বায়তুল মুকাদ্দাসের ইহুদিকরণ ও আল-আকসা মসজিদ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বানচালে ফিলিস্তিনি সংগ্রামীদের সমন্বিত কৌশল
(last modified Sat, 16 Apr 2022 14:14:13 GMT )
এপ্রিল ১৬, ২০২২ ২০:১৪ Asia/Dhaka
  • আল-আকসা মসজিদ চত্ত্বরে ইহুদিবাদী সেনা আগ্রাসন
    আল-আকসা মসজিদ চত্ত্বরে ইহুদিবাদী সেনা আগ্রাসন

গতকাল ভোরে রমজানের দ্বিতীয় শুক্রবারে মুসলমানদের প্রথম কিবলা ও তৃতীয় পবিত্রতম স্থান আল-আকসা মসজিদে হামলা চালিয়েছে ইহুদিবাদী ইসরাইল।

ওই হামলায় অন্তত ১৫২ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও হানাদার বাহিনী ৪০০'রও বেশি ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে। 

জানা গেছে উগ্র ইহুদিবাদীরা আলআকসা মসজিদে তাদের একটি বিশেষ ধর্মীয় উৎসব পালন করতে চেয়েছিল একটি বিশেষ পশু কুরবানি করে এবং পুড়িয়ে ফেলা ওই পশুর ছাই তারা আশপাশে মুসলমানদের পবিত্র স্থানগুলোতেও ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ সংগ্রাম জোরদার হওয়ায় ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠী উগ্র ইহুদিবাদীদের এইসব উস্কানিমূলক ও অপবিত্র তৎপরতা চালাতে দিতে রাজি হয়নি। অবশ্য উগ্র ইহুদিবাদীদের সান্ত্বনা দিতেই ইসরাইলি পুলিশ বা সেনারা আলআকসা মসজিদের ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর হামলার ওই তাণ্ডব চালায়। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইহুদিবাদী তৎপরতার কূটকৌশল বা ষড়যন্ত্রের প্রকৃতির দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠী একদিকে পশ্চিম তীরকে বিশেষ করে পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শহরকে অবৈধ ইসরাইলি-বসতি স্থাপন বিস্তারের মাধ্যমে ঘিরে ফেলে ইহুদিকরণ করতে চায় এবং অন্যদিকে উগ্র ইহুদিবাদী গোষ্ঠীগুলো আলআকসা মসজিদকে নানা অজুহাতে ধ্বংস করে সেখানে ইহুদিদের উপাসনালয় প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এভাবে ইহুদিবাদীরা চায় সব ফিলিস্তিনি পশ্চিম তীর থেকে ও বিশেষ করে বায়তুল মুকাদ্দাস শহর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হোক এবং এভাবে বায়তুল মুকাদ্দাসকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টাকে তারা বানচাল করতে চায়। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ সংগ্রাম জোরদার হওয়া সত্ত্বেও কোনো কোনো আরব সরকার ইসরাইলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলায় এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করায় ইসরাইল বায়তুল মুকাদ্দাসের ইহুদিকরণের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী হয়ে ওঠে। কিন্তু গত বছরের রমজান মাসে পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস সংলগ্ন শেখ জাররাহ এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদ করতে গিয়ে স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের নিরস্ত্র প্রতিরোধ এবং গাজার হামাসের সশস্ত্র প্রতিরোধ তথা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখোমুখি হয় ইহুদিবাদী সরকার ও ইসরাইলি অভিবাসীরা। এ অবস্থায় ১১ দিনের যুদ্ধে হামাসের বিপুল রকেট হামলার মুখে ইসরাইল  বায়তুল মুকাদ্দাসকে গ্রাস করার ব্যাপারে সংযত হতে বা ধীরে চলার নীতি অনুসরণ করতে বাধ্য হয়।  

ইহুদিবাদী ইসরাইল ও তাদের সহযোগী ইহুদিবাদী গোষ্ঠীগুলো তাদের আগ্রাসী তৎপরতার জবাবে অতীতে কেবল গাজার পক্ষ থেকে সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখোমুখি হত। কিন্তু এখন তারা খোদ পশ্চিম তীরেই ব্যাপক সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছে। সম্প্রতি পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা দুঃসাহসিক অভিযান চালিয়ে দশজনেরও বেশি ইহুদিবাদীকে হত্যা করেছে।

ফিলিস্তিনিদের দুই অঞ্চলের মধ্যে ইসরাইল-বিরোধী সংগ্রামের এই অভূতপূর্ব সমন্বয়, সংহতি ও ঐক্য বায়তুল মুকাদ্দাসকে গ্রাস করার ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র এবং আরব সরকারগুলোর আপোষকামিতাকে পুরোপুরি বানচাল করে দিচ্ছে। তাই আশা করা হচ্ছে ফিলিস্তিনি সংগ্রামীরা অচিরেই বা অদূর ভবিষ্যতেই গোটা ফিলিস্তিনকেই দখলদারমুক্ত করতে সক্ষম হবে।    #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১৬

   
 

ট্যাগ