বাংলাদেশে রমজানের শুরুতেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় নাকাল ভোক্তারা। গত রমজানের তুলনায় এ বছর রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় ৮টি পণ্য যেমন- পেঁয়াজ, ছোলা, চিনি, ডাল, খেজুর, গরুর মাংস, রসুন এবং আলুর দাম ৪ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
আসন্ন রমজান মাসে কম দামে মাছ, গরু, খাসি, মুরগির মাংস, দুধ এবং ডিম সুলভ মূল্যে সরবরাহ করবে বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। আজ (রোববার) রাজধানীর খামারবাড়িতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, "কিছুদিন আগে একটি চিনির গুদামে আগুন লেগেছে। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। বিভিন্ন মিলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের কাছে যে পরিমাণ চিনি মজুত আছে, আশা করছি বাজারে চিনির কোনো সংকট হবে না।"
রমজানে পণ্য সরবরাহ ও মূল্য ঠিক রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি বাজারে পণ্যের দাম নিয়ে যারা কারসাজি করে তাদের কঠোর নজরদারিতে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
রমজানকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক কমালেও তার কোনো প্রভাব পড়েনি বাজারে। আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে নিত্যপণ্য। সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি ও আলুর দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ভরা মৌসুমে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এজন্য বরাবরের মতো সিন্ডিকেটকেই দায়ী করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
রমজান যত কাছে আসছে, বাজারে পণ্যের দাম ততোই বাড়ছে। কিন্তু আমদানির ফলে দেশের বাজারে সেঞ্চুরির পথে এগুতে থাকা আলুর বাজারে স্বস্তি ফিরতে শুরু করলেও বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। ভোক্তাদের অভিযোগ নিত্যপণ্যের দাম একদিকে কমলে বাড়ে ১০ দিকে। ১০ টাকা বাড়লে কমে ২ টাকা।
এক বছরে ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজি বেশি চা উৎপাদন করে ১৭০ বছরের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। কয়েক বছর ধরে ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এবারই প্রথম লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এমন সফলতা এসেছে। ২০২৩ সালে দেশের বাগানগুলো থেকে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ লাখ কেজি বেশি চা উৎপাদন হয়েছে।
বাংলাদেশে এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। সরকারি গুদামেও রয়েছে চালের পর্যাপ্ত মজুত। বাজারেও পণ্যটির কোনো ঘাটতি নেই। তারপরও ভরা মৌসুমে মিল মালিকদের কারসাজিতে অস্থির চালের বাজার। গেল দুই সপ্তাহ ধরে মিল পর্যায় থেকে ৫০ কেজির বস্তাপ্রতি ৩০০ টাকা দাম বাড়িয়ে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে রাজধানীসহ সারা দেশের পাইকারি বাজারে হু হু করে বেড়েছে দাম।
বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের সপ্তাহ না পেরুতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। গেল কয়েক মাস ধরে কমতে থাকা গরুর মাংসের বাজার হঠাৎ করেই আবারো লাগাম ছাড়িয়েছে। কেজিপ্রতি বেড়েছে ১০০ থেকে দেড়শো টাকা পর্যন্ত। এতে প্রভাব পড়েছে মাছ ও মুরগির বাজারে। ফলে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।
দীর্ঘ দুই বছর পর স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে গরুর মাংসের দামে। কদিন আগেও কেজিপ্রতি ৮৫০ টাকার মাংস এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়। হঠাৎ করে এভাবে মাংসের দাম কমায় খুশি, নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ।