْ حَطَّتْنِی الذُّنُوبُ مِنْ مَکَارِمِ لُطْفِکَ فَقَدْ نَبَّهَنِی الْیَقِینُ إِلَى کَرَمِ عَطْفِکَ إِلَهِی إِنْ أَنَامَتْنِی الْغَفْلَةُ عَنِ الِاسْتِعْدَادِ لِلِقَائِکَ فَقَدْ نَبَّهَتْنِی الْمَعْرِفَةُ بِکَرَمِ آلَائِکَ إِلَهِی إِنْ دَعَانِی إِلَى النَّارِ عَظِیمُ عِقَابِکَ فَقَدْ دَعَانِی إِلَى الْجَنَّةِ جَزِیلُ ثَوَابِکَ إِلَهِی فَلَکَ أَسْأَلُ وَ إِلَیْکَ أَبْتَهِلُ وَ أَرْغَبُ وَ أَسْأَلُکَ أَنْ تُصَلِّیَ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ وَ أَنْ تَجْعَلَنِی مِمَّنْ یُدِیمُ ذِکْرَکَ وَ لَا یَنْقُضُ عَهْدَکَ وَ لَا یَغْفُلُ عَنْ شُکْرِکَ وَ لَا یَسْتَخِفُّ بِأَمْرِکَ إِلَهِی وَ أَتْحِفْنِی بِنُورِ عِزِّکَ الْأَبْهَجِ فَأَکُونَ لَکَ عَارِفاً وَ عَنْ سِوَاکَ مُنْحَرِفاً وَ مِنْکَ خَائِفاً  مُتَرَقِّباً یَا ذَا الْجَلَالِ وَ الْإِکْرَامِ وَ صَلَّى اللَّهُ عَلَى مُحَمَّدٍ رَسُولِهِ وَ آلِهِ الطَّاهِرِینَ وَ سَلَّمَ

# পার্সটুডে/এমএইচকে/১৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ