ইয়েমেন ও ইউক্রেনের শরণার্থীদের ব্যাপারে আরব দেশগুলোর দ্বিমুখী আচরণ
(last modified Mon, 07 Mar 2022 12:57:03 GMT )
মার্চ ০৭, ২০২২ ১৮:৫৭ Asia/Dhaka

ইয়েমেনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আল আযাই সেদেশের ওপর সৌদি আগ্রাসনের ব্যাপারে কোনো কোনো আরব দেশের দ্বিমুখী নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন।

তিনি এক টুইটবার্তায় বলেছেন, কোনো কোনো আরব দেশ ভিসা ছাড়াই ইউক্রেনিদের সফরের অনুমতি দিয়েছে যাতে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তাদের প্রতি সমবেদনা জানানো যায়। অথচ সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট গত সাত বছর ধরে ইয়েমেনে গণহত্যা চালিয়ে গেলেও ওই আরব দেশগুলো টুঁশব্দটিও করছে না।

আর মাত্র ২০ দিনের কম সময়ের মধ্যে ইয়েমেন যুদ্ধ অষ্টম বছরে গিয়ে পড়বে। ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ সৌদি আরব ইয়েমেনে আগ্রাসন শুরু করে এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ লাখ ইয়েমেনি ঘরবাড়ি হারিয়েছে এবং নিহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। সৌদি আগ্রাসনের কারণে ইয়েমেনিরা একবিংশ শতাব্দিতে সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। যুদ্ধের কারণে ক্ষুধা, দুর্ভিক্ষ ও বিভিন্ন ধরনের রোগে জর্জরিত ইয়েমেনিরা। অন্যদিকে আকাশ, স্থল ও নৌপথে ইয়েমেনকে অবরুদ্ধ করে রাখায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

প্রায় ১১ দিন আগে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে। কোনো যুদ্ধই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না কেননা এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষজন। কিন্তু ইউক্রেনের মানবিক বিপর্যয়ের সাথে ইয়েমেনের মানবিক বিপর্যয়ের কোনো তুলনাই চলে না। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে কোনো কোনো আরব দেশ ইয়েমেনে সরাসরি গণহত্যায় জড়িত অথবা নীরব রয়েছে। অথচ তারাই আবার ইউক্রেনে নিহত ব্যক্তি ও শরণার্থীদের জন্য মায়াকান্না করছে এবং মানবাধিকারের  কথা বলছে।

গত সাত বছর ধরে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি আগ্রাসন ও গণহত্যায় প্রধান সহযোগী সংযুক্ত আরব আমিরাত জানিয়েছে ইউক্রেনি শরণার্থীদের জন্য তাদের সীমান্ত খুলে দেয়া হবে। এ ছাড়া কোনো কোনো আরব দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেনকে সংঘাত পরিহার করে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে। অথচ এ দেশগুলোই মুসলমান ও আরব দেশ হওয়া সত্বেও ইয়েমেনের ব্যাপারে কিছুই বলছে না। ইয়েমেন ও ইউক্রেনের ব্যাপারে শুধু যে  আরব দেশগুলো দ্বিমুখী আচরণ করছে তাই নয় একইসাথে মানবাধিকারের দাবিদার আমেরিকা ও ইউরোপীয় দেশগুলোও একই আচরণ  করছে।

কোনো কোনো আরব ও পাশ্চাত্যের এ দেশগুলো ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার তীব্র সমালোচনা করছে এবং তাদের গণমাধ্যমগুলো ইউক্রেন শরণার্থীদের বিভিন্ন দুরবস্থার ছবি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরছে। অথচ তারা ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনের কোনো সমালোচনা তো করছে না একই সাথে দায়সারা গোছের কিছু ছবি গণমাধ্যমে তুলে ধরে।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ইউক্রেনের শরণার্থীরা কোনো না কোনোভাবে সহযোগিতা পাবে কিন্তু ইয়েমেনের নিরপরাধ শরণার্থীরা বাইরের কারো সহযোগিতা পাচ্ছে না এবং মানবাধিকার কেবল পাশ্চাত্যের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।#            

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।