ইসরাইলি যুদ্ধমন্ত্রীর সফরের বিরুদ্ধে বাহরাইনের জনগণের প্রচণ্ড বিক্ষোভ
(last modified Sat, 05 Feb 2022 13:35:41 GMT )
ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২২ ১৯:৩৫ Asia/Dhaka

বাহরাইনের জনগণ সেদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রীসহ দখলদার এ শক্তির বিভিন্ন কর্মকর্তার একের পর এক বাহরাইন সফরের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী গত বুধবার প্রথম বাহরাইন সফর করেন। তিনি রাজধানী মানামায় পৌঁছলে আলে খলিফা সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিফে বিন আলে খালিফে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট ইসাক হারজগের সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের মাত্র কয়েক দিন পরই ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী বাহরাইন সফরে যান। এই সফরের প্রতিবাদে রাজধানী মানামাসহ অন্যান্য শহরে দেশটির জনগণ দখলদার ইসরাইলের সাথে সুসম্পর্কের অজুহাতে ইসরাইলি কর্মকর্তাদেরকে সেদেশে স্বাগত জানানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে সরকারের নিন্দা জানায়।

ইসরাইলি যুদ্ধমন্ত্রীর মানামা সফরের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, তিনি বোয়িং ৭০৭ বিমানে করে বাহরাইন সফরে আসেন এবং এ বিমানে করেই ১৯৭৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মিশরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতকে তেলআবিবে স্থানান্তর করা হয়েছিল। ইসরাইলের সাথে মিশরের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার শুরুতে এ বিমানে চড়ে আনোয়ার সাদাত ইসরাইলে গিয়েছিলেন। ওই একই বিমানে ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রীর বাহরাইন সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ কেননা বর্তমানে আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া চলছে।

ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রীর বাহরাইন সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, ইসরাইলের প্রেসিডেন্টের আমিরাত সফর গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হলেও ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রীর বাহরাইন সফরকে মিডিয়ায় তুলে ধরা হয়নি। এর কারণ হিসেবে বলা যায় ইসরাইল ও আলে খলিফা সরকার বাহরাইনের জনগণের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ বিক্ষোভের আশঙ্কায় রয়েছে। আমিরাতের জনগণ এক না থাকায় এবং তাদের মধ্যে জাতীয়তাবোধের অভাব থাকায় ইসরাইলের প্রেসিডেন্টের সফরের ব্যাপারে আমিরাতে কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি কিন্তু বাহরাইনের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আমিরাত ও বাহরাইনে ইসরাইলি কর্মকর্তাদের গোপন কিংবা প্রকাশ্য সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বহনকারী বিমান সৌদি আরবের আকাশসীমার ওপর দিয়ে এসেছে। যার অর্থ হচ্ছে ইসরাইলের সাথে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য সৌদি আরবের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত।

বাহরাইনে বিক্ষোভ

এ অবস্থায় বাহরাইনের জনগণের প্রতিবাদ বিক্ষোভ থেকে বোঝা যায় সেদেশের বর্তমান সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেনা বরং তারা হচ্ছে মার্কিন তাবেদার সরকার।

যাইহোক, ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী বাহরাইনের রাজা, যুবরাজ এবং দেশটির সামরিকসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাতে মিলিত হয়েছেন এবং তাদের মধ্যে নিরাপত্তা চুক্তি সই  হয়েছে। কিন্তু বাহরাইনের জনগণের অব্যাহত প্রতিবাদ বিক্ষোভ, মধ্যপ্রাচ্যের পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিশেষ করে আমিরাত ও সৌদি আরবে ইয়েমেনি যোদ্ধাদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে বোঝা যায় ইসরাইলের সঙ্গে তাদের যতই সুসম্পর্ক থাকুক তাতে প্রতিরোধ শক্তিগুলোর হামলা ঠেকাতে আরব স্বৈরসরকারগুলো ব্যর্থ। তাই  আরব দেশগুলোর উচিত হবে না ইসরাইলের ওপর নির্ভরশীল হওয়া। কেননা প্রমাণিত হয়েছে এতে তাদের লাভ হবে না। তাই বাহরাইনের জনগণ ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের তীব্র বিরোধী এবং যতই দিন যাবে ততই বাহরাইন সরকারের জন্য বিপদ অপেক্ষা করছে।#               

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। 

ট্যাগ